ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ার্নার মানে সেঞ্চুরি!

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

ওয়ার্নার মানে সেঞ্চুরি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে ‘অবিশ্বাস্য’ শব্দটি এখন বিরাট কোহলির জন্য বরাদ্দ! বলতে গেলে ভারতীয় উইলোবাজের দ্যুতিতে আর সব কিছু ম্লান। অথচ ২০১৬ সালে ওয়ানডেতে ৭ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফ সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ ১৩৮৮ রান ডেভিড ওয়ার্নারের। চলতি পাকিস্তান সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৭, ১৬ ও ৩৫ রানে; তার আগে একবার মাত্র ব্যর্থ হয়েছিলেন, পোর্ট এলিজাবেথে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ৬ রান। তাতেই অনেকে বিদায়ী বছরে তার দুরন্ত ব্যাটিংয়ের কথা ভুলে গিয়েছিলেন, সমালোচকদের ঠোঁট নড়তে শুরু করেছিল। জবাব দিতে সময় নিলেন না অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ‘ক্রেজি বয়’। রবিবার সিডনির চতুর্থ ওয়ানডেতে খেললেন ১৩০ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস। শেষ ১৪ ইনিংসে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরি একটি ও প্রায় হাফ সেঞ্চুরি দুটিÑ এই ওয়ার্নারের অপর নাম তো সেঞ্চুরি-ই। শুরুটা হয়েছিল গত বছরের জানুয়ারিতে। সেন্ট কিটসে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৯ রান দিয়ে। এরপর যেন রান নয়, সেঞ্চুরির জন্যই মাঠে নামছেন। সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরি করে চলেছেন এই বাঁহাতি। ওয়ানডে ক্রিকেটে ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে সেই রান-বসন্ত চলছেই। গত বছরই করেছিলেন ৭টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এই বছরটা অবশ্য শুরু হলো একটু অন্যভাবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১১৩, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৫। এরপর প্রথম তিন ওয়ানডেতে রান পাননি। তবে কাল চতুর্থ ম্যাচে আবার জ্বলে উঠল তার ব্যাট। বিধ্বংসী এই ওপেনারের ১১৯ বলে খেললেন ১৩০ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। ১১৯ বলে হাঁকিয়েছেন ১১টি চার ও দুটি ছক্কা। সঙ্গে ট্রেভিস হেড (৫১) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের (৭৮) হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৫৩ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নারের ওয়ানডে ক্যারিয়ারটাকে দুই ভাগে ভাগ করে নেয়া যায়। প্রথম অধ্যায় ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত, আর দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরু ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে। অভিষেকের পর প্রথম ছয় বছরে ৬৫টি ওয়ানডে খেলে মাত্র ৪ সেঞ্চুরি। আর ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে রবিবার পর্যন্ত ২২ ম্যাচে সেঞ্চুরি ৮টি। এই সময়ে ৬০.৬১ গড়ে করেছেন ১৫৭৬ রান। যেখানে তার ক্যারিয়ার গড় ৪৩.২৯, মোট রান ৩ হাজার ৭৬৭। শেষ ১৪ ওয়ানডেতে ষষ্ঠ সেঞ্চুরির প্রথমটি শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কা সফরে পাল্লেকেলেতে ১০৬ রানের মধ্য দিয়ে। এরপর বেনোনিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৮, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম দুই ম্যাচে ৪০ ও ৫০। পরের তিনটির দুটিতেই সেঞ্চুরি। ১১৭, ৬ ও ১৭৩। অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ওই সিরিজটা ছিল দুঃস্বপ্নের, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাঁচ বা ততোধিক ওয়ানডের সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়েছিল স্টিভেন স্মিথের দল। কিন্তু ওয়ার্নার ছিলেন নিজেরই মতো। ডিসেম্বরে ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দুটিতেই আবার সেঞ্চুরিÑ ২৪, ১১৯ ও ১৫৬। অতঃপর তিন ম্যাচের বিরতিতে এই সেঞ্চুরি। নিজের শেষ দশ ওয়ানডের ৫টিতেই সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী ন্যাটা ওপেনার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এর আগে সবচেয়ে কম ১৩ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরি ছিল সাবেক তারকা ম্যাথু হেইডেনের। ওয়ার্নার টেস্টেও কম যাচ্ছেন না। গত বছর ১১ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও সমান হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে করেছিলেন ৭৪৮ রান। নতুন বছরে পাকিস্তান সিরিজে তিন টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি।
×