ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবাধ চুক্তি বাতিল, পরিবেশ রক্ষা ব্যবস্থা হ্রাস ও সাইবার প্রতিরক্ষা টিম গঠন

ট্রাম্পের সম্ভাব্য এক শ’ দিনের কর্মসূচী

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

ট্রাম্পের সম্ভাব্য এক শ’ দিনের কর্মসূচী

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১শ’ দিনে আমরা কী প্রত্যাশা করতে পারি? প্রশাসনের এ সময়টিতে ট্রাম্প চান যুক্তরাষ্ট্রকে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির বাইরে নিয়ে আসতে, পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যবস্থা হ্রাস করতে এবং একটি সাইবার প্রতিরক্ষা টিম গঠন করতে। তিনি ওবামার স্বাস্থ্য নীতি বাতিলের এবং তার বিশ্ব সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত এমন একজনকে বিচারপতি হিসেবে সুপ্রীম কোর্টে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টাও করতে পারেন। খবর ইন্ডিপেন্ডেন্ট অনলাইনের। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ওভাল অফিসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম ১শ’ দিনে কি কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সে বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন আগেই। তার বহুল কথিত মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ কাজ প্রথম তিন মাসে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তিনি যে কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সেসব বিষয়ে বেশ কিছুসংখ্যক মানবাধিকার কর্মী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে এর মধ্যেই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে যে, ট্রাম্প কষ্টার্জিত বেশ কিছু অর্জন নস্যাত করবেন। ক্যাথলিক ফর চয়েসয়ের প্রেসিডেন্ট জন ও’বাইয়েন ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, আমার মনে হয়, উগ্র ডানপন্থী কেউ কেউ বলছেন, গর্ভপাত অধিকার ও প্রজনন অধিকারের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই ট্রাম্পের এবং তাই, তাদের জন্য তা সুখকর হবে না খুব একটা। তিনি বলেন, আমি আশা করি, চরম দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারী মাইক পেন্সের মতো কোন ব্যক্তির ওপর ট্রাম্প এ দায়িত্ব দেবেন না। ১শ’ দিনের কার্যকালÑ এ বিষয়টি প্রথম ব্যবহার করা হয় প্রেসিডেন্ট ফ্রাংলিন ডি রুজভেল্টের সময়। তিনি এ সময়কে মেয়াদের নতুন সময়কালের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করেন। যদিও অন্য প্রেসিডেন্টরা এ উদাহরণ অনুসরণে ব্যর্থ হন প্রায়। প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কিউবার পিগস উপসাগরে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হয়। ট্রাম্প গত নবেম্বরে এক ভিডিও ভাষণে তার অগ্রাধিকারভিত্তিক পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার লক্ষ্য, প্রথম গুরুত্ব পাবে আমেরিকা। তার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিটি) আলোচনা থেকে প্রত্যাহার, আমেরিকান জ্বালানি উৎপাদনের বিষয়ে কর্মসংস্থান হ্রাসকারী বাধানিষেধ বাতিল এবং উচ্চ বেতনের লাখ লাখ পদ সৃষ্টি করা। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিজ্ঞান বাতিল করে দেন। ট্রাম্প সামরিক বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বেসরকারী খাতের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি সাইবার পর্যালোচনা টিম গঠনের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। অভিবাসন বিষয়ে তার পরিকল্পনা হচ্ছে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করবেন এবং সন্ত্রাসকবলিত বহু অঞ্চল থেকে অভিবাসন স্থগিত করবেন। তিনি তার ভিডিও ভাষণে এ কথাও বলেছিলেন, যে ভিসা কর্মসূচীতে আমেরিকান শ্রমিকরা বাদ পড়ে, সে কর্মসূচীর সকল অনিয়ম নিয়ে তিনি তদন্ত করবেন। তিনি অনেক অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কাজেরই উল্লেখ করেছিলেন। সে ভাষণে অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ওবামার অনেক নির্বাহী নির্দেশ বাতিল করে দেবেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ল্যারি স্যাকাটো বলেছেন, এ সকল নির্দেশ তিনি তার কলমের খোঁচায়ই বাতিল করে দিতে পারবেন। এরপর তিনি চাইবেন তার পছন্দমতো দ্রুত সুপ্রীমকোর্টের বিচারককে মনোনয়ন দিতে। পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে এক নতুন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চান। তা হবে তার রিপাবলিকান সহকর্মীদের মধ্যে বেশ বিতর্কিত। কিন্তু নিউইয়র্কের এ ধনকুবের ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি পররাষ্ট্র নীতি ঢেলে সাজাতে প্রস্তুত। নির্বাচনে মস্কোর সাইবার হস্তক্ষেপের অভিযোগে বারাক ওবামার ৩৫ রুশ কূটনীতিবিদকে বহিষ্কারের নির্দেশ তিনি পাল্টে দেবেন কিনা সেদিকে তাকিয়ে আছে লোকজন।
×