ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাকারিয়া স্বপন

অভ্যাস কী এবং কেন!

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

অভ্যাস কী এবং কেন!

অনেক দিন হয়ে গেল ড. স্টিফেন কোভের ‘দি সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি ইফেক্টিভ পিপল’ বইটি নিয়ে লিখছি। মাঝে কিছু ছন্দপতন হয়েছে, অন্যান্য বিষয় নিয়ে লিখতে হয়েছে; তবে বইটি এখন প্রায় শেষের পথে। আরেকটু সময় নিয়ে এটাকে শেষ করার চেষ্টা করছি। আমি বিভিন্ন সময়ে সাতটি অভ্যাসের নানা দিক নিয়ে লিখেছি। তবে প্রায় ৪০০ পৃষ্ঠার একটি বই এভাবে পত্রিকায় লিখে শেষ করতে তো একটু সময় লাগবেই। এত কথার পরেও এখন পর্যন্ত আমরা আলোচনা করিনি, অভ্যাস আসলে বিষয়টি কী? আজকে আমরা সেই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করব। আমরা সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, মানুষ অভ্যাসের দাস। অর্থাৎ অভ্যাসের কাছে আমরা পরাজিত। কিন্তু আসলেই কি তাই? অভ্যাস আমাদের জীবনের খুবই ক্ষমতাশালী একটি বিষয়। কারণ, তারা প্রতিনিয়ত, দিন-রাত, প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের তুলে ধরে। এটা আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে। কথা বলতে বলতে নাকে আঙ্গুল দিয়ে ময়লা বের করা আপনার অভ্যাস- কখন যে করে ফেলবেন, বুঝতেই পারবেন না। কথায় কথায় গালি দেয়ার অভ্যাস? গিয়েছেন একটা ভদ্র সার্কেলে। কখন যে গালি দিয়ে দেবেন, টের পাবেন না। কোন ছেলের সঙ্গে পরিচিত কোন মেয়েকে দেখলেই সন্দেহের গন্ধ পেতে থাকেন, তখন দেখবেন আপনার বোনকে অন্য কারও সঙ্গে দেখলেও বাজে মন্তব্য করে ফেলেছেন। কাউকে কখনও বিশ্বাস করতে শেখেননি, প্রেমিকাকেও বিশ্বাস করতে পারবেন না। কারণ, আপনার অভ্যাস আপনাকে পরিচালিত করছে। আপনার ব্রেনকে সে ওভাবেই বলে দিচ্ছে। আপনি অভ্যাসের একজন রোবট ছাড়া আর কিছুই নন। কিন্তু তাই বলে কি অভ্যাস পাল্টানো যায় না? অভ্যাস যেভাবে গড়া যায়, একইভাবে ভাঙ্গা যায়, নতুন করে তৈরি করা যায়, পাল্টানো যায়। তবে অভ্যাস পাল্টাতে সময় লাগে। এটা হুট করেই হয়ে যায় না। এমন নয় যে, কাল সকাল থেকেই আপনি আপনার একটা অভ্যাস পাল্টে ফেলতে পারবেন। সময় লাগবেই। যারা বিশ্বাস করেন মানুষ চাঁদে গিয়েছিল, তারা অনেকেই এ্যাপোলো ১১-এর যাত্রা সম্পর্কে জানেন। যারা পদার্থবিদ্যা পড়েছেন, তারাও বুঝতে পারেন বিষয়টি। পৃথিবীর টানকে কাটিয়ে চাঁদে যাওয়ার জন্য রকেটকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি বেগে উপরের দিকে ছুটতে হয়েছিল। এই প্রচ- শক্তি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে উপেক্ষা করে মহাশূন্যে নিয়ে গিয়েছিল মানুষকে এবং যত বেশি পৃথিবীর কাছাকাছি থাকবে, তত বেশি শক্তি ব্যয় হবে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে ছিটকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য প্রথম কয়েক মিনিটের গতি যেমন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তার পরের কয়েক মাইল যাত্রা করতে যেমন শক্তির প্রয়োজন ছিল, তারপর কয়েকদিন যাত্রা করতে কিন্তু তেমন আর শক্তির প্রয়োজন হয়নি। মানুষের অভ্যাসও তেমনি। এরও প্রচ- মাধ্যাকর্ষণ শক্তি রয়েছে। আপনাকে পেছন থেকে টেনে ধরে রাখবে। এটা থেকে ছুটে বাইরে যেতে প্রচ- শক্তির প্রয়োজন। এটা শুধু মুখে বললাম, আর অল্প একটু চেষ্টা করলাম- তাতে হবে না। অভ্যাস পাল্টাতে চাই প্রচ- এক শক্তি। ॥ দুই ॥ মানুষকে অভ্যাসের একটি ফ্রেমওয়ার্ক বোঝাতে ড. স্টিফেন কোভে তিনটি বিষয়কে টেনে এনেছেনÑ জ্ঞান, দক্ষতা এবং আকাক্সক্ষা। এই তিনটি বিষয়ের প্রতিচ্ছেদকে বলছেন অভ্যাস। বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে বলা যাক। জ্ঞান হলো একটি তাত্ত্বিক ফ্রেমওয়ার্কÑ যা মূলত বলে দেয় ‘কি করবেন’ এবং ‘কেন করবেন’। একটু ঠা-া মাথায় ভাবুন। কারও যদি কোন বিষয়ে জ্ঞান থাকে, তাহলে তিনি আসলে জানেন ওই বিষয়ে কি করা যাবে এবং কেন করা যাবে। আর বিষয়টি কিভাবে করা যাবে, সেটা বলে দেবে তার দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা। বই পড়ে যেমন আপনি সাইকেল চালাতে কিংবা সাঁতার কাটতে পারবেন না। বইয়ের জ্ঞান আপনাকে বলে দেবে সাঁতার কাটার বিষয়টি কি এবং কেন সাঁতার কাটা আপনার দরকার। কিন্তু ঠিক কিভাবে সাঁতার কাটতে হবে সেটা আপনাকে পানিতে নেমে শিখতে হবে। সেই দক্ষতা আপনাকে অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি তৃতীয় আরেকটি বিষয় হলো আপনার সেই বিষয়টি চাওয়ার তীব্রতা, বাসনা, আকাক্সক্ষা, সঙ্কল্প ইত্যাদি। আমাদের জীবনে যদি কোন কিছু অভ্যাসে পরিণত করতে হয়, তাহলে এই তিনটি বিষয়ই লাগবে। আরেকটি উদাহরণ দেয়া যাক। আমার পরিবারের সঙ্গে, স্ত্রীর সঙ্গে, বাচ্চাদের সঙ্গে আমার ইন্টার‌্যাকশন খুব বেশি ইফেক্টিভ নাও হতে পারে, কারণ আমি তাদের আমার ভাবনাগুলো বলছি, কিন্তু তাদের ভাবনাগুলো শুনছি না। আমি যদি না জানি, মানুষের সঙ্গে ইন্টার‌্যাকশনের মূল ভিত্তিগুলো কি, তাহলে আমি কখনই অনুভব করব না যে তাদের কথাও আমার শুনতে হবে; মন দিয়ে শুনতে হবে। এই বিষয়ে আমার জ্ঞানটুকু লাগবে। এবার আমি জেনে গেলাম যে, তাদের কথাও মন দিয়ে শুনতে হবে; আমি আমার জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে ফেললাম। কিন্তু আমি ঠিক জানি না কিভাবে শুনতে হয়। অর্থাৎ আমার সেই দক্ষতা নেই। আরেকজন মানুষকে কিভাবে সহমর্মিতা দিয়ে শুনতে হয়, সেই পদ্ধতিটি আমি শিখিনি। অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার দক্ষতা নেই। এবারে আমি না হয় দক্ষতাও অর্জন করে ফেললাম। কিন্তু আমি যদি সহমর্মিতা দিয়ে শোনার জন্য ইচ্ছাটাই পোষণ না করি, তাহলে আমি যতই জানি শুনতে হবে এবং কিভাবে শুনতে হবেÑ তাতে কোন লাভ হলো না। যতক্ষণ না আমার ভেতর সেই ইচ্ছাটুকু জন্ম নেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটা আমার অভ্যাসে প্রবেশ করবে না। তাই কোন কিছু অভ্যাসে পরিণত করতে হলে জ্ঞান, দক্ষতা এবং ইচ্ছাÑ এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় লাগবে। আমরা জ্ঞান, দক্ষতা এবং ইচ্ছাশক্তির ওপর কাজ করে নিজের পুরনো অভ্যাসকে ভেঙ্গে নতুন প্যারাডাইম তৈরি করতে পারি। আমরা আমাদের আরও বেশি ইফেক্টিভ করতে পারি। তবে এটা একটা কষ্টকর প্রক্রিয়া। এই কষ্টটুকু আপনি কেন করবেন, সেই বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে আপনি আসলে সেটা কখনই করবেন না। এর জন্য প্রয়োজন উচ্চতর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। আপনার ইচ্ছাশক্তি যখন প্রবল হবে যে, আপনি পুরনো অভ্যাসকে ভেঙ্গে চুরে নতুন আরেকটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবেন, তখনই দেখবেন সেটা হতে শুরু করেছে এবং এই ধরনের অভ্যাস পরিবর্তনে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি জরুরী তাহলো দর্শনÑ আপনার জীবনের দর্শন কী? আপনি কি জীবনে একজন সুখী মানুষ হতে চান? এই সম্পদ, কাজ, চাকরি, লেখাপড়া, ব্যস্ততাÑ এই সবকিছুর উদ্দেশ্য কী? যদি হয় জীবনে সুখী হওয়া, তাহলেই কেবল আপনি অভ্যাস ভেঙ্গে নতুন অভ্যাস তৈরি করতে পারবেন। বর্তমানের অনেক কিছুকে ত্যাগ করে ভবিষ্যতের জন্য নতুন অভ্যাস তৈরি করতে পারবেন। ॥ তিন ॥ অভ্যাসের সংজ্ঞা বোঝার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি বিষয় বোঝাটা জরুরী। এই অভ্যাসগুলো কিভাবে আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। এটা মূলত আমাদের প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যায়। প্রকৃতি আমাদের যেভাবে তৈরি করেছেÑ আমাদের জন্মের পর থেকে বেড়ে ওঠা এবং তারপর পরিণত হয়ে মারা যাওয়া পর্যন্ত। সেগুলো হলোÑ পরনির্ভর, স্বনির্ভর এবং পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। আমরা জন্ম নেই শিশু হয়ে, নির্ভর করতে হয় অন্যের ওপর। সেই নির্ভরতা পুরোপুরি নির্ভরতা। অন্যদের সাহায্যে আমরা বেড়ে উঠি। অন্যের সাহায্য ছাড়া আমরা খুব বেশি হলে কয়েক ঘণ্টা নয়ত কয়েকদিন বেঁচে থাকতে পারতাম। তারপর বছরের পর বছর গেলে আমরা আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠি। সেটা শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে, আবেগের দিকে এবং আর্থিকভাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আত্মনির্ভর না হতে পারছি, নিজেকে নিজের মতো পরিচালনা করতে পারছি, ততদিন আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকছি। আমরা যখন ক্রমাগত আরও বড় হতে থাকি, আরও বেশি আত্মনির্ভরশীল হতে থাকি, পরিপক্ব হইÑ তখন আমরা ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করি যে প্রকৃতির সবকিছুই পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। এটা দিয়েই প্রকৃতি চলে, সমাজ চলে এবং মানুষের জীবনও পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। একটু ঠা-া মাথায় চিন্তা করলে দেখবেন, জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা বিভিন্নভাবে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। এভাবেই আমরা বেড়ে উঠি। অনেক সময় শারীরিকভাবে আমরা পরিপক্ব হলেই যে মানসিক এবং আবেগের জায়গায় একই রকম পরিপক্ব হব, সেটা কিন্তু নয়। আমরা প্রচুর মানুষ দেখতে পাই, যারা শারীরিকভাবে অনেক বড় হয়েছেন, কিন্তু তাদের আবেগ, মানসিক স্বাস্থ্য যথেষ্ট পরিপক্ব হয়নি। একইভাবে, কেউ যদি শারীরিকভাবে পরিপক্ব নাও হয়ে থাকে, তার অর্থ এই নয় যে তিনি মানসিকভাবে পরিপক্ব নন। আমাদের মানসিক বিস্তৃতির ক্ষেত্রে ‘পরনির্ভরশীলতা’ বিষয়টি আসে যখন আপনি সবকিছুর ভেতর ‘তুমি’ খুঁজে পাবেন। অর্থাৎ তুমি আমাকে দেখে রাখবে, তোমার জন্য এটা হলো না, তুমি কেন করতে পারলে না, আমি সবকিছুর জন্য তোমাকে দায়ী করব। তখন বুঝতে হবে, আপনি মানসিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। আর মানসিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হলে আপনি ভাবতে শুরু করবেন ‘আমি’ দিয়েÑ আমি এটা করতে পারি, আমি এর জন্য দায়ী, আমি পছন্দ করতে পারি ইত্যাদি। আর মানসিকভাবে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতার সংজ্ঞা হলো ‘আমরা’Ñ আমরা এটা করতে পারি; আমরা সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারি; আমরা আমাদের মেধাকে ব্যবহার করতে পারি; আমরা মিলে এরচেয়ে ভাল কিছু করতে পারি। পরনির্ভরশীল মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়; আত্মনির্ভরশীল মানুষরা নিজেদের মতো কিছু করে ফেলতে পারে; আর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল মানুষরা নিজেরা মিলে অনেক বড় কিছু করে ফেলে। পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলো অনেক বেশি সফল হয়; অনেক বেশি ওপরে উঠে যায়; এবং ইফেক্টিভ হয়। ॥ চার ॥ আমাদের দেশের একটা বিশাল অংশের মানুষ মানসিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন হয়নি। আবার একটা অংশ স্বাভাবিক কারণেই আত্মনির্ভরশীল। তারা নিজের ওপর নির্ভর করেই চলতে পারে। একা একা কাজ করে, নিজের মতো আয় করে, নিজের মতো খরচ করে, যতদিন রক্ত গরম আছে একা একাই থাকে। তারপর বুড়ো বয়সে থাকে প্রবীণ নিবাসে। এরা অন্যদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ঝামেলা হবে বলে একা একাই থাকে। কিন্তু তারা কখনই বুঝতে পারে না, তারা যদি পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল হতো, তাহলে তাদের এই একই বুদ্ধি এবং বিবেচনা দিয়ে তারা আরও অনেক বেশি ফলপ্রসূ হতে পারত। আমরা আমাদের সন্তানদের এই মন্ত্রটা শিখাই না। বর্তমানে আরও বেশি শেখাচ্ছি না। তারা ঘরের ভেতর গেমস নিয়ে বড় হচ্ছে। শরীরে আকারে তারা বড় হলেও মানসিকভাবে বড় হচ্ছে না। আমরা মনে করছি, একটা সময়ে গিয়ে ঠিক হয়ে যাবে; আদরে রাখছি, আহ্লাদে রাখছি। কিন্তু তার যে সঠিক মানসিক উন্নয়ন হচ্ছে না, তার যে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে না, বিভিন্ন পরিস্থিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে নাÑ সেগুলো বুঝতে পারছি না। শরীরে বড় হচ্ছে কি না, সেটাই আমাদের মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর যেহেতু মানসিক বেড়ে ওঠা সঠিক হয় না, তাই তারা দীর্ঘ সময় পরনির্ভর থাকে। অনেক পরে গিয়ে কিছুটা আত্মনির্ভর হয় বটে, তবে বেশিরভাগ সময়েই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে না। তাই তারা কখনও পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা বিষয়টি কিভাবে কাজ করে বুঝতে পারে না। তারা নেতা হতে পারে না; একসঙ্গে ভাল কিছু করতে পারে না। এমনকি একসঙ্গে ব্যবসা বা অন্যকিছু করতে গিয়ে চরমভাবে ব্যর্থ হয়। এর মূল কারণই হলো পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা বুঝতে না পারা। এর অন্যতম কারণ সঠিক মানসিক উন্নয়ন না হওয়া। আপনার শিশু মানসিকভাবে বেড়ে উঠছে কি-না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। দেখুন যে পরনির্ভরশীল, নাকি আত্মনির্ভরশীল, নাকি পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বেড়ে উঠছে। এই বিষয়গুলো যেহেতু বাহ্যিকভাবে দেখা যায় না, তাই বুঝতে একটু কষ্ট হবে। তবে, তাদের সঠিক মানসিক বৃদ্ধি হলেই তাদের ভেতর অভ্যাস তৈরি করা যাবে। এই বইটি আপনাকে কিভাবে আত্মনির্ভরশীল হতে হয় (প্রথম ৩টি অভ্যাস) এবং তার পরের ধাপ হিসেবে কিভাবে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতে হয় (পরের ৩টি অভ্যাস) এবং সেই অভ্যাসগুলোকে কিভাবে ধার দিয়ে রাখতে হয় (৭ম অভ্যাস) সেগুলো শিখিয়ে দেবে। তাই এই বইটি আমি যেমন মন দিয়ে পড়ছি এবং পাঠকদের জন্যও চেষ্টাকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আশা করছি, এই অভ্যাসগুলো আমার আপনার সবার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিকে তৈরিতে সাহায্য করবে। ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×