ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে জানালেন চেয়ারম্যান

বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তি করছে বিইআরসি ট্রাইব্যুনাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তি করছে বিইআরসি ট্রাইব্যুনাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তিতে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ট্রাইব্যুনাল। বিদ্যুত জ্বালানি খাতে লাইসেন্স গ্রহণকারী সকল কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ ভোক্তারাও এই ট্রাইব্যুনালে নিজেদের অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। রবিবার ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় অনেকেই বিষয়টি না জানায় তাদের মামলা নিয়ে কমিশন ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন। কিন্তু উচ্চ আদালত এ ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তির মামলাগুলো ট্রাইব্যুনালের কাছেই ফেরত পাঠাচ্ছেন। গত বছর এপ্রিলে ট্রাইব্যুনালের গেজেট প্রকাশের পর ওই বছর জুন থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছে ট্রাইব্যুনাল। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের কাছে উচ্চ আদালত থেকে ৯৫ মামলা নিষ্পত্তির জন্য পাঠানো হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানে বিইআরসি ট্রাইব্যুনাল একটি নতুন সংযোজন। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দিন দিন বিদ্যুত জ্বালানি খাতের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাসঙ্গিকভাবেই এখানে বিভিন্ন বিরোধও দেখা দিচ্ছে। বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতেই সরকার বিইআরসি আইনের অধীনে একটি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব দেয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ড. সেলিম মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০০৩ সালে বিইআরসি আইন প্রণয়নের পর থেকেই জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব বর্তায় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ওপর। কিন্তু এতদিন এ সংক্রান্ত গেজেট না হওয়ায় বিরোধ নিষ্পত্তিতে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছর আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিয়ে কমিশন ট্রাইব্যুনালের গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু অনেকেই বিষয়টি না জানার কারণে অন্য আদালতে যাচ্ছেন। কিন্তু ওসব আদালত আমাদের কাছে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পাঠাচ্ছেন। এতে করে যারা প্রতিকার চাইছেন তারা এক রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অপচয় হচ্ছে সময় ও অর্থের। ট্রাইব্যুনাল প্রাথমিকভাবে একজন চেয়ারম্যান এবং দুজন সদস্য নিয়ে গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনের সদস্য সংখ্যা সাতজন হবে। ট্রাইব্যুনালের সাত সদস্যের মধ্যে দু’জন থাকবেন আইন বিশেষজ্ঞ। এই দু’জনের মধ্যে একজন হবেন জেলা জজ। তিনজন থাকবেন বিদ্যুত গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। আর দু’জন থাকবেন প্রশাসন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। ট্রাইব্যুনাল পুরোদমে কাজ শুরু করতে নতুন ভবনে তাদের অফিস স্থাপন করতে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাধারণ গ্রাহক অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যুত এবং গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। কিন্তু কোন জায়গাতে তারা এর প্রতিকার পান না। উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয় অনেকের হাতে ভুতুড়ে বিল তুলে দেয়া হয় আবার অনেককে আর্থিকভাবেও হয়রানি করা হয়। এসব বিষয়ে প্রমাণসহ গ্রাহক ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করতে পারবেন। ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে উল্লিখিত বিরোধ নিষ্পত্তি করবে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জানান, বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কারও অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে অর্থদ- করার বিধান রয়েছে আইনে। তবে কমিশনের আদেশ কেউ অমান্য করলে তাকে অর্থদ- এবং কারাদ- উভয় সাজা ভোগ করতে হবে। সকল বিরোধ নিষ্পত্তির চূড়ান্ত আদেশ দেবে ট্রাইব্যুনাল। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাইব্যুনালের সদস্য প্রকৌশলী ইমদাদুল হোসেন এবং মোঃ মোখলেসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
×