ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবশেষে চাঁদপুর বিএম কলেজের মেঘ কাটল

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

অবশেষে চাঁদপুর বিএম কলেজের মেঘ কাটল

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২০ জানুয়ারি ॥ দীর্ঘ এক বছর পর অবশেষে সমস্যা ঘুচল বাগাতিপাড়ার চাঁদপুর বি,এম কলেজের। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরহাদ হোসেন কলেজের মনোবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক লুৎফর রহমানকে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্ব দেন। স্থানীয়রা জানায়, ২০০০ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী স্বঘোষিত অধ্যক্ষ মোকবুল হোসেন দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী কলেজের তথাকথিত ভুয়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক নাটোর, মহাপরিচালক কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, চেয়ারম্যান কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বরাবর অভিযোগ করে আসছে। ক্যাডার বাহিনীর ভয় ও টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করার প্রবণতা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না। পাশাপাশি অদৃশ্য কারণে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ও প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে দীর্ঘ ১৬ বছর নিয়োগবাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাত, জালিয়াতির মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু গত বছরের শুরুর দিকে আবারও আন্দোলনে নামে শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ, বিক্ষোভ-মিছিল, মানববন্ধন, ক্লাসবর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। এ সময় অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোকবুল হোসেনকে তার অফিসে তলব করলে অধ্যক্ষ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কালক্ষেপণ করেন। কলেজ ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডাকলেও সেখানে উপস্থিত হননি এমনকি কলেজে আসাও বন্ধ করে দেন। পরে কলেজে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ মোকবুল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে এলেও তিনি দেখা করেননি বরং বিভাগীয় কমিশনারের কাছে উল্টো অভিযোগ করেন তাকে সরানোর জন্য তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত এবং হয়রানি করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জেলা শিক্ষা অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আতিয়ুর রহমান দীর্ঘ ৫ মাস ধরে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ মোকবুল হোসেনকে অযোগ্য ও নিয়োগবিহীন বলে উল্লেখ করা হয়। জালিয়াতির মাধ্যম ক্ষমতা দখলেরও অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানানো হয় প্রতিবেদনে। এছাড়া প্রতিবেদনে কলেজে সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে যতদিন বিধি মোতাবেক আইনানুগ অধ্যক্ষ নিয়োগ না হয় ততদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে রুটিন দায়িত্ব পালনের সুপারিশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরহাদ হোসেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক, শিক্ষক কর্মচারী ও উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে কলেজের মনোবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক লুৎফর রহমানকে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্ব দেন।
×