ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদ অধিবেশন শুরু, চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত

প্রকাশিত: ০১:৩৪, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

সংসদ অধিবেশন শুরু, চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত

সংসদ রিপোর্টার ॥ সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে দশম জাতীয় সংসদের ১৪তম (শীতকালীণ) অধিবেশন শুরু হয়েছে। রবিবার বিকেলে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। সংবিধান অনুযায়ী নতুন বর্ষের প্রথম অধিবেশন হওয়ায় অধিবেশনে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এই অধিবেশন আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় অধিবেশনের বৈঠক বসবে। অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়। সকাল থেকেই চারপাশে অবস্থান নেয় বিপুল সংখ্যক র্যা ব ও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যে কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থতি এড়াতে জলকামান থেকে শুরু করে সব ধরণের ব্যবস্থা রাখে প্রশাসন। এমনকি সংসদ ভবনে প্রবেশ নিয়েও ছিলো কঠোর কড়াকড়ি। সংসদ পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বিভিন্ন দেশের কুটনীতিক ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতির প্রদত্ত ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে অধিবেশন জুড়ে সাধারণ আলোচনা হবে। সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা ৪৫ ঘন্টা আলোচনা করবেন। অধিবেশন শুরুর আগে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে এই অধিবেশন আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে প্রয়োজন হলে অধিবেশনের মেয়াদ স্পীকার বাড়াতে বা কমাতে পারেন। একইসঙ্গে প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটায় অধিবেশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে অনুষ্ঠিত হয় কার্যোপদেষ্টা কমিটির বৈঠক। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজুলে রাব্বী মিয়া, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং মইন উদ্দীন খান বাদল। অধিবেশনের শুরুতে সকলকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংসদ সদস্যদের গঠনমূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংসদ হবে প্রাণবন্ত। সরকারের কাজের গঠনমূলক সমালোচনার মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু হবে সংসদ। এরপর তিনি স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য ৫ সদস্যের সভাপতিমন্ডলীর নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন- আব্দুল মতিন খসরু, শামসুল হক টুকু, এনামুল হক, মো. ফখরুল ইমাম ও বেগম হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। পরে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জাতীয় সংসদে নেওয়া শোক প্রস্তাবে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন- সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন, সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, গণপরিষদের সদস্য মো. আবুল হোসেন ও মো. আব্দুল হাকিম এবং সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাফরুল হাসান ফরহাদ। শোক প্রস্তাবে নিহতদের স্মরণে জাতীয় সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে। এসময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনাও জ্ঞাপন করা হয়। শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু সময়ের জন্য অধিবেশন মূলতবি করা হয়। এরপর অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি স্পিকারের পাশে নির্ধারিত ডায়াসে দাঁড়িয়ে এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে ভাষণ দেন। উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারী বিএনপি-জামায়াতকে ছাড়াই এই সংসদ যাত্রা শুরু করে। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিগত অধিবেশনগুলোর মতো তাদের সবর উপস্থিতি ছিলো। আর বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনেও সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে।
×