ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সেমিনারে একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি বক্তাদের

চাই বিশ্ব স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

চাই বিশ্ব স্বীকৃতি

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়া জরুরী। মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর গণহত্যার জন্য ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতে হবে। এছাড়া রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করতে না পারলে মৌলবাদ ঠেকানো যাবে না। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার নামে দেশে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বি-মৌলবাদীকরণ কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রজতজয়ন্তী ও সপ্তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই উন্নয়নের দিকে নজর দেয়। সরকার ভিশন-২১ বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ নেয়। তবে বিএনপি-জামায়াত সেই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে আসছে। বিশেষ করে ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির পর বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন ধর্মের নামে, ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার নামে দেশে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার জন্য ‘গণহত্যা দিবস’ নামে একটি দিবস পালনের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলোচনা করেছিলেন। এ বিষয়ে তখন মন্ত্রিসভায়ও আলোচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান এইচ টি ইমাম। সেমিনারে নর্থ আমেরিকান জুরিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ্যাটর্নি উইলিয়াম সেøান বলেন, বিশ্বের দেশে দেশে আমরা গণহত্যা দেখেছি। বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, গুয়াতেমালা, চিলি, বুরুন্ডিসহ বিভিন্ন দেশে গণহত্যা হয়েছে। তবে গণহত্যার স্বীকৃতির বিষয়টি জটিল। কেননা, একটি দেশকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে দেশ এই গণহত্যা চালিয়েছে, সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হতে পারে। সে কারণেই অনেক দেশের গণহত্যার স্বীকৃতি মেলে না। তবে গণহত্যার ঘটনা যেন কোনভাবেই চাপা না পড়ে, সেদিকে মনোযোগী থাকতে হবে। ভারতের মানবাধিকার কর্মী ও কবি গীতেশ শর্মা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় মৌলবাদ রয়েছে। এখানের ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করতে চায়। তবে জনগণ সচেতন থাকলে, সেটা কখনই সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চলছে ধর্মের নামে। তবে কোন ধর্মই মানুষকে এভাবে নির্যাতন করতে বলেনি। মুক্তিযুদ্ধের বিদেশী বন্ধু জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থী দেখেছি। শরণার্থীদের জন্য কাজ করেছি। তবে বাংলাদেশ থেকে যেসব শরণার্থী সেখানে গিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে গণহত্যার ঘটনা শুনে অবাক হয়েছিলাম। সে সময় ৩০ লাখ লোককে হত্যা করা হয়েছিল। এটা নিয়ে কোন বিতর্ক থাকতে পারে না। কেননা, শরণার্থী ক্যাম্পেই মারা গিয়েছিল প্রায় ১০ লাখ লোক। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ১০ দিনে শুধু যশোর জেলায় মারা গিয়েছিল ১০ হাজার লোক। ফোরাম ফর সেক্যুলার নেপালের আহ্বায়ক যুবনাথ লামসাল বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় মৌলবাদ রয়েছে। এই ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্ম ও রাজনীতিকে এক করে ফেলছে। তবে কোনভাবেই ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি বা রাজনীতির সঙ্গে ধর্ম মেলানো ঠিক নয়। রাজনীতির সঙ্গে ধর্ম মেলানো মানে একটি বিষক্রিয়া তৈরি করা। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতা না থাকলে গণতন্ত্র হয় না। দেশের স্বার্থেই আমাদের ধর্মমুক্ত রাজনীতি করতে হবে। এছাড়া ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, তার স্বীকৃতি দেয়া জরুরী বলেও জানান তিনি। সুইডেনের মানবাধিকার কর্মী এরিক হেদলুন্দ বলেন, প্রতিটি মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্মের মধ্যে বৈচিত্র রয়েছে। তবে সকলেই যেন সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে আমরা সেটাই চাই। তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় জঙ্গীগোষ্ঠীর দেখা মিলছে। সুইডেনেও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কিছু সদস্যকে দেখা গেছে। সরকার তাদের চিহ্নিতও করেছে। এই জঙ্গীগোষ্ঠীরা সুইডেনের মূল্যবোধে বিশ্বাস করে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে সরকার ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও তিনি জানান। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মাদ আবদুর রশীদ বলেন, ইসলাম ধর্ম কোন ফুটবল নয় যে এটাকে নিয়ে কেউ খেলবেন। তবে এদেশের কোন কোন রাজনৈতিক দল ফুটবলের মতোই এটা খেলছে। যেটা মোটেও সমীচীন নয়। তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকের সংশোধনী নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেননা, পাঠ্যপুস্তকে নতুন করে কয়েকটি সংশোধনী আনা হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে কি ক্ষতি হলো, সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের গবেষক মফিদুল হক বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচার শুরুর পর থেকে জামায়াতে ইসলামী বিদেশে লবিং শুরু করে। তারা এই বিচার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তবে এই বিচার প্রক্রিয়া সরকার চালিয়ে গেছে। কেননা, এই বিচার প্রক্রিয়ায় জনসমর্থন ছিল। তরুণ প্রজন্মও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে আসছিল। সে কারণেই তারা ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি সমর্থন জানায়। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের নায়েবে ন্যাশনাল আমির মীর মোবাশ্বের আলী বলেন, বাংলাদেশে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীর ওপর বিভিন্ন সময়ে হামলা-আক্রমণ হয়েছে। উগ্র মৌলবাদী ধর্মীয়গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছে। তবে আমরা বলতে চাই প্রতিটি মানুষেরই ধর্ম পালন ও ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা রয়েছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার জন্য দেশে একটি দিনকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি শিশুর সাংস্কৃতিক শিক্ষার বিকল্প নেই বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাজ শেষ হয়ে যায়নি। বরং বেড়েছে। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় এগিয়ে নিতে পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকতাকরণ রোধসহ দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তারা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শান্তি কমিটি থেকে শুরু করে সকল ঘাতক বাহিনীর বিচার শুরু করা, ’৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তারা। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সারাদেশের শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ শিক্ষা ও শিশুর বিকাশের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ১৯৯২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রজতজয়ন্তী ও সপ্তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার সমাপনী অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে শিক্ষাবিদ, লেখক, আইনজীবী, অভিনয় শিল্পী, শহীদ পরিবারের সন্তানসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধি অংশ নেন। ‘ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সমাজ গড়ে তুলুন’ সেøাগান সামনে রেখে দুদিনব্যাপী সম্মেলনের শেষদিনে তিন পর্বে ছিল আনুষ্ঠানিকতা। শেষ অধিবেশনে গঠনতন্ত্রের সংশোধনী অনুমোদন, আগামী তিন বছরের কর্মসূচী ঘোষণা, সপ্তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তাব, নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন নির্বাহী কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কাজী মুকুল। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, এখন নতুন ও নিরাপদ সমাজ গড়ার চিন্তা আমাদের বেশি করতে হবে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আমরা এগিয়ে যেতে চাই এই বিশ্বাস সবার মনে ধারণ করার বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তিনি। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি শিশুর সাংস্কৃতিক শিক্ষার বিকল্প নেই জানিয়ে শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ বলেন, সাংস্কৃতিক শিক্ষার ওপর আমাদের এখন জোর দিতে হবে। যারা মাদ্রাসা শিক্ষাকে মওদুদিবাদী শিক্ষায় পরিণত করেছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এভাবে তারা সারাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন বাঙালীর সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখে মৌলবাদীরা ওয়াজ মাহফিল করে। এই উৎসবকেও তারা ধর্মীয়ভাবে রং দেয়ার চেষ্টা করে। তিনি বলেন, একবার নভোথিয়াটার ঘুরে গেলে মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে কুসংস্কার কেটে যাবে। ১০/১২ জামায়াতপন্থী ব্যক্তি শিক্ষাকে অসাম্প্রদায়িক রাখতে চায় না মন্তব্য করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, এখন থেকে শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু করে সকল প্রতিষ্ঠানে আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। তা না হলে লড়াইয়ের ময়দানে নতুন নতুন শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে তা নয়, এখন দেখছি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য বড় বড় কাজ বাকি রয়ে গেছে। দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবি জানিয়ে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, জামায়াতের বিচার নিশ্চিত করতে রাজপথে আমাদের ফের কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার আইন করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোন মূল্যে এই আইন পাস করতে হবে। সাক্ষী সুরক্ষা আইন করারও বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমাদের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করতে হবে। আমরা ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তরের পক্ষে কখনই মত দেব না। ট্রাইব্যুনালকে জাদুঘর করারও দাবি জানান তিনি। এছাড়াও সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কথা বাদ দেয়ারও দাবি জানান তুরিন। কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশীদ বলেন, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন হোক নির্মূল কমিটির ভবিষ্যত কর্মসূচী। অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, অভিনয়শিল্পী শমী কায়সার ও সৈয়দ তানভীর হায়দার চৌধুরী। ভবিষ্যত কর্মসূচী ॥ আগামী দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে পাঠাগার আন্দোলন জোরদার করা, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকার হওয়া শহীদদের স্মরণে ও পরিবেশ রক্ষায় ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী যা শুরু হবে চলতি বছরের ২৫ মার্চ থেকে, সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার, ১৯৭১ সালের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচী, সারাদেশে প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থাকা স্বাধীনতাবিরোধীদের খুঁজে বের করে তালিকা তৈরি করা, দেশের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা প্রদর্শন হয় না ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন হয় না সেসব প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস মোকাবেলায় দেশের সকল জেলা-উপজেলায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও সাম্প্রদায়িক কর্মকা-ে জড়িত ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, কমিশন গঠনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়া। এছাড়া প্রস্তাবিত ভবিষ্যত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, সংবিধানসম্মত শিক্ষানীতি না হলে সারাদেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করা ও স্কোয়াড গঠন, ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে আসতে সমমনা সংগঠনের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচী নেয়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তিবাহিনীসহ ঘাতক বাহিনীর বিচার চলতি বছরে শেষ না হলে ২০১৮ সালে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল প্রতিহত করতে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করা, ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা।
×