ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিয়ে ডিজিটাল সনদপত্র দেয়া হবে: নৌপরিবহন মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:০৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিয়ে ডিজিটাল সনদপত্র দেয়া হবে: নৌপরিবহন মন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই চলছে, বিভিন্ন সময়ে প্রায় এক লাখ অমুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হয়েছে। এখন তাদের বাদ দিয়ে ডিজিটাল সনদপত্র তৈরি করে দেয়া হবে। এতে করে নতুন আর ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বিভিন্ন সময়ে অনেক অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। এগুলো বেড়ে প্রায় এক লাখ ছাড়িয়েছে। এখন সময় এসেছে ভূয়াদের সনাক্ত করার। কারণ যারা মুক্তিযোদ্ধা নয়, তাদের কোনমতে মুক্তিযোদ্ধা করা যাবে না। সেই যাচাই-বাছাই এখন থেকে শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, তাদেরই ডিজিটাল সনদপত্র দেয়ার। এতে আর ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সৃষ্টি হতে পারবে না। শনিবার সকালে মাদারীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও আলোড়ন’৯২ ব্যাচের উদ্যোগে দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এ কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, ‘সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও অধিকাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন, যারা ট্রেনিং গ্রহণ করেছেন, রণাঙ্গনে যারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন তারাই একমাত্র হবেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।’ মন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, ‘তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিল। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে বসে জনৈক ইউসুফের কথায় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করেছিল। বহুবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেস্টা করেছে। পবিত্র ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিএনপি-জামায়াত সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, পুলিশ পুড়িয়ে মেরেছে, শতশত গাড়ি পুড়িয়েছে, শ্রমিক পুড়িয়ে মেরেছে, পবিত্র কোরান শরীফ পুড়িয়েছে, শহীদ মিনার ভেঙ্গেছে, মসজিদে হামলা করেছে। তারা এ দেশকে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছে। মন্ত্রী এ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন সারাবিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে বিশ্ববাসী আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। দেশে এখন আর কেউ না খেয়ে থাকে না। দরিদ্র-অতি দরিদ্রের হার একেবারে কমে এসেছে। এক সময় আমাদেরকে খাদ্য আমদানী করতে হয়েছে, এখন আমরা খাদ্য রপ্তানী করি। শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী আশিকুর হোসেন অপু সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. কালাম উদ্দিন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা নূরুর আলম বাবু চৌধুরী, বর্তমান মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ মো. শাহজাহান হাওলাদার, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্র শিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেনের ভাই কাজী মনোয়ার হোসেন, পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অব নেচারের সভাপতি রাজন মাহমুদ, মীর এনামুল হক প্রমুখ। এ সময় দেড় হাজার অসহায় দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। পরে মন্ত্রী আলহাজ্ব আমিনউদ্দিন হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও কলকাতায় অনুষ্ঠেয় ভারত সেবাশ্রম সংঘের শতবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে সিডি প্রদর্শন ও শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
×