‘যৌবন ফিরে পেতে চান। করে ফেলুন রক্তবদল’। যুবার রক্ত ঢোকান বৃদ্ধের শরীরে, তবেই ফিরে পাবেন যৌবন! শুনতে পৌরাণিক কোন জাদুর কাহিনীর মতো মনে হলেও বাস্তবে এ ঘটনাই ঘটছে। তাও আবার খোদ মার্কিন মুলকে।
অদ্ভুত এই রক্তবদল প্রক্রিয়ার নাম ‘এমব্রোসিয়া’। এই পদ্ধতিতে তরুণ কোন রক্তদাতা বা বিক্রেতার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে বৃদ্ধের শরীরে প্রবেশ করানো হয়। আর রক্তদান থেকে শুরু করে রক্তগ্রহণ পুরো প্রক্রিয়াটিতেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার সবকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ক্লিনিকে এমব্রোসিয়া পদ্ধতিতে রক্তবদলের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব ক্লিনিকে আট হাজার ডলারের বিনিময়ে এই রক্তবদল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। ‘এমব্রোসিয়া’ নামে রক্তবদলের এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবক হোসে কারমাজিন নামে এক চিকিৎসক। সম্প্রতি এমআইটি টেকনোলজি ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, তার দীর্ঘ বছরের সাধনার ফল এই প্রক্রিয়া।
হোসে কারমাজিন ২০১৩ সালে একটি চিকিৎসা সাময়িকীতে এই এমব্রোসিয়া পদ্ধতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে মানুষের দেহের যৌবনপ্রাপ্তির জন্য রক্তের জিডিএফ১১ নামে একটি প্রোটিন কোষকে দায়ী করা হয়।
প্রতিবেদনে প্যারাবায়োসিস নামে একটি পদ্ধতির কথা বলা হয়, যাতে রক্তবদলের মাধ্যমে বৃদ্ধে রক্তে তরুণ রক্তরস পরিবাহিত হয়। এতে ওই রক্তের উপাদানগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়। কারমাজিন জানান, কেবল ওই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই এ চিকিৎসাপদ্ধতি চালু হয়নি। এরপর দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে এই তত্ত্ব নিয়ে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষকরা দীর্ঘ গবেষণা করেছেন এ নিয়ে। অবশেষে ২০১৫ সালে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ এমব্রোসিয়া চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনুমোদন দেয়।
হোসে কারমাজিন বলেন, কেবল যে যৌবন ফিরে পেতেই এ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, তা কিন্তু নয়। আলঝেইমারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে এ চিকিৎসাপদ্ধতি সহায়ক। তবে মার্কিন মুলুকে এই চিকিৎসা পদ্ধতির বিরোধিতাও করেছেন অনেকে। তারপরও দিন দিন এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে বয়সীদের আগ্রহ বেড়েই চলছে। বিজনেস ইনসাইডার অবলম্বনে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: