ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

৪৭ কিমি বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন স্থাপন প্রকল্প চূড়ান্ত

আরও এক ধাপ এগোল পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৯ জানুয়ারি ২০১৭

আরও এক ধাপ এগোল পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া

আনোয়ার রোজেন ॥ পটুয়াখালীর পায়রায় প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত সরবরাহে ৪৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৬ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী হতে ৪৭ কিলোমিটার দূরত্বে পায়রা পর্যন্ত ২৩০ কেভি ডাবল সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা প্রাথমিকভাবে ১৩২ কেভিতে চার্জ করা হবে। এর ফলে পায়রা বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের জ্বালানি শক্তি সম্পদের স্বল্পতা রয়েছে। খুলনা, পটুয়াখালী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে সহজ কয়লা পরিবহনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার আমদানিকৃত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এলাকায় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড একটি ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এই বিদ্যুতকেন্দ্রের বিদ্যুত ইভাকুয়েশনের বিষয়ে ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ বিদ্যুতকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০১৯ সালের এপ্রিলে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ইউনিট অপারেশনে আসার ৩০ দিন আগে ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে এবং এর ১৮০ দিন আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের মধ্যে স্টার্ট-আপ পাওয়ার সরবরাহ করতে হবে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যথাসময়ে স্টার্ট-আপ পাওয়ার সরবরাহের জন্য পিজিসিবি প্রায় ৩৩৬ কোটি প্রাক্কলিত ব্যয় সম্বলিত ‘পটুয়াখালী-পায়রা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৪৭ কিলোমিটার পটুয়াখালী-পায়রা ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, পায়রা ১৩২ কেভি এআইএস সুইচইয়ার্ড নির্মাণ এবং ২টি বিদ্যমান পটুয়াখালী ১৩২-৩৩ কেভি উপকেন্দ্র এবং ১৩২ কেভি বে-সম্প্রসারণ ইত্যাদি। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য মোস্তফা কামাল উদ্দিন পরিকল্পনা কমিশনে মতামত দিতে গিয়ে বলেন, পটুয়াখালী-পায়রা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সঞ্চালনের জন্য সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ, সুইচইয়ার্ড নির্মাণ ও বে-সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিদ্যুত সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জানা গেছে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়া, ধানখালী এবং লোন্দা মৌজায় ৯১৮ দশমিক ১৪ একর জমির ওপর বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণের কাজ করছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। ৯১৮ একর জমির মধ্যে ২৫ দশমিক ৭৯ একর বসতভিটা এবং বাকি ৮৯২ দশমিক ৩৫ একর মৌসুমী চাষযোগ্য নাল জমি।
×