ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের

সর্বত্র সংশয়, অবিশ্বাস ও বিভাজনের দেয়াল ॥ পরিণতি ভাল নয়

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

সর্বত্র সংশয়, অবিশ্বাস ও বিভাজনের দেয়াল ॥ পরিণতি ভাল নয়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে বিভাজন, বিভেদের ওয়াল উঁচু হচ্ছে। অথচ সম্পর্কের সেতুগুলো উঁচু হচ্ছে না। এটার পরিণতি আমাদের কারও জন্য ভাল নয়। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে (টিএসসি) জগন্নাথ হল এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, প্রেসক্লাব, চিকিৎসক, আইনজীবী থেকে শুরু করে সর্বত্র সংশয়, অবিশ্বাস ও বিভাজনের দেয়াল উঠে গেছে। এর পরিণতি ভাল নয়। এ বিভেদ দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবে অন্ধকার দিয়ে অন্ধকার প্রতিহত করা যায় না, অন্ধকার দূর করতে চাই আলো। শান্তি না হোক, মনের মাঝে অন্তত স্বস্তি ফিরে আসুক। মাদকের বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে ইয়াবা পৌঁছে গেছে। এসব সেবনে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের মতো মাদকের বিস্তার ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। তাই রাজনীতিবিদরা শুধু রাজনৈতিক বক্তৃতা করবেন না, মাদকের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেন গড়ে তুলবেন। নিজ নিজ এলাকাকে মাদকমুক্ত করে তুলবেন। মনে রাখবেন, তথাকথিত রাজনীতিকরা সব সময় পরবর্তী নির্বাচনের কথা ভাবে আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমাদের অভিন্ন বিপদ হলো সাম্প্রদায়িকতা। আর অভিন্ন শত্রু হলো দারিদ্র্য। এটা প্রতিহত করতে না পারলে আমাদের অবিনাশী চেতনা ব্যাহত হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেউ নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না। সংবিধান ও সরকার আপনাদের পাশে আছে। তাই কোন আঘাত এলে পাল্টা আঘাত দেয়ার মানসিকতা রাখবেন।’ জগন্নাথ হল এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ হল এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পান্না লাল দত্ত। বঙ্গবন্ধু না ফিরলে স্বাধীনতা থাকত নাÑ বঙ্গবন্ধু পরিষদ ॥ বঙ্গবন্ধু পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে না আসতেন তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকত না। স্বাধীনতাবিরোধীরা বাংলাদেশের জন্ম থেকেই চক্রান্ত শুরু করেছিল এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে সে চক্রান্ত বাস্তবায়িত করে। জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এসএ মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম প্রমুখ। ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জন্ম থেকেই চক্রান্ত শুরু করেছিল। মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হয়নি বলে আজও তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে না আসতেন তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকত না। সভাপতির বক্তব্যে ডাঃ এসএ মালেক বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ে কমপক্ষে দশটি বৈঠক করেছেন। মোশতাক-জিয়া চক্রের কুমিল্লায় করা অনেক ষড়যন্ত্রের কথা জানা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লন্ডনে বসে জিয়ার সঙ্গে তারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।
×