ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর মেরুতে বাড়ছে তাপমাত্রা ॥ ছিটকে পড়ছে আইসবার্গ

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

উত্তর মেরুতে বাড়ছে তাপমাত্রা ॥ ছিটকে পড়ছে আইসবার্গ

পৃথিবীর উত্তর মেরুতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের তাপমাত্রা গড় তাপমাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ উষ্ণ ছিল। এই হিট-ওয়েভ বা তাপপ্রবাহ সেখানে তাপমাত্রার রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেন যেসব বিজ্ঞানী, তাদের মতে, অসময়ে আর্কটিক অঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এবং এজন্যে তারা মানুষের নানা ধরনের কর্মকাণ্ডকেই দায়ী করছেন। স্যাটেলাইট থেকে সংগ্রহ করা তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত নবেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সেখানকার তাপমাত্রা গড় হিসেবে পাঁচ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি ছিল। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এনভায়রনমেন্টাল চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের একজন গবেষক ড. ফ্রিডরিক অটো বলেছেন, শিল্প যুগের আগে এ ধরনের তাপপ্রবাহের ঘটনা হতো খুবই বিরল। বিজ্ঞানীরা বড় ধরনের একটি দুঃসংবাদ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, এন্টার্কটিকায় খুব বড় আকারের একটি হিমবাহ বা আইসবার্গ প্রায় ভেঙে পড়ছে। এ যাবতকালের সর্ববৃহৎটি আইসবার্গের একটি এই হিমবাহ। এর আয়তন পাঁচ হাজার বর্গ কিলোমিটার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি খসে পড়ছে লারসেন সি নামক বরফের এক বিশাল শেল্ফ থেকে। বলা হচ্ছে, গত ডিসেম্বরে হঠাৎ করেই সেখানে বড় ধরনের একটি ফাটলের সৃষ্টি হয়। এখন কুড়ি কিলোমিটারের মতো জমাট বরফ ওই হিমবাহটিকে ছিটকে পড়া থেকে ধরে রেখেছে। প্রখ্যাত এক সমুদ্র বিজ্ঞানী ড. স্টিফেন রিনটোল বলছেন, যদিও এটি প্রাকৃতিক ঘটনা, তারপরেও জলবায়ু পরিবর্তনে এই ঘটনার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কিছু কারণ আছে। ‘এন্টার্কটিকার কিনার ঘেঁষে ভাসমান বরফের এসব শেল্ফ এক ধরনের কর্কের মতো কাজ করে যা এন্টার্কটিক মহাদেশের বরফ ধরে রেখেছে। বরফের এসব শেল্ফ যদি না থাকত তাহলে আরও অনেক বরফ এই মহাদেশ থেকে ভেসে চলে যেত। সেগুলো গলে তার পানি গিয়ে পড়ত সমুদ্রে। তখন সেখানে পানির উচ্চতা বেড়ে যেত,’ বলেন তিনি। তিনি জানান, বরফেরে শেল্ফ থেকে এভাবে বরফ খণ্ড খসে গিয়ে হিমবাহ তৈরি হওয়ার ঘটনা খুবই প্রাকৃতিক একটি বিষয়। কিন্তু এর ফলে বড় রকমের একটি প্রভাব পড়তে পারে জলবায়ুর পরিবর্তনের ওপরেও। অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলে এবং একইসাথে সমুদ্রে এসব বরফের নিচেও তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যেতে পারে। আর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে বরফের শেল্ফগুলো আরও পাতলা হয়ে গেলে আগামীতে আবারও ভেঙে পড়তে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই হিমশৈলটি ছুটে গেলে বরফের পুরো শেল্ফটিই বড় রকমের হুমকির মুখে পড়তে পারে। সূত্র : বিবিসি
×