ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শহর রক্ষা বাঁধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে

ডিএসসিসির ১১ খাল উদ্ধারে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অভিযান

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

ডিএসসিসির ১১ খাল উদ্ধারে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ১১টি খাল উদ্ধার অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একই সঙ্গে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানী শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নামারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে নন্দীপাড়া ত্রিমোহিনী খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হবে। অবৈধ দখল থেকে খাল উদ্ধারের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসন, ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাজধানীর ডিএসসিসির নগর ভবনের মেয়র সেলের আয়োজিত এক সভায় এ ঘোষণা দেন সাঈদ খোকন। অপরদিকে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বর্ষার আগেই ৯ কিলোমিটার স্ট্রম স্যুয়ারেজ লাইন সম্পূর্ণ পরিষ্কার করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন ওয়াসার এমডি তাকসিম খান। সভায় ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন, ওয়াসার এমডি তাকসিম খান, ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম কে বখতিয়ার, প্রধান প্রকৌশলী ফরাজি শাহাবুদ্দিন, ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা উপসচিব মোস্তফা কামাল, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা উপসচিব কামরুল ইসলাম ও প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। ডিএসসিসির সীমানায় অবস্থিত খাল ও জলাশয়সমূহ অবৈধ দখলমুক্ত করা এবং ঢাকার খালগুলো থেকে বক্স কালভার্ট তুলে নিয়ে খালগুলোকে রক্ষা করতে হবে মর্মে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বাস্তবায়নে এই সভার আয়োজন করে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। সভায় মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এসব খাল উদ্ধারের জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তাই করা হবে। নন্দীপাড়া ত্রিমোহিনী খাল দিয়ে শুরু হওয়া এ কর্মসূচী চলমান থাকবে। এ খালের ওপর বা আশপাশে বা সীমানায় অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা সরানো হবে। এতে সহায়তা করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া প্রয়োজনে অন্যান্য সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নেয়া হবে। মেয়র হুঁশিয়ার করে বলেন, খাল উদ্ধারে কোন বিশেষ ব্যক্তি কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের নেতা কিংবা ব্যক্তিকে বিবেচনায় আনা হবে না। এছাড়া খাল উদ্ধারে বাধা প্রদানকারীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। মেয়র বলেন, রাজধানীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা জনগণের সম্পত্তি এসব খালকে জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিতে চাই। রাজধানীর এসব খাল বর্তমানে কিছু ব্যক্তি, বিভিন্ন সরকারী সংস্থা ও কিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নামে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে ভূমি জরিপ ও সিটি জরিপে রেকর্ড হয়ে গেছে। যা অনাকাক্সিক্ষত। তবে দখলধারী যেই হোক তা বিবেচ্য নয়। আমরা এসব খাল উদ্ধার করবই। কোন সুবিধাভোগী বাধা দিতে চাইলে তিনি জনপ্রতিনিধি হলেও তাকে প্রতিহত করা হবে। বক্স কালভার্ট তুলে নেয়া সম্পর্কে ও দখলকৃত স্থানে মসজিদ তথা বিভিন্ন বিশাল স্থাপনা গড়ে তোলা হলে এসব বিষয়ে কি করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ইসলাম ধর্মমতে কোন রাস্তায় কিংবা বাজারে কোন মসজিদ স্থাপনা করা যায় না। তাই যারা খালের জমি দখল করে মসজিদ নির্মাণ করেছে তাদের কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাই ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় মসজিদের কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে খালের ওপর তৈরি বড় বড় ভবন ভেঙ্গে ফেলা হবে। এজন্য অবৈধ বাড়ির মালিকগণ নিজ খরচে সকল ভবন ভাঙ্গবেন। অন্যথায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। খালগুলোকে এক প্রকারের ডাম্পিং স্টেশনে পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা নাগরিকগণ বাড়ির ওপর থেকেই ময়লা আবর্জনা সরাসরি খালের ওপর ফেলে দেই। এসব খারাপ অভ্যাস আমাদের ত্যাগ করতে হবে। এজন্য তিনি জনগণকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে খাল উদ্ধারের জন্য নাগরিকদের প্রয়োজনীয়র সর্বোচ্চ সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি। সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ সালাউদ্দীন বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় মোট ১১টি খাল রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশের অবস্থাই খারাপ। কিছু খালের বর্তমানে কোন চিহ্নই নেই। কিছু খালের জমি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান বা সরকারী সংস্থার নামে রেকর্ড করা হয়েছে।
×