মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/নুরুল ইসলাম, টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমা ময়দান থেকে ॥ টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি লাভের আশায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে দুই হাত তুলে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আমিন, আল্লাহুমা আমিন, ছুম্মা আমিন ধ্বনিতে মুখরিত আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের ৫২তম বিশ্ব এজতেমা রবিবার শেষ হয়েছে। মোনাজাতে লাখ লাখ মুসল্লি নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কেঁদে বুক ভাসান। মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কামনা করা হয়। মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি, ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মুক্তি এবং দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার তৌফিক কামনা করা হয়। ২০১৮ সালের বিশ^ এজতেমার প্রথম পর্ব ১২ জানুয়ারি শুরু হবে এবং ১৪ জানুয়ারি শেষ হবে। এরপর ৪দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে এবং ২১ জানুয়ারি শেষ হবে। ২০১৮ সালের এজতেমা সফল করার লক্ষ্যে এর ৪০ দিন আগে চলতি বছরের ১৭ নবেম্বরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে জোড় এজতেমা শুরু হবে এবং শেষ হবে ২১ নবেম্বর বলে জানিয়েছেন বিশ^ এজতেমার মুরুব্বী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন।
আজ রবিবার বেলা ১১টা ১১ মিনিট থেকে ১১টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত ৩২ মিনিট স্থায়ী মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি দিল্লীর হজরত মাওলানা সা’দ আহমেদ। তাৎপর্যপূর্ণ এই আখেরি মোনাজাতে জীবনের সব পাপ-তাপ থেকে মুক্তি, আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়।
রবিবার আখেরী মোনাজাতে শরীক হতে সূর্য উদোয়ের পুর্ব থেকে শুরু হয় এজতেমা মুখী ধনী দরিদ্র যুবক বৃদ্ধ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষের ঢল। যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে মুসল্লিরা ধাবিত হয় এজতেমা ময়দানে। অগণিত মুসুল্লি এজতেমা এলাকার বিভিন্ন সড়ক, মিল কারখানা ও বাড়ির ছাদে বসে মোনাজাতে অংশ নেন। অনেকেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মোনাজাতে শরিক হন।
এজতেমার ২য় পর্বের আখেরি মোনাজাতেও লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত আলী খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবর্গ ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের কুটনৈতিক বৃন্দ শরিক হন। এ ছাড়া পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাসহ দলমত শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
মোনাজাতের আগে চলে হেদায়তি বয়ান। রবিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিট থেকে আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত তাবলিগের গুরুত্ব তুলে ধরে হেদায়েতি (দাওয়াতি কাজের পদ্ধতি) বয়ান করেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি দিল্লীর হযরত মাওলানা সা’দ আহমেদ। এসময় তার বয়ানের বাংলায় অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এর আগে সংক্ষিপ্ত বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা ওয়াশিকুল ইসলাম।