ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সবজির বাজার উর্ধমুখী, সয়াবিন তেল লিটারে বেড়েছে ৫ টাকা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

সবজির বাজার উর্ধমুখী, সয়াবিন তেল লিটারে বেড়েছে ৫ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভরা শীতে সবজির মৌসুমেও দর আগের তুলনায় বেড়েছে। যদিও গত দেড় মাসে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে ছিল। একইসঙ্গে দরের ক্ষেত্রে তেমন ওঠানামা দেখা যায়নি। কিন্তু শুক্রবার সরবরাহ ভাল থাকলেও সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। সবজির মৌসুমে এভাবে দরবৃদ্ধিতে কিছুটা ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। বরাবরের মতো সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে পরিবেশক পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমলেও বেড়েছে বোতলজাত তেলে। গত সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ এডিবল অয়েল কোম্পানি লিমিডেট (বিইওএল)। সপ্তাহ পেরোতেই সেই পথে পা রাখল সিটি, মেঘনাসহ বেশ কয়েকটি বোতলজাত সয়াবিন বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুদিনে মণপ্রতি ৭০-৮০ টাকা দাম কমেছে খোলা সয়াবিন তেলের। দাম কমা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সিটি গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পরিবেশক মৌলভীবাজারের জব্বার স্টোরের স্বত্বাধিকারী আবদুল জব্বার জানান, বৃহস্পতিবারে বোতলজাত সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী সব কোম্পানি লিটারে ৫ টাকা দাম বাড়িয়েছে। আগে সিপি গ্রুপের মালিকানাধীন তীর মার্কার এক লিটার বোতলের দাম ছিল ৯৫ টাকা। বৃহস্পতিবার তা ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। একইভাবে অন্য বোতলের দামও বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবারও রাজধানীর বাজারগুলোতে তেলের চড়া দর অব্যাহত ছিল। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল বাজারসহ কয়েকটি বাজার সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ পণ্যের দাম কেজি প্রতি ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে। শান্তিনগর কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদন ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ফলে সবজির দাম বাড়ছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে পণ্যের দাম উঠবে-নামবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে মনিটরিংয়ের দরকার। মহাখালী বাজারে সবজি কিনতে আসা হাবিবুর রহমান বলেন, শীত মৌসুম আসার পর প্রথম দিকে সবজির দাম কিছুটা বাড়তি ছিল। এরপর মধ্যখানে দাম কমেছিল। এখন আবার দাম বাড়ছে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বাজার মনিটরিং অত্যন্ত প্রয়োজন। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায়; কালো বেগুনের দাম ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে। এর মধ্যে সাদা বেগুন ৬০ টাকায়, প্রতি কেজি শিম ৪০-৫০ টাকা, টেমেটো (ইন্ডিয়ান এলসি) ৩৫ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, শশা ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখি ৬০ টাকা, আলু ২৫ টাকা এবং পেঁপে ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি মুলা ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ১৫ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ১৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, শালগম ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৩৫ টাকা, লেবু হালি প্রতি ১৫-২৫ টাকা; আটি প্রতি পালং শাক ১৫ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের দামে তেমন কোন পরিবর্তন নেই। কেজি প্রতি দেশী মসুর ডাল (দেশী) ১১৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ১০০ টাকা, মুগ ডাল (দেশী) ১১০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ৯৫ টাকা, মাসকলাই ১৩০ টাকা এবং ছোলা ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে দেশী পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২৮ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২২ টাকা, দেশী রসুন ২০০ টাকা, ভারতীয় রসুন ২১০ টাকা এবং চীনা রসুন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশী আদা ১৫০ টাকা, চীনের আদা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মুরগির বাজারেও দাম কিছুটা বেড়েছে।
×