ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্মিথ-বাবরের রেকর্ড

স্মিথের শতকে ৭ উইকেটে বিধ্বস্ত পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

স্মিথের শতকে ৭ উইকেটে বিধ্বস্ত পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পার্থের মাঠটি সফলতম ছিল পাকিস্তানের জন্য। এ মাঠে আগের ৬ ওয়ানডের মধ্যে ৪টিতেই জিতেছিল তারা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে জিততে পারল না তারা। বিধ্বস্ত হলো ৭ উইকেটে। শারজিল খান ও বাবর আজমের জোড়া অর্ধশতকে বেশ ভাল একটি সংগ্রহই পেয়েছিল পাকিস্তান দল। ৭ উইকটে ২৬৩ রান তুলেছিল। কিন্তু তাড়া করতে নামার পর এই সংগ্রহকে মামুলি একটা লক্ষ্যে পরিণত করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের হার না মানা শতক আর পিটার হ্যান্ডসকম্বের হাফসেঞ্চুরিতে ৪৫ ওভারে ৩ উইকেটে ২৬৫ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় অসিরা। ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকল তারা। ম্যাচে হারলেও ব্যক্তিগত এক বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বাবর। ৮৪ রানের ইনিংস খেলার পথে মাত্র ২১ ইনিংসে ১০০০ রান পূর্ণ করেছেন। ওয়ানডের ইতিহাসে দ্রুততম এক হাজার রানে তিনি রেকর্ড স্পর্শ করেছেন ভিভ রিচার্ডস, কেভিন পিটারসেন, জোনাথন ট্রট ও কুইন্টন ডি কককে। টস হারটা শুরু ভাল হতে দেয়নি পাকিস্তানের। আগের ম্যাচটা ৬ উইকেটে জিতে ওয়ানডে সিরিজে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস দিয়েছিল তারা। আর পার্থে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডটা তাদের জন্য দারুণ পয়া। স্বাগতিক অসিরাই এখানে পরাজয়ের পাল্লাতে ভারি পাকদের বিরুদ্ধে। কিন্তু টস হেরে ব্যাট করতে নেমেই মোহাম্মদ হাফিজের উইকেট হারায় তারা। মাত্র ৪ রান করে ফিরে যান হাফিজ, তবে ওপেনার শারজিল ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। দলীয় রান তখন হয়ে গেছে ৩৬। শারজিলের মারকুটে ইনিংসের জন্য বাবরের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটও দীর্ঘ হয়নি। ৪৯ রানের জুটি ভেঙ্গে যায় শারজিল ৪৭ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ রান করে বিদায় নেয়ার পর। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি ছিল তার। আসাদ শফিক এসে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি, ট্রাভিস হেডের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছে ৫ রান করেই। তবে দারুণ খেলছিলেন বাবর। এ তরুণ ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ অর্ধশতক হাঁকান। এদিন মাত্র ৪২ রান প্রয়োজন ছিল তার দ্রুততম ২ হাজার রানের বিশ্বরেকর্ড ছোঁয়ার জন্য। সেটা পেরিয়ে যান তিনি। ২১ ওয়ানডে ইনিংসে ১ হাজার রানের রেকর্ড আছে ভিভ, কক, পিটারসেন ও ট্রটের। তাদের পাশে নাম লেখালেন বাবর। আরেকজন সঙ্গী হারিয়েছেন এরপরই। চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রানের জুটি ভেঙ্গে গেছে শোয়েব মালিক ৩৯ রান করে বিদায় নেয়ার কারণে। তবে পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের আরেকটি দারুণ জুটি হয় বাবর-আকমলের। আর এতে করেই ভাল একটি সংগ্রহ পাওয়ার ভিত হয়ে যায়। কিন্তু বাবর ১০০ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ এবং আকমল ৩৯ রান করে ফিরে যাওয়ার পর রানের গতিটা কমে যায়। অসি বোলাররা চেপে ধরেন পাক ব্যাটসম্যানদের। সে কারণে শেষ ১০ ওভারে মাত্র ৫০ রান আসে ৩ উইকেট হারিয়ে। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ২৬৩ রান তোলে পাকিস্তান। এটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের পঞ্চম সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংস। জশ হ্যাজলউড ৩টি ও হেড ২টি উইকেট নেন। জবাব দিতে ডেভিড ওয়ার্নারের মেজাজি ব্যাটিংয়ে ভালভাবেই শুরু করেছিল অসিরা। তবে উসমান খাজা ছিলেন ধীরস্থির। দলীয় ৪৪ রানের সময় ওয়ার্নার (৩৮ বলে ৩৫) ও পরের ওভারে খাজা (৯) সাজঘরে ফিরলে অস্ট্রেলিয়া চাপে পড়ে। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে পাক বোলিং বিভাগকে তুলোধুনো করেন স্মিথ ও হ্যান্ডসকম্ব। টেস্ট ক্রিকেটে দুর্দান্ত নৈপুণ্যের সুবাদে এদিনই অভিষেক হয় হ্যান্ডসকম্বের। দু’জনই অর্ধশতক হাঁকান। মাত্র ৮৪ বলে ৬ চারে ৮২ রান করা হ্যান্ডসকম্ব ফিরে গেলে ভেঙ্গে যায় ১৮৩ রানের বিশাল জুটি। কিন্তু ততোক্ষণে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে ম্যাচ। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে হেডকে সাথে নিয়ে ৫ ওভার বাকি থাকতেই ২৬৫ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে অসিরা। ৭৯ ইনিংসে ৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে এটাই দ্রুততম। ৮০ ইনিংস লেগেছিল মাইকেল বেভানের। ১০৪ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ। স্কোর ॥ পাকিস্তান ইনিংস- ২৬৩/৭; ৫০ ওভার (বাবর ৮৪, শারজিল ৫০, মালিক ৩৯, আকমল ৩৯; হ্যাজলউড ৩/৩২, হেড ২/৬৫)। অস্ট্রেলিয়া ইনিংস- ২৬৫/৩; ৪৫ ওভার (স্মিথ ১০৮*, হ্যান্ডসকম্ব ৮২, ওয়ার্নার ৩৫, হেড ২৩*; আমির ১/৩৬, জুনাইদ ১/৫৮)। ফল ॥ অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)। সিরিজ ॥ ৫ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে।
×