ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র চালু হলে ধারণা বদলে যাবে পরিবেশবাদীদের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

কয়লাচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র চালু হলে ধারণা বদলে যাবে পরিবেশবাদীদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো উৎপাদন শুরু করলে পরিবেশবাদীদের ধারণা পাল্টে যাবে। রামপাল প্রকল্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শনিবার বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এ কথা বলেন। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে রামপাল প্রসঙ্গে মিট দ্য প্রেসে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনিএ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, রামপাল প্রকল্প নিয়ে পরিবেশবাদী এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকার আলোচনা করছে। তাদের ভাল পরামর্শকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজও চলবে। আগামী মাসেই ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে রামপালের ঋণ চুক্তি সই হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আসেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় সংগঠনের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানীসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলছেন। আমরা সবার কথা শুনছি। আমরা সেখানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি তাতে সুন্দরবনের পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। বিশ্বের যারা এর বিরুদ্ধে কথা বলছেন তাদের মাথাপিছু আয় আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। তারাও প্রথমে কয়লা ব্যবহার করে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছেছে। এরপর নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের কথা চিন্তা করছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ডলার না ছাড়ালে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে জনপ্রিয় করা সম্ভব নয়। পরিবেশবিদদের সমালোচনা ও আলোচনা আমরা শুনবো আবার একই সঙ্গে আমাদের কাজও চলবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করেন পার্শ্ববর্তী ভারত ও মিয়ানমার সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আমরা সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে জরিপ করার পরিকল্পনা করছি। সমুদ্র সম্পদ জরিপে কোম্পানি নিয়োগের প্রস্তাব মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। সোমবার নাগাদ এটা পেয়ে গেলে মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, ব্লু ইকনোমি সেল করা হয়েছে। সমুদ্রে অনুসন্ধান কাজ চালাতে জাহাজ সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের সঙ্কট মোকাবেলায় আবাসিক গ্রাহকদের এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিদ্যুত ও শিল্পকারখানায় এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য একটি নীতিমালা করা হয়েছে। আগামী মাসেই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। একই সঙ্গে দাম নিয়ন্ত্রণে নীতিমালাও করা হচ্ছে। এটিও আগামী মাসে চূড়ান্ত করা হবে। তিনি অপর এক প্রশ্নের জনাবে বলেন, আমরা পরিবহনে সিএনজিকে নিরুৎসাহিত করতে চাই। সঙ্গত কারণে পেট্রোল এবং অকটনের দাম কমিয়ে আনতে চেয়েছিলাম। এসব বিষয় মাথায় রেখেই তেলের দাম কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। ফলে এখনই দাম কমানো সম্ভব নয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল থাকলে দাম কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করা যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ প্রায় ৬২ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদন করছে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। ফলে কার্বন নিঃসরণের হার কম। পৃথিবীর খুব কম দেশ এই পরিমাণ পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করে। এ কারণে কার্বন ক্রেডিট পেতে পারে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার উদ্যোগ নিতে পারেনি। আমরা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নাইকো’র সঙ্গে অবৈধভাবে চুক্তি করেছিল, সেই চুক্তিপত্রের সব কাগজপত্র এবং গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ভিডিও জবানবন্দী, এফবিআইয়ের রিপোর্ট গত মাসে আন্তর্জাতিক আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। আমরা চাইছি এই চুক্তিপত্র বাতিল হোক। এরফলে গ্যাসক্ষেত্র পুড়িয়ে ফেলার ক্ষতিপূরণ পেতে সুবিধা হবে। তিনি জানান, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুত আনবে। ভারতের ভূমি ব্যবহার করে এ বিদ্যুত আনা হবে। সম্প্রতি ভারত এই বিদ্যুত আমদানির জন্য ভূমি ব্যবহারে সম্মতি দিয়েছে। আগামী মাসে নেপালের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি হবে। নেপালের জলবিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনে বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশ। পরে এই বিদ্যুত বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। এক্ষেত্রে দাম পড়বে অনেক কম। নিজের মন্ত্রণালয় পেপাররেস করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পেপারলেস অফিস আজকে বললে কালকে করা সম্ভব নয়। প্রথমে আমার অফিসের লোকদের উদ্বুদ্ধ করতে হচ্ছে। এ জন্য দুই বছর লাগছে। এ জন্য পরামর্শক কাজ করছে।পৃথিবীর বিখ্যাত পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। তিন বছরে মধ্যে টোটাল ইআরপি হয়ে যাবে আমাদের মন্ত্রণালয়। কোন পেপার থাকবে না।
×