ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চ্যালেঞ্জের মুখে তারকারা!

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

চ্যালেঞ্জের মুখে তারকারা!

আরও একটি বছরের শুরু। সোমবার পর্দা উঠে গেছে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেরও। তবে নতুন বছরের শুরুতে জ্বলে উঠতে পারেননি টেনিসের তারকাদের কেউই। ব্রিসবেন, অকল্যান্ড, হপম্যান কিংবা সিডনি ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্ট-সর্বত্রই হতাশ করেছেন ফেবারিট খেলোয়াড়রা। সেরেনা উইলিয়ামস থেকে শুরু করে বর্তমান টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকা এ্যাঞ্জেলিক কারবার, এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা, ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, সিমোনা হ্যালেপ, ইউজেনি বাউচার্ড কিংবা ভেনাস উইলিয়ামস সবাই হতাশ করেছেন ভক্ত-অনুরাগীদের। শুধু মহিলা এককেই নয় পুরুষ এককেও ছিল এমন চিত্রনাট্য! নোভাক জোকোভিচ আর এ্যান্ডি মারে ছাড়া রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদালও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। টেনিস বিশ্বে আলোচিত নামগুলোর মধ্যে ইউজেনি বাউচার্ড অন্যতম। বিশেষ করে ২০১৪ সালে টেনিস কোর্টে যে ক’জন নিজেকে মেলে ধরেছেন, তাদের একজন বাউচার্ড। সেবার কানাডার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালসহ মৌসুমের প্রথম দুই গ্র্যান্ডসøামেরও সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। কিন্তু পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা আর ধরে রাখতে পারেননি বাউচার্ড। ২০১৬ সালটা তার এতটাই বাজে কেটেছে যে কোন গ্র্যান্ডসøামের তৃতীয় রাউন্ডের বাধাই পেরুতে পারেননি কানাডিয়ান তারকা। তারপরও হাল ছাড়েননি। নতুন বছরে নতুন করে শুরুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন বাউচার্ড। কিন্তু নিজের প্রথম ম্যাচেই হার দেখেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেলবি রজার্সের কাছে হেরে সিডনি ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের প্রতম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিলেন ২২ বছরের এই তারকা। গত বছর হঠাৎ করে পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসেন পুয়ের্তো রিকোর মনিকা পুইগও। রিও অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতে গোটা টেনিস বিশ্বকেই অবাক করে দেন তিনি। যেখানে হারিয়ে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জার্মানির এ্যাঞ্জেলিক কারবারকে। এর পরের সময়টা অবশ্য নিষ্প্রভ কেটেছে তার। নতুন বছরের প্রথম ম্যাচে লজ্জাজনক পরাজয় পেলেন তিনিও। ব্রিসবেনের প্রথম রাউন্ডে তাকে হারের লজ্জা দেন এলিনা ভিতলিনা। গত বছরের শুরুটা দারুণ করেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হারলেও উইম্বল্ডন জিতে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান সেরেনা। কিন্তু শেষটা ছিল হতাশার। তবে বছরের শেষ মুহূর্তে এসে হঠাৎ করেই বাগদানের ঘোষণা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি। বাগদানের পর অকল্যান্ড ক্লাসিক দিয়েই নতুন মৌসুম শুরু করেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। প্রথম ম্যাচেই জয় পেয়েছিলেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। কিন্তু টুর্নামেন্টের খুব বেশি দূর এগুতে পারেননি বর্তমানে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নাম্বারে থাকা এই তারকা। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই হেরে অকল্যান্ড ক্লাসিক থেকে লজ্জাজনকভাবে বিদায় নেন সেরেনা উইলিয়ামস। স্বদেশী মেডিসন ব্রেঞ্জেলের কাছে হার মানেন সেরেনা। টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭২ নাম্বারে থাকা মেডিসন ব্রেঞ্জেল কঠিন লড়াইয়ে হারান ৩৫ বছর বয়সী সেরেনা উইলিয়ামসকে। গত মৌসুমে উইম্বলডন জিতে ওপেনযুগে সর্বোচ্চ ২২ গ্র্যান্ডসøামজয়ী জার্মান কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফের রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি। আমেরিকান তারকার সামনে এবার স্টেফিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি। ইনজুরির কারণে দীর্ঘ চার মাস কোর্টের বাইরে থাকার পর প্রথম টুর্নামেন্টে খুব ভাল করতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে দারুণ আশাবাদী তিনি। তাই মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট শুরুর সপ্তাহ খানিক আগেই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে সেখানে পৌঁছে যান সেরেনা। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বাগদানের ঘোষণাও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কোন ধরনের প্রভাব ফেলবে না তার। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেরেনা উইলিয়ামস বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলে এসেছি যে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শেষ না হওয়ার আগে তা (বাগদান) নিয়ে কিছুই ভাবছি না। কারণ আমার কাছে গ্র্যান্ডসøাম মানে অনেক কিছু। নিজের ক্যারিয়ারে পূর্ণ মনোযোগ দিতে প্রয়োজনে স্বার্থপরও হতে পারি। আবারও আমার পথে আমি, বলতে পারেন ইতোমধ্যেই ফিরে এসেছি। তাই এখন আনন্দে গা ভাসাতে চাই না। আমি সত্যিই অনুশীলন, কার্ডিও মোটকথা নিজেকে কোর্টে ঢেলে দেয়ার জন্য সবধরনের চেষ্টাই করেছি।’ বয়সে পঁয়ত্রিশকেও ছাড়িয়ে গেছেন সেরেনা উইলিয়ামস। টেনিস কোর্টে এখনও প্রতিপক্ষের হুমকি। এবার তার সামনে নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি। একটি মাত্র গ্র্যান্ডসøাম জিতলেই ওপেনযুগে এককভাবে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডসøাম জয়ের রেকর্ড গড়বেন তিনি। সেই লক্ষ্যেই ছুটছেন এখন কৃঞ্চকলি। সেরেনার মতো বছরের প্রথম ডব্লিউটিএ টুর্নামেন্টে ভক্ত-অনুরাগীদের হতাশ করেছেন বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসও। বাহুতে ইনজুরির কারণে যে টুর্নামেন্ট থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাতটি গ্র্যান্ডসøামজয়ী ভেনাস উইলিয়ামস নাম প্রত্যাহার করে নিলেও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কিন্তু জয় দিয়েই শুরু করেছেন। তবে জয়টা সহজে আসেনি তার। মেলবোর্ন পার্কে ১০৫তম আসরের পর্দা ওঠেছে এবার। কিন্তু এই ইভেন্টে একবারও শিরোপার স্বাদ পাননি সাতবারের মেজর শিরোপাজয়ী ভেনাস। ২০০৩ সালে একবারই ফাইনাল খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের। সময়ের পরিক্রমায় এখন আর ফেভারিটদের তালিকায় নেই ৩৬ বছর বয়সী মার্কিন টেনিস তারকা। তবে শুরুটা জয় দিয়ে করতে পেরেই সন্তুষ্ট তিনি। ইউক্রেনের তরুণী ক্যাটেরিনা কোজলোভার বিপক্ষে ঘাম ঝরানো জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাসই ফেলেন ভেনাস। সেরেনা, ভেনাসের পর অকল্যান্ড ক্লাসিকের চতুর্থ দিনে ছিটকে যান ক্যারোলিন ওজনিয়াকিও। জার্মানির জুলিয়া জর্জেসের কাছে হেরে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে পড়েন তিনি। বছরের প্রথম টুর্নামেন্টে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি এক নাম্বার তারকা কারবারও। ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেন তিনি। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকাকে হারিয়ে শুরুতেই চমকে দেন এলিনা ভিতলিনা। তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জয় দিয়েই শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু প্রথম রাউন্ডেই ঘাম ঝড়েছে তার। তাও আবার অখ্যাত খেলোয়াড় লেসিয়া সুরেঙ্কোর বিপক্ষে। তবে লড়াই করে জিতেও সন্তুষ্ট কারবার।
×