ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

ট্রাম্পের বিশ্ব বনাম বিশ্বের ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

ট্রাম্পের বিশ্ব বনাম বিশ্বের ট্রাম্প

বর্ণযুদ্ধের যুক্তরাষ্ট্রে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হবার পর গোটা বিশ্ব ভেবেছিল, মার্টিন লুথার কিংয়ের দেশে এটাই বোধহয় বর্ণবৈষম্যের আনুষ্ঠানিক ইতি। ওবামাই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার শীর্ষস্থানে ছিলেন দু’দফায়। মার্কিন জনগণও তাকে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু বর্ণবৈষম্যকেই কার্পেটের নিচ থেকে বের করে ট্রাম্প প্রমাণ করে দিয়েছেন, বর্ণ এখনও মার্কিনীদের মধ্যে বৈষম্য হয়েই রয়ে গেছে। গায়ের রং দিয়ে আমেরিকার স্বপ্নের বিচার করতে যাচ্ছেন তিনি। তাই সব অর্থনৈতিক সঙ্কটকেই তিনি শ্রমজীবী শ্বেতাঙ্গ আর অযোগ্য সংখ্যালঘুর সংঘাত হিসেবে দেখে আসছেন। এতে প্রকৃত সমস্যার সমাধান হোক আর না হোক, শ্বেতাঙ্গদেরই তিনি আমেরিকান হিসেবে মর্যাদা দিচ্ছেন। আর অশ্বেতাঙ্গরা যেন তার দু’চোখের বালি কিংবা বিষ। অভিবাসী শিশুরাই যে আগামী দিনে মার্কিন কর্মশক্তির একটা বড় অংশ হবেÑ সেটা মানতে নারাজ ট্রাম্প। তিনি এই কর্মশক্তির ঘোরবিরোধী। কেবল শ্বেতাঙ্গরাই হয়ে উঠুক এই কর্মশক্তিÑ এই ঘোরলাগা স্বপ্নই তাকে তাড়িত করছে বর্ণবিদ্বেষী হয়ে ওঠার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছাতে। আমেরিকা তার দৃষ্টিতে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে দেশান্তরী হওয়া মানুষ অভিবাসী মানুষ, ভাগ্যান্বেষী মানুষ মিলে মার্কিন জাতিকে তার বর্তমান আকারে পৌঁছে দিয়েছে। ট্রাম্প আজ যাদের খাঁটি মার্কিন বলে দাবি করছেন, তারাও এক সময় মার্কিন ভূ-খ-ে আগন্তুকই ছিলেন। জাতি ধর্ম-বর্ণে বিভক্ত থাকা আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করার ঘোষণা দিলেও ট্রাম্প তার কথাবার্তা, আচরণে বিভেদের সুরকেই প্রকটিত করেছেন। সবাইকে নিয়ে আমেরিকাকে আবার মহৎ করে গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার তিনি ঘোষণা করেছেন, তা তার চিন্তা, ভাবনা, মেধা এবং লক্ষ্য ও আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ‘সব মানুষের’ রক্ত এক বলে আপ্তবাক্য উচ্চারণ করলেও সব মানুষের গায়ের রং যে এক নয়, সেটা তিনি জানেন। আর এই জানার কারণে তিনি রক্ত এক হলেও শ্বেতাঙ্গদের প্রতি সমর্থন এবং অশ্বেতাঙ্গদের প্রতি তার ঘৃণার প্রকাশ ঘটিয়েছেন নির্বাচন পূর্বাপর সময় থেকেই। শপথ গ্রহণকালেই তিনি বলেছেনও ‘আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্র চলবে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। আর তা হবে আমেরিকা প্রথম।’ দীর্ঘসময়ের পথ পাড়ি দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই নয়া দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে যে বর্ণবৈষম্য তীব্র, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে ট্রাম্পের বাকসর্বস্ব ভাষণে। ‘আমরা আবার আমেরিকাকে মহান জাতির উচ্চতায় নিয়ে যাব’ অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প বিভক্তির সুর ছড়িয়ে দিয়েছেন এই অর্থে যে, তার চোখে আমেরিকান কেবলই শ্বেতাঙ্গরা। ক্ষোভও রয়েছে তবে অশ্বেতাঙ্গদের কারণে তার মার্কিনীদের কর্মসংস্থান হচ্ছে না দেশে। তাই মার্কিনীদের চাকরি দাও বলে তিনি সোচ্চার। আসলে নির্বাচনী প্রচারণার সময় যে বিভক্তি ও হতাশাকে সম্বল করে তিনি বিজয়ী হয়েছেন, সেই রণকৌশল বা অবস্থান থেকে তিনি সরছেন না। বর্ণবাদী যে চেতনা ট্রাম্পের মধ্যে বিদ্যমান, তার বহির্প্রকাশ ক্রমশ ঘটতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদী দাঙ্গা-হাঙ্গামার বিস্তার ঘটতে বাধ্য। এই শ্বেতাঙ্গরা, যাদের ভোটে ট্রাম্প জয়ী, তারা যদি ট্রাম্পের কঠোর নীতির প্রতি সর্মথন জানিয়ে নীরবে বসেও থাকে, তথাপি তাদের ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন। মার্কিন পণ্য কেনার সেøাগান ট্রাম্পের জন্য উচ্চারণ যত সহজ, বাস্তব তত কঠিন। মার্কিনীরা নিজেদের কোন পণ্য কিনবে? সবই তো আমদানি নির্ভর পণ্য। উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হবার কারণে মার্কিনীদের অনেকের কল কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশে রয়েছে, যেখানে উৎপাদন খবর কম। মার্কিনী নিজেদের পণ্য খুব বেশিদিন যোগান দিতে পারবে কিনা সন্দেহ। অশ্বেতাঙ্গদের চাকরিচ্যুত করে মার্কিন শ্বেতাঙ্গদের সেই স্থানে বসানোর স্বপ্ন দেখা সহজ। কিন্তু বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন। ট্রাম্পের এই মার্কিন জাতীয়তাবাদী উগ্রতায় পূর্ণ বলেই সমালোচিত হচ্ছে। হিটলারের উগ্রজাতীয়তাবাদের পাশে ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বিশ্ব যেখানে চায় ভারসাম্যের নীতি, সেখানে ট্রাম্প চায় বিভাজনের নীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অধোগতির জবাব হিসেবে সাধারণ শ্বেতাঙ্গদের অভিবাসনবিরোধী মনোভাবকে উস্কে দেয়ার মধ্যে নাৎসিদের ইহুদীবাদ বিরোধিতার তুলনা আসা স্বাভাবিক। এই একুশ শতকে উগ্রজাতীয়তাবাদ পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে বিস্তৃত হলে এর পরিণতি ভয়াল হতে বাধ্য। ট্রাম্প ইসলামী চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর মনোভাব উচ্চারণ করে বলেছেনও, ইসলামী সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করবেন। তিনি তো ভাল করেই জানেন, তালেবান, আল কায়দা, আইএসসহ ইসলামী চরমপন্থী মার্কিনীদেরই সৃষ্টি। তাদের অর্থ ও অস্ত্রবলে এই সন্ত্রাসী-জঙ্গীদের উত্থান ও বিকাশ। তিনি এ সন্ত্রাসবাদকে ভূপৃষ্ঠ থেকে সম্পূর্ণভাবে নির্র্মূল করার অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন। এতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু জঙ্গী নির্মূলের নামে তার ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষ বিপজ্জনক বৈকি। এমনিতেই মুসলিমবিদ্বেষী হিসেবে ট্রাম্পের পরিচিতিটা সুখকর নয়। অভিবাসী মুসলমানদের জন্য নির্বাচনী প্রচারকালে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বারবার বিতর্কিত মন্তব্য ও উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও করেছিলেন। বিশ্বায়নের অন্যতম প্রথম প্রবক্তা আমেরিকা। কিন্তু সে মতাদর্শের ঠিক বিপ্রতীপে অবস্থান যার, ঈষৎ দ্বিধান্বিতভাবে হলেও সেই ট্রাম্পকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে আমেরিকা। তাই আমেরিকা আজ বিপরীত দিশায় হাঁটতে শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই প্রতীত হয়। মার্কিন জাতিকে ইতিহাসের এই মোড় সম্পর্কে সতর্ক করে গেছেন ওবামা। এই মোড় থেকে বিপজ্জনক বাঁকটা না নেয়ার পরামর্শ দিয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু আমেরিকার দরজা, জানালাগুলোকে আগের মতোই চির উন্মুক্ত রাখতে রাজি নন ট্রাম্প। তাই তিনি বিশ্বায়নের দরজাটা বন্ধ করতে চান। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছেন। ব্যবসায়ী বলেই তিনি বিষয়টিতে নিজস্ব স্বার্থকেই যে প্রাধান্য দিচ্ছেন তা বলাইবাহুল্য। বিশ্বায়নের দরজা বাংলাদেশের জন্য ওবামা আমলেই ক্ষীণ করে তুলেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি। রফতানিমুখী পোশাকশিল্প থেকে বহাল জিএসপি সুবিধা তুলে নেয়া হয়নি। নানা শর্তারোপ করে এই প্রথা বহাল রাখা হয়েছে। রফতানি পণ্যের প্রবেশ মুখে ক্ষতিকর শুল্কারোপ থেকে ট্রাম্প সরে যাবেন এমনটা মনে হয় না, তার বিশ্বায়ন বিরোধিতার কারণে। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় কোটিপতি ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। তারা কি নীতি গ্রহণ করেন, তা দেখার বিষয় বৈকি। যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত লাখ দশেক বাংলাদেশী বৈধ বা অবৈধভাবে বসবাস করেন। তারাও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। এদের অনেকে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। তাদের উদ্বেগটাই বেশি। এমন একজন মানিক রহমান। বাংলাভাষী ছড়াকার। দীর্ঘ পনেরো বছর পর দেশে এসেছেন। উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের কিছুটা বাংলাদেশে স্থানান্তর করা যায় কিনা। অভিবাসীদের ব্যবসা-বাণিজ্যে হস্তক্ষেপ হলে যাতে বিপাকে পড়তে না হয়, সেজন্য আগাম ব্যবস্থা হয়ত নিতে চাচ্ছেন। মানিক রহমান জানালেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অভিবাসীর দেশ এবং তাদের অবস্থানেই দেশটি আজকের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প এ সত্য অনুধাবন হয়ত করছেন না। সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মাবলম্বীর মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্প প্রশাসন কতটা কার্যকর হবে, সে নিয়েও চিন্তিত মানিক রহমান। তবে এটাও মনে করেন, ক্ষমতার চেয়ার ব্যক্তিকে দায়িত্বশীল করে তোলে, ট্রাম্প নিশ্চয় এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী হবেন না। ট্রাম্পের বিজয় এবং ক্ষমতা গ্রহণ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশ যেন এ ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার। নির্বাচনে হিলারি বা ট্রাম্প কারও পক্ষেই অবস্থান নিতে দেখা যায়নি বাংলাদেশের মানুষকে। আসলে এদেশবাসী জানে এবং বোঝে যুক্তরাষ্ট্রে যেই-ই প্রেসিডেন্ট হোক, তাতে বাংলাদেশবাসীর উপকৃত হবার সুযোগ সীমিত! ওবামা-হিলারি যুগে বাংলাদেশে আইএস অস্তিত্ব তৈরির জন্য তাদের ভূমিকাও ভুলে যাবার নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাটুকুও পায়নি বাংলাদেশ। সুতরাং ট্রাম্পের নির্বাচন পূর্বাপর আচরণ এদেশবাসীকে বিস্মিত ও স্তম্ভিত করেনি দেশীয় অতীত অভিজ্ঞতার কারণে। ট্রাম্পের বিজয় পরবর্তী আচরণ এদেশের দুই সামরিক জান্তা ও তাদের উত্তরসূরি এক প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রমকেই মনে করিয়ে দেয় বারবার। ট্রাম্পের রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার এবং রাজনীতিকদের হাত থেকে ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে আনার বাক্যগুলো সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ‘আই উইল মেইক পলিটিক্স ডিফিক্যাল্ট’ তত্ত্বকেই মনে করা। মার্কিন জাতীয়তাবাদী হবার ট্রাম্পীয় নীতি জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদেরই ভাবান্তর মনে হয়। আর শপথ গ্রহণের পর পরই ট্রাম্প যেভাবে তার পূর্বসূরি ওবামা গৃহীত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপগুলো কলমের খোঁচায় নাকচ করে দিচ্ছেন, তাতে বিস্মিত নয় বাঙালীরা। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্টের পর কলমের খোঁচায় জান্তা শাসক জিয়া স্বাধীনতার মূলমন্ত্রগুলোকে উৎখাত করে সেখানে নতুন প্রলেপ মেখে একাত্তরের অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছিলেন ক্ষমতার বলেই। ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভায় যেমন কোটিপতি, শিল্পপতি, সেনা সদস্যসহ বারোভাজাদের সমাহার ঘটেছে। জিয়া-এরশাদের মন্ত্রিসভাও ছিল অনুরূপ। রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতাই উভয়ের ক্ষেত্রে যেন প্রধান্য লাভ করেছে। একটি অনভিজ্ঞ প্রশাসন নিয়ে একজন অনভিজ্ঞ প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে যাত্রা শুরু করেছেন। এ যাত্রার শেষ কোথায়, জানা যাবে সহসাই। ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন নাগরিক, যাকে দেশে-বিদেশে প্রচ- বিক্ষোভের মধ্যে ক্ষমতারোহণ করতে হয়েছে। জান্তা শাসকরাও ক্ষমতা দখল করে তাতে আসীন হয়েও রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পারেন নি। জনরোষ তাদের পদে পদে আক্রান্ত করেছে। একজন তো গণঅভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। সামরিক শাসকরা ক্ষমতা দখল করে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যা তারা রক্ষা করেননি, করতে পারেননি। ট্রাম্পের অবস্থাও হয়ত অনুরূপই হবে। বিশ্ববাসীকে এক বদলে যাওয়া দুনিয়ার দিকে ধাবিত করার ক্ষেত্রে ট্রাম্প কী ভূমিকা নেবেন, তা সহসাই পরিষ্কার হবে কুয়াশা এবং আঁধার সরে যাবার পর। ট্রাম্পের সঙ্গে সামরিক জান্তাদের মিল থাকায় বাংলাদেশ ট্রাম্পকে নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন না হলেও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিনীদের উদ্বেগ স্বাভাবিক। তাদের কাছে ট্রাম্প আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ, তা আরও ক’দিন পর স্পষ্ট হবে। তবে বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে, হাঁড়ির একটি ভাত টিপলেই বোঝা যায়, পুরো ভাত সেদ্ধ হয়েছে কিনা। নির্বাচনপূর্ব থেকে ক্ষমতা গ্রহণ পর্যন্ত ট্রাম্পীয় আচরণ ও মতিগতি ‘বিশ্বজনকে মোহিছে’ বলা যাবে না, বরং বিশ্বজুড়ে শঙ্কা বাড়ছে। তার শাসনামলে বিশ্ব পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতেই পারে। কিন্তু তার আচরণ যদি বিশ্ববাসীর বিরুদ্ধে যায়, তবে এই সুযোগে বিশ্ববাসী এক কাতারে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। কিংবা গর্বাচেভের হাত ধরে সোভিয়েত ইউনিয়ন যেভাবে ভেঙ্গে পড়েছে, তেমনি ট্রাম্পের হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্র খ- বিখ- হয়ে পড়লেও বিস্ময় জাগবে না। ট্রাম্প যেহেতু হাতি মার্কা, তাই সব কিছু ল-ভ- করে দেয়াটাই তার জন্য সহজ। কিন্তু যত গর্জে তত যদি না বর্ষে, তবেই সংশয়ের মেঘ কেটে যাবে।
×