ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওসির গাফিলতি ॥ কারণ দর্শানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

ওসির গাফিলতি ॥ কারণ দর্শানোর নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ আদালতের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেয়ায় পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ধার্য তারিখে অফিসার ইনচার্জকে সশরীরে উপস্থিত থেকে কারণ দর্শাতে হবে। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরগঙ্গা গ্রামের গৃহবধূ রেশমা বেগমের আত্মহত্যার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় আদালত এ ব্যবস্থা নিয়েছে। মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা গ্রামের ফারুক হাওলাদারের স্ত্রী নিলুফা বেগম গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করেছেন, তার মেয়ে রেশমা বেগমকে ৮ বছর বয়সে একই গ্রামে তার দাদি মরিয়ম বেগমের বাড়িতে রেখে তারা স্বামী-স্ত্রী আয় রোজগারের উদ্দেশে ঢাকা যান। রেশমা বেগমকে তার দাদি স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করে দেন। ধীরে ধীরে মেয়ে রেশমা বেগম বড় হলে একই এলাকার সোবাহান আকনের ছেলে এনামুল হকসহ বখাটে ছেলেদের কুনজর পড়ে। বখাটেরা স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই রেশমাকে উত্ত্যক্ত করত এবং বিয়ের প্রস্তাব দিত। এক পর্যায়ে ঘটনার দুই বছর আগে মিথ্যে প্রলোভন দিয়ে রেশমা বেগমকে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে এনামুল হক বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে এনামুল হক যৌতুকের দাবিতে রেশমা বেগমের ওপর অত্যাচার শুরু করে। এরই মধ্যে রেশমা বেগম চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মারধরের কারণে রেশমা বেগমের গর্ভপাত হয়। ফলে রেশমা বেগম শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে অত্যাচার আরও বাড়ে। অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে রেশমা বেগম গত বছরের ১০ নবেম্বর দুপুরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নিলুফা বেগম গত ১৬ নবেম্বর মেয়ের স্বামী মোঃ এনামুল হক ও শ্বশুর শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী উম্মে আসমা আঁখি জানান, আদালতের বিচারক রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত রিপোর্টসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন। কিন্তু ধার্য তিনটি তারিখ পার হলেও অফিসার ইনচার্জ কোন ব্যবস্থা নেননি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ধার্য তারিখে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে বিচারক আগামী ৩১ জানুয়ারি অফিসার ইনচার্জকে উপস্থিত থেকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
×