ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কম খরচ ও সেরা মানের জন্য এখন রোগীর ভরসা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

কম খরচ ও সেরা মানের জন্য এখন রোগীর ভরসা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল

নিখিল মানখিন ॥ স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। প্রায় দু’ হাজার শয্যাবিশিষ্ট এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি রোগী সেবা গ্রহণ করেন। বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ কম ডায়াগনোসিস ফি নেয়া হয়। রোগী ভর্তি, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফিসহ সকল আর্থিক বিষয় লেনদেন হয়ে থাকে ব্যাংকের মাধ্যমে। তাই এক্ষেত্রে রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হয় না। শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে সব কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও মেডিক্যাল চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কন্সালটেন্সি কার্যক্রম। গবেষণায় সাফল্যের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি স্পেনের সিমাগো রিসার্চ গ্রুপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস প্রকাশিত জরিপে বাংলাদেশের ১১টি নেতৃত্বস্থানীয় বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ আজ রোগীদের আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল। জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসা সেবায় শ্রেষ্ঠতম নাম। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণাও আজ এক অন্যন্য নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। ৯০টিরও বেশি উচ্চতর মেডিক্যাল শিক্ষাবিষয়ক কোর্স এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হচ্ছে। অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা ৪২টি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ৭টি অনুষদ ও ৫৩টি বিভাগ। জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের এইমসসহ বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ও সংস্থার অংশীদারী গবেষণার চুক্তি রয়েছে। তারমধ্যে নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়, এইমস ছাড়াও রয়েছে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, মাহিডোল বিশ্ববিদ্যালয়, রক ফেলার ফাউন্ডেশন, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর’বি, ইএসএইড, সেভ দি চিলড্রেন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ইউনিভার্সিটির সঙ্গে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নততর চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে অসংক্রামক রোগ বিষয়ক গবেষণাসহ নানা কার্যক্রম পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। উন্নত বিশ্বের ন্যায় ¯œাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষায় রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় ৩০০ জন বিদেশী রেসিডেন্ট-ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। রিউমাটোলজি বিভাগ, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, পাবলিক হেলথ এ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ চালু করা হয়েছে। সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড অটিজম ইন চিলড্রেন, পেলিয়েটিভ কেয়ার উইং, রেসপিটেরি মেডিসিন উইং প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অর্থায়নে প্রায় ৪শ’টি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্যে ৬টি বাস সংগ্রহ করা হয়েছে। সেন্টার অব এক্সিলেন্সে রূপান্তরকরণের কার্যক্রম প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাফল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণের জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহায়তায় কেবিন-ব্লকের উত্তর দিকে ১২ বিঘা জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে বেতার ভবনের জায়গা রেজিস্ট্রেশন করে বুঝে নেয়ার পর্যায়ে রয়েছে। নিজস্ব আয় থেকে বিভিন্ন উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে। কোরিয়ার সহজ শর্তের ঋণ সহযোগিতায় ৭শ’ শয্যার একটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল গড়তে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। পঙ্গু ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫ কোটি টাকার আয় থেকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা এবং বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫শ’ বেডে উন্নীত, কেবিনের সংখ্যা ১২৪-এ উন্নীত, অপারেশন থিয়েটারের সংখ্যা ৫৬-এ উন্নীত, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের শয্যা সংখ্যা ৩৭-এ উন্নীত, করোনারি কেয়ার ইউনিটের শয্যা সংখ্যা ৩৫-এ উন্নীত, আউটডোরে আগত রোগীর দৈনিক গড় সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজারে উন্নীত এবং বছরে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার অতিক্রম করেছে। দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণকে আরও আস্থাশীল করার উদ্দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আধুনিক সকল চিকিৎসা সুবিধাদি সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ ইমার্জেন্সি কমপ্লেক্স, আউটডোর কমপ্লেক্স, অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স, নার্সিং অনুষদ প্রতিষ্ঠা, আন্তর্জাতিক মানসম্মত মেডিক্যাল কনভেনশন সেন্টার, বিভিন্ন রকমের গবেষণা পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র ল্যাবরেটরি ভবনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে রূপান্তরকরণের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) উদ্বোধন করা হয়েছে। হেমাটোলজি স্পেশালাইজড ল্যাব এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে সফলভাবে প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা থেরাপি চালু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ৬টি নতুন বিভাগ ও ১টি অনুষদ উদ্বোধন এবং অসংক্রামক রোগ গবেষণার লক্ষ্যে আঞ্চলিক কেন্দ্র বাংলাদেশের উদ্বোধন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডায়াগনোসিস ফি ॥ রাজধানীসহ সারাদেশে নানা কৌশলে ডায়াগনোসিস ফি বাণিজ্য চলছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো একই মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য অনেক বেশি টাকা নিচ্ছে। একটি আল্ট্রানোগ্রাম পরীক্ষার ফি যেখানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫০ টাকা, সেটাই বারডেম হাসপাতালে ১,০০০ টাকা, ল্যাবএইড হাসপাতালে ১৫০০ টাকা, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ১২০০ টাকা। সিবিসি পরীক্ষার ফি যেখানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ টাকা, সেটাই বারডেম হাসপাতালে ৩০০ টাকা, ল্যাবএইড হাসপাতালে ৪৫০ টাকা ও ইউনাইটেড হাসপাতালে ৫০০ টাকা। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মূত্র ১০০ টাকা, মল ১০০ টাকা, সিরাম বিলুরুবিন ৮০ টাকা, সিরাম ইলেক্ট্রলাইট ২৫০ টাকা, কোলেস্টেরল ১৫০ টাকা, ক্রিয়েটিনিন ৭০ টাকা, ডায়াবেটিস ১০০ টাকা, থাইরয়েড ৯০০ টাকা ও এক্স-রে পরীক্ষার ফি ১২০ টাকা নেয়া হয়। আর বারডেম হাসপাতালে মূত্র ১৫০ টাকা, মল ১৫০ টাকা, সিরাম বিলুরুবিন ২০০ টাকা, সিরাম ইলেক্ট্রলাইট ৫০০ টাকা, কোলেস্টেরল ২৩০ টাকা, ক্রিয়েটিনিন ২০০ টাকা, ডায়াবেটিস ২০০ টাকা, থাইরয়েড ১৮০০ টাকা ও এক্স-রে পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা নেয়া হয়। ল্যাবএইড হাসপাতালে মূত্র ৩০০ টাকা, মল ৩০০ টাকা, সিরাম বিলুরুবিন ৮৫০ টাকা, সিরাম ইলেক্ট্রলাইট ৩০০ টাকা, কোলেস্টেরল ৩০০ টাকা, ক্রিয়েটিনিন ৩০০ টাকা, ডায়াবেটিস ৪০০ টাকা, থাইরয়েড ২৪০০ টাকা ও এক্স-রে পরীক্ষার ফি ৪৫০ টাকা নেয়া হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালে মূত্র ৩৫০ টাকা, মল ৩৫০ টাকা, সিরাম বিলুরুবিন ৩৫০ টাকা, সিরাম ইলেক্ট্রলাইট ১০০০ টাকা, কোলেস্টেরল ৪৫০ টাকা, ক্রিয়েটিনিন ৫২০ টাকা, নেয়া হয়। বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান জনকণ্ঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও মেডিক্যাল চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত। বিকেলে, সন্ধ্যায় এমন কি রাতেও সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ নিয়মিত রাউন্ড দিচ্ছেন। সন্ধ্যায় অনেক শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন। চিকিৎসকবৃন্দ তার কর্তব্যরত ওয়ার্ডে, বহির্বিভাগে যথাসময়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নার্সরা নিজ হাতে রোগীদের ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। সবমিলিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল মানুষের বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে। উপাচার্য আরও বলেন, রোগীদের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে হাসপাতালের শয্যা ও কেবিন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আইসিউ সম্বলিত অত্যাধুনিক সিসিইউ, এনআইসিইউ চালু করা হয়েছে। একটি আধুনিক আইসিইউ কমপ্লেক্স ও অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগ, রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগ, এন্ডোক্রাইনোলজি মেডিসিন বিভাগ, সেন্টার ফর প্যালিয়াটিভ কেয়ার, সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অটিজম ইন চিলড্রেন চালু করা হয়েছে। জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা, নবজাতকদের চিকিৎসাসেবা, তোঁতলামি ও বধিরদের চিকিৎসাসেবায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পও চালু রয়েছে।
×