ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব এজতেমার ২য় পর্ব

আজ আখেরি মোনাজাত

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

আজ আখেরি মোনাজাত

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/ নুরুল ইসলাম, টঙ্গীর বিশ^ এজতেমা ময়দান থেকে ॥ আজ রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত ৫২তম বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিনে শনিবার তুরাগ তীরে টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশে চলে পবিত্র কোরান-হাদিসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান। আজ সকাল দশটা থেকে বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে এজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মোনাজাতের আগে দেয়া হবে হেদায়তি বয়ান। বিশ্ব তবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি দিল্লীর হযরত মাওলানা সা’দ আহমেদ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হবে। বিদেশী নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষ মোনাজাত মঞ্চ থেকেই এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। এতে ২০/২৫ লাখ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আয়োজকদের ধারণা। এজতেমার দ্বিতীয় পর্বে টঙ্গী শহর এবং এজতেমাস্থল ও এর আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। শনিবারও টঙ্গী অভিমুখী বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছিল মানুষের ভিড়। রবিবার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। এবারের এজতেমার শেষ দফায় ঢাকাসহ (একাংশ) দেশের ১৭টি জেলার মুসল্লিরা ২৬ খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে শনিবার মধ্যরাত থেকে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বলবত থাকবে। এবারের বিশ্ব এজতেমা নজীরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১২ হাজার র‌্যাব ও পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে সাদা পোশাকে প্রায় ৩ হাজার গোয়েন্দা সদস্য। আকাশ ও নৌপথে রয়েছে র‌্যাবের সতর্ক নজরদারি। এ পর্বেও যৌতুকবিহীন বিয়ে হয়নি ॥ রেওয়াজ অনুযায়ী বিশ^ এজতেমার দ্বিতীয় দিন বাদ আছর এজতেমা ময়দানে কনের অনুপস্থিতিতে যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন করা হতো। প্রথম পর্বের মতো এবারের বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্বেও ওই বিয়ের আয়োজন হয়নি। বিশ্ব এজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, বিগত বছরগুলোতে বিশ্ব এজতেমা ময়দানে কনের অনুপস্থিতিতে বিয়ে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও তা হয়নি। এজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হলে তা কেবল এই ময়দানে আসা তবলিগী সদস্য ও মুসল্লিরা জানতে পারেন। এলাকার লোকজন এমনকি অনেক স্বজনও তা জানতে পারেন না। ফলে ওই বিয়ের আকর্ষণ কমে যায়। এজন্য গত বছর থেকে এজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন বিয়ের ওই আয়োজন হচ্ছে না। দ্বিতীয় দিন শনিবার যারা বয়ান করলেন ॥ এজতেমার দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিন শনিবার ফজর নামাজের পর থেকে বয়ান করেন ভারতের হযরত মাওলানা মোঃ জমশেদ আলী। বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা মোঃ আব্দুল মতিন। পাশাপাশি ইংরেজী, উর্দুসহ বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হয়। এছাড়া বাদ জোহর ভারতের মাওলানা মোঃ মোরসালিন, বাদ আছর ভারতের মাওলানা মোঃ ইউসুফ ও বাদ মাগরিব ভারতের হযরত মাওলানা সা’দ আহমেদ বয়ান করেন। যা বয়ান করলেন ॥ দ্বিতীয় দিনে দেশ-বিদেশ থেকে আগত মুরব্বিগণ তবলীগের ছয় ওছুলের মধ্যে দাওয়াতে দ্বীনের মেহনতের ওপর গুরুত্বারোপ করে বয়ান করেন। বয়ানে তবলীগ মুরব্বিগণ বলেন, আল্লাহতায়ালা আপনাকে-আমাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহতায়ালা এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দুনিয়াতে যে একবার আসবে তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহপাকের এ সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হবে না। দুনিয়া হচ্ছে ধোঁকার ঘর, এ দুনিয়া হচ্ছে ধোঁকার জীবন। মিছে এই দুনিয়ার আরাম-আয়েসের কথা ভুলে গিয়ে আখেরাতের কথা চিন্তা কর। দুনিয়ার জিন্দেগী ক্ষণস্থায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের দিল থেকে আসবাবের (সম্পদের) একিন বের না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার দিলে কুদরতি একিন পয়দা হবে না। সকলকে দীনের জন্য মেহনত করতে হবে। আল্লাহর কাছে আমল ছাড়া এ দুনিয়ার জিন্দেগীর কোন মূল্য নেই। বয়ানে বলা হয়, দীনের দাওয়াতের মাধ্যমে ঈমান মজবুত হয়। ঈমান মজবুত হলে আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এ সম্পর্ক গড়ে উঠলে দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি হাসিল হয়। তাশকিলের কামরায় চিল্লাভুক্ত মুসল্লি ॥ এজতেমার প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন খিত্তা থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চিল্লায় অংশ গ্রহণেচ্ছু মুসল্লিদের এ কামরায় আনা হচ্ছে এবং তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। পরে কাকরাইল মসজিদের তবলিগী মুরব্বিদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকা ভাগ করে তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় তবলিগী কাজে পাঠনো হবে। এক মুসল্লির মৃত্যু ॥ বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে আসা এক মুসল্লি শুক্রবার রাতে মারা গেছেন। তার নাম মোঃ জয়নাল আবেদীন (৭০)। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর থানার ডোমারকান্দার উত্তর সালুয়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী মুন্সির ছেলে। শনিবার রাতে জয়নাল আবেদীন এজতেমা ময়দানে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হলে এজতেমা ময়দান থেকে তাকে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে এবারের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্বের ৮জনসহ দু’পর্বে এ পর্যন্ত মোট ৯ মুসল্লি মারা গেছেন। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ এজতেমাস্থলের আশপাশে বিভিন্ন খাবার দোকান ও হোটেলে শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ভেজাল খাবার পরিবেশন ও বিক্রির দায়ে বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কয়েক ব্যক্তিকে জরিমানা করে। এজতেমাস্থলের আশপাশে ৫টি করে দু’শিফটে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের মোট ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার মোট ২৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওসব আদালত পরিচালনা করেন। ভিআইপিরা মোনাজাতে অংশ নেবেন ॥ বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের কর্মকর্তাগণ মোনাজাতে অংশ নেবেন। বিশেষ ট্রেন ॥ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে ২৯ বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া আখেরি মোনাজাতের আগে ও পরে সকল ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। টঙ্গী রেলওয়ে জংশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের ২০ জানুয়ারি হতে ২১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত টঙ্গী থেকে জামালপুর, আখাউড়া, লাকসাম রুটসহ কয়েকটি বিশেষ ট্রেন চলবে। রবিবার আখেরি মোনাজাতের দিন টঙ্গী থেকে ঢাকা, লাকসাম, আখাউড়া, ময়মনসিংহ এবং ঈশ্বরদী রুটে একাধিক বিশেষ ট্রেন যাতায়াত করবে। আখেরি মোনাজাতের পরের দিন টিকেটধারী মুসল্লিরা যাতে উঠতে পারেন সেজন্য সকল ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেবে। এছাড়া ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পকেটমার-ছিনতাইকারী গ্রেফতার ॥ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত এজতেমাস্থলের আশপাশে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের টহল দল কয়েক ছিনতাইকারী, পকেটমার ও হকারকে আটক করেছে বলে টঙ্গী মডেল থানার ওসি জানিয়েছেন। যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা ॥ এজতেমা সূত্র জানায়, দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের জন্য আজ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কে দুপুর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া যান চলাচল বন্ধের কারণে টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় কলকারখনার মালিক-কর্তৃপক্ষ বিশ্ব এজতেমার জন্য ১ দিন কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। হাজার হাজার শ্রমিক যাতে আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে পারে সে জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মোনাজাতের দিন চলবে শাটল বাস ॥ গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান, শনিবার রাত ১২টা থেকে রবিবার আখেরি মোনাজাতের দিন বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মীরেরবাজার হতে টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে কামারপাড়া ও সাভারের বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত এ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের গাড়ি ছাড়া সাধারণ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সেজন্য মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আখেরি মোনাজাতের দিন রবিবার ভোর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকা থেকে এজতেমাস্থল পর্যন্ত মুসল্লিদের সুবিধার্থে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় অর্ধশত বিআরটিসি বাস ও ব্যক্তিমালিকানাধীন (এজতেমার স্টিকার লাগানো) শাটল বাস চলাচল করবে। নিরাপত্তা ॥ বিশ্ব এজতেমা উপলক্ষে এজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম, টঙ্গী সরকারী হাসপাতাল মাঠ ও মন্নু টেক্সটাইল মিলে পুলিশের অস্থায়ী ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে। এজতেমা মাঠে প্রবেশের ১৭টি রাস্তায় ৫ স্তরে নিরাপত্তা তল্লাশি পেরিয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে হচ্ছে। প্যান্ডেলের ভেতর ও বাইরে মুসল্লিবেশে রয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রায় ৩ হাজার সদস্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ৫টি স্তরে নিরাপত্তা দিচ্ছে। এজতেমা ময়দানের সব প্রবেশপথে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। যে সকল এলাকায় গাড়ি পার্কিং করা যাবে না ॥ এজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে শনিবার বিকেল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মহাখালী ক্রসিং থেকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের টঙ্গী হতে মীরেরবাজার পর্যন্ত, আব্দুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে, প্রগতি সরণিস্থ মধ্যবাড্ডা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রগতি সরণির রাস্তার দু’পাশে যানবাহন পার্কিং করা যাবে না। যেসব পথে গাড়ি চলবে ॥ শনিবার রাত ১২টার পর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, আশুলিয়া-বাইপাইল, কামারপাড়া, স্টেশনরোড থেকে মীরেরবাজার পর্যন্ত সকল গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। বিকল্প পথ হিসেবে ময়মনসিংহ ও সিলেট থেকে যারা ঢাকা যাবে তাদের ভোগড়া বাইপাস থেকে মীরেরবাজার হয়ে কাঁচপুর দিয়ে অতিক্রম করতে হবে। আবার যারা রাজশাহীসহ উত্তর বঙ্গ থেকে ঢাকা যাবে তারা নবীনগর-চন্দ্রা কিংবা আশুলিয়া-বাইপাইলের ধৌড় ব্রিজ হয়ে বেড়িবাঁধ দিয়ে অতিক্রম করতে বলা হয়েছে। মোনাজাতের দিন ঢাকা থেকে এজতেমাস্থলগামী মুসল্লিদের টঙ্গী ব্রিজ পরিহার করে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়ক ধরে হেঁটে এজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশ দিয়ে ভাসমান সেতু দিয়ে ময়দানের ভেতরে প্রবেশের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগ। এজতেমার ইতিহাস ॥ এজতেমার মুরব্বিদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে এজতেমার আয়োজন করা হয়। তারপর ১৯৪৮সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমানস্থলে স্থানান্তর করা হয়। পরে সরকারীভাবে তুরাগ তীরের ১৬০একর জমি স্থায়ীভাবে এজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। গত বছর হতে প্রথমবারের মতো চার ভাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা। দেশের মোট ৩২ জেলা নিয়ে গতবছর এজতেমার দুই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ এ বছরের এজতেমায় বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা দু’পর্বে অংশ নিয়েছে। এ বছরের প্রথম পর্বে ঢাকার একাংশসহ ১৭ জেলার তবলীগ অনুসারীরা অংশ নেন। দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেন ১৬ জেলাসহ ঢাকার বাকি অংশের তবলীগ অনুসারীরা। তবে বিদেশী মুসল্লিরা প্রতিবছর বিশ^ এজতেমায় অংশ নিতে পারবেন। মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বের এজতেমা শুরু হয়। একই কারণে গত বছর আবারও চার পর্বে দু’বছরে এজতেমা আয়োজনে এ পরিবর্তন আনা হয়। বিশ্ব এজতেমার শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বিরা এজতেমার এ তারিখ নির্ধারণ করেন।
×