‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।’ শুধু শিশুর পিতাই নয় শিশুর অন্তরে ঘুমিয়ে আছে গোটা জাতি। আগামী দিনে দেশ-জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে জাতি তাকিয়ে আছে দেশের কোমলমতি শিশুর অন্তরে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। সেই ভবিষ্যত কেমন হবে তা নির্ভর করে আমার শিশুকে কিভাবে গড়ে তুলছি তার ওপরে। যদি শিশুর পরিচালনা হয় নৈতিকার পথে তাহলে আগামী দিনে আমাদের ভবিষ্যত হবে কল্যাণময়। নৈতিকতার উল্টো হলে ফলটাও উল্টো হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে আমরা কেমন চাই আমার দেশ-জাতির ভবিষ্যত? ‘কণ্টকযুক্ত বৃক্ষ থেকে তুমি আঙ্গুর ফল আশা করতে পার না’ আরবি ভাষায় একটা প্রবাদ আছে। তাহলে আমরা কি কণ্টকগাছ রোপণ করে আঙ্গুর ফলের আশা করছি? আমাদের আশা চোরাবালিতে পড়ে বসে আছে তাহলে। উন্নত ভবিষ্যত গড়তে হলে আমাদের আগে খুঁজে বের করতে হবে উন্নতির অন্তরায়সমূহকে। অন্তরায় বা বাধাসমূহ থেকে উত্তরণ হয়ে আমাদের উন্নতির পথকে সুগম করতে হবে।
পারিবারিকভাবে আমাদের সন্তানদের ওপর যে দায়িত্ব পালন করা দরকার আমরা সে দায়িত্ব সম্পর্কে চরম অবহেলা প্রদর্শন করছি। সন্তান বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়তি কিছু পরিচর্যা করার প্রয়োজন হয় আমরা তা ভুলে গেছি। বস্তুগত সুবিধার আশায় আমরা আমাদের পারিবারিক শিক্ষার স্তরটাকে নষ্ট করে দিয়েছি। ফলে শিশু ছোট থেকে যে নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করে থাকে তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে দেশীয় সুস্থ ধারার সংস্কৃতি বিলুপ্তপ্রায়। সে স্থান দখল করেছে ভিনদেশী সংস্কৃতি। যার অধিকাংশ বিকৃতি মন-মানসিকতার সৃজন করছে। গ্রুপিং করে মারামারি, আধিপত্য বিস্তার, মাদক সেবন, ধর্ষণ, হত্যা যা আমাদের দেশে গত পাঁচ বছর আগেও ছিল না। প্রযুক্তি আমাদের জীবন মানকে যতটা সহজ করেছে অসুস্থ হাতের ছোঁয়ায় আমাদের করেছে ততটাই বিপদসঙ্কুল। প্রযুক্তিগত যে অপরাধগুলো রয়েছে তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিশোর অপরাধের আরেকটা বড় মাধ্যম হচ্ছে মাদক। মাদক আর সন্ত্রাস একে অন্যের সম্পূরক।
কিশোর সন্ত্রাস বৃদ্ধি ও নৈতিকতার অবক্ষয় ঠেকাতে হলে পরিবারকে এখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা আনায়ন করতে হবে। সরকারকে কিশোর সন্ত্রাসের উৎপত্তির স্থলগুলোর ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: