শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষক, হাইমচর কলেজ, হাইমচর-চাঁদপুর।
মোবাইল: ০১৭৯৪৭৭৭৫৩৫
(প্রথম অধ্যায় : সৃজনশীল প্রশ্ন)
৪। ইভা ও হাসি তাদের বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে গল্প করছিল।তারা জানে, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শারীরিক শিক্ষার একটি কর্মসূচি। দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতাও শারীরিক শিক্ষার একটি কর্মসূচি। এই কর্মসূচিগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক) লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি?
খ) শারীরিক শিক্ষার নীতিসমূহ কি কি?।
গ) উদ্দীপকে আলোচিত ক্রীড়া সূচীগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ কর।
ঘ) শেষোক্ত ক্রীড়া সূচিটি খেলোয়াড়দের সার্বিক উৎকর্ষ সাধনে কীভাবে সাহায্য করেÑবিশ্লেষণ কর।
ক) উত্তর ঃ লক্ষ্য হলো চুড়ান্ত গন্তব্যস্থল আর উদ্দেশ্য হলো সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর সংক্ষিপ্ত ও নির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহ।
খ) উত্তর ঃ নীতি গড়ে ওঠে বাস্তব তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং নীতি ব্যবহৃত হয় কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। নীতির গ্রহণ ও যোগ্যতা পরীক্ষিত হয় তার প্রয়োগ এবং কার্যকারিতার উপর। উৎসের প্রকৃতি অনুসারে শারীরিক শিক্ষার নীতিসমূহকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন,(১) জীব বৈজ্ঞানিক নীতি (২) মনোবৈজ্ঞানিক নীতি (৩) সমাজ বৈজ্ঞানিক নীতি (৪) জীব বলবিদ্যার নীতি এবং (৫) দার্শনিক নীতি।
গ) উত্তর ঃ উদ্দীপকে আলোচিত ক্রীড়া সূচীগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করা হলোঃ
১।একটি অন্তঃক্রীড়াসূচি এবং অপরটি আন্তঃক্রীড়াসূচি।
২। নিজেদের মধ্যে যে খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা হয় তাকে অন্তঃক্রীড়াসূচি বা ইন্ট্রমুরাল স্পোর্টস বলে। অপরদিকে যে সমস্ত খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা এক স্কুলের সাথে অন্য স্কুল,এক কলেজের সাথে অন্য কলেজ, এবং এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হয় তাকে আন্তঃক্রীড়াসূচি বা এক্সট্রামুরাল স্পোর্টস বলে।
৩। অন্তঃক্রীড়াসূচি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের চারি দেয়ালের মধ্যে অপরদিকে আন্তঃক্রীড়াসূচি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের চারি দেয়ালের বাইরে।
৪।একটি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং অপরটি পরিচালিত হয় অপর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে।
৫।অন্তঃক্রীড়াসূচী সকলের জন্য কিন্তু আন্তঃক্রীড়াসূচি বাছাইকরা খেলোয়াড়দের জন্য।
৬। অন্তঃক্রীড়াসূচির উদাহরণ-বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, নবম বনাম দশম শ্রেণির মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা অথবা ক শাখার সাথে এক হাউজের সাথে অন্য হাউজের প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। আন্তঃক্রীড়া সূচির উদাহরণ-
আন্তঃস্কুল,আন্তঃকলেজ,আন্তঃবিশ্ববিদ্যাল, আন্তঃক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
ঘ) উত্তর ঃ যে সমস্ত খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা এক স্কুলের সাথে অন্য স্কুল, এক কলেজের সাথে অন্য কলেজ, এবং এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হয় তাকে আন্তঃক্রীড়াসূচি বা এক্সট্রামুরাল স্পোর্টস বলে। এ সমস্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা যাচাই এবং সার্বিক উৎকর্ষ সাধন সম্ভব হয়। আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন যোগ্যতা সম্পন্ন ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে। ফলে ভালো খেলোয়াড়দের সহচার্যে এসে তাদের আচার-ব্যবহার, উন্নতমানের কৌশল, অভ্যাস প্রভৃতি হতে অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। প্রতিদ্বন্ধিতার মনোভাব বাড়ায়, দলগত উৎকর্ষ এবং সমঝোতা বৃদ্ধি করে। প্রতিযোগিতার মনোভাব ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পায়। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মধ্যে উদারতা এবং দেশপ্রেম বৃদ্ধি পায়। খেলোয়াড়দের দায়িত্ব ও কর্তব্য বৃদ্ধি পায়। অন্যের মতামতের প্রতি গুরুত্ব, সহনশীলতা, ধৈর্য়্য এবং গনতান্ত্রিক মনোভাব বৃদ্ধি পায়। আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোতিার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। এখানে প্রত্যেক খেলোয়াড় প্রত্যেক খেলোয়াড়রের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করে। এতে খেলোয়াড়দের নৈতিক বিকাশ ঘটে। ফলে দলীয় সমঝোতার বিকাশ সাধিত হয়।
(দ্বিতীয় অধ্যায়: সৃজনশীল প্রশ্ন)
১। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নবম শ্রেণির ছাত্র আবির ও আরিফ দুই বন্ধু কাবাডি ও বাস্কেটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে । আবির কাবাডিতে ভালো করলেও হাতের শক্তি কম থাকায় বাস্কেট বল খেলায় ভালো করতে পারেনি। অন্যদিকে আরিফ কাবাডি ও বাস্কেটবল উভয় খেলাতেই ভালো নৈপূণ্য প্রদর্শণ করেছে।
ক) শক্তি কি?
খ) বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলে ও মেয়েদের শারীরিক কার্যক্রম আলাদা কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ) আবির কীভাবে বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে পারবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ) আবিরের শক্তি বাড়লেই কি সে আরিফের মতো বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে পারবে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ঃ ক) কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শারীরিক শিক্ষায় শক্তি বলতে হাতের মাংসপেশির উন্নতির মাধ্যমে হাতের শক্তি বৃদ্ধি করাকে বুঝায়।
উত্তর ঃ খ) শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রম সকল বয়সের লোকদের জন্য প্রজোয্য। তবে বয়স এবং লিঙ্গভেদে শারীরিক শিক্ষার কার্যক্রম নির্ধারণ করতে হয়। বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলে মেয়েদের শারীরিক গঠনের ক্ষেত্রেও পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের ফলে আচরণে সংকোচ ও লজ্জাভাব দেখা যায়। ছেলেরা সাহসিকতা ও ঝুঁকিপূর্ল কাজ করতে দ্বিধা করে না। বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলে ও মেয়েদের শারীরিক শক্তি ও সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রেও পার্থক্য থাকায় বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলে ও মেয়েদের শারীরিক কার্যক্রমও আলাদা করতে হয়।
উত্তর ঃ গ) যারা বাস্কেটবল খেলায় ভালো করে তাদের দম, ক্ষিপ্রতা ও পায়ের শক্তি বেশি থাকতে হয়। ভালো উদ্দীপকের আবিরকে বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে হলে খেলার কৌশলের পাশাপাশি দম, ক্ষিপ্রতা ও পায়ের শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপর জোর দিতে হবে। অধিক অনুশীলনে ভালো খেলা। তাই ভালো খেলতে হলে নিয়মমাফিক অনুশীলনের বিকল্প নেই। নিয়মমাফিক অনুশীলনের পাশাপাশি খেলার নিয়ম ও আইনকানুন ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে।আবিরকে প্রতিদিন খেলার জন্য ২৫০০শক্তি (কিলোক্যালরি) খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে তার এই চাহিদা পূরণ হতে পারে। যারা ভালো বাস্কেটবল খেলে তাদের খেলা দেখতে এবং খেলা দেখে তাদের কৌশল আয়ত্ব করতে হবে। বাস্কেটবল খেলার জন্য শারীরিক যে যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রয়োজন,নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলনের মাধ্যমে তা অর্জন করতে পারলেই বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে পারবে।
উত্তর ঃ ঘ) খেলার পূর্ব শর্ত হচ্ছে ঢ়যুংরপধষ ভরঃহবংং (শারীরিক যোগ্যতা)। যার ভরঃহবংং যত ভালো খেলাধুলায় তার পারদর্শিতাও ততো ভালো। উদ্দীপকের আলোকে বলা যায় আবিরের হাতের শক্তির জোর বাড়লেই সে আরিফের মতো বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে পারবে।
ভালো বাস্কেটবল খেলার জন্য দম,ক্ষিপ্রতা ও পায়ের শক্তি বেশি থাকতে হয়।সেই সাথে প্রয়োজন বাস্কেটবল খেলার কলাকৌশলের দক্ষতা অর্জন। উদ্দীপকের আবির ও আরিফ দু’জনেই বাস্কেটবল খেলে কিন্তু আবিরের হাতের শক্তি কম থাকার কারণে,সে বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে পারেনা। আবিরকে বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে হলে আরিফের মতো হাতের শক্তি বাড়াতে হবে। বাস্কেটবল খেলার জন্য অন্যান্য অঙ্গের যে পরিমান সক্ষমতা প্রয়োজন তার সবকিছুই আরিফের আছে শুধুমাত্র হাতের শক্তির কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আবিরের হাতের শক্তি কম থাকায় সে কৌশলগত দিক থেকেও পিছিয়ে আছে। তাই আবিরকে বাস্কেটবল খেলায় ভালো করতে হলে হাতের শক্তি বাড়ানো পাশাপাশি বলধরা,বলপাস করা, ড্রিবলিং,শূটিং ও লেআপ শট ইত্যাদি বিষয়েও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: