ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া : আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইংরেজি ভাষার ব্যবহার;###;এম এ হামিদ খান

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ॥ ইংরেজি প্রথমপত্র

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ॥ ইংরেজি প্রথমপত্র

সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, ধনবাড়ী কলেজ, টাঙ্গাইল। প্রধান পরীক্ষক : মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। গড়নরষব: ০১৭১২৯৬৭৪৫০ ঊ-সধরষ: ঢ়ৎড়ভ.স.যশযধহ@মসধরষ.পড়স সুপ্রিয় পাঠক, আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা সবাইকে। আধুনিক বিশ্বে বিশ্বায়ন বহুল আলোচিত একটি বিষয়। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক সাহায্য সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যয় নিয়ে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া শুরু হলেও দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ধনী রাষ্ট্রগুলো এর সিংহভাগ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। অবাধ নীতির কারণে পুঁজিবাদের প্রসার যে ভাবে ঘটছে তাতে বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো এর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার ঘটছে। বলা যায় বিশ্বায়ন বর্তমানে সুদৃঢ় প্রযুক্তিগত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যের বৈদ্যুতিক স্থানান্তর বর্তমানে তাৎক্ষণিক ও পরস্পর সংযুক্ত তথ্য জগত সৃষ্টি করছে যা ২৪ ঘণ্টাব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগাযোগে পরিণত হয়েছে। এ প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করছে ব্যাংকিং এবং অর্থনৈতিক কার্যাবলী। এর সুফল কিছুটা দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো পেলেও এর প্রকৃত সুবিধা ভোগ করছে উন্নত রাষ্ট্রগুলো। কারণ এখানেও উন্নত রাষ্ট্রগুলো মূল নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করছে। উন্নত রাষ্ট্রগুলো দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তির উপাদান বিক্রি করে পুঁজির প্রসার ঘটাচ্ছে। আর দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো উন্নত রাষ্ট্রের সঙ্গে তালমিলাতে বা আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে গিয়ে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। পড়তে বাধ্য হচ্ছে। প্রয়োজনের তাগিদে হোক আর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হোক দরিদ্র বা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে ধনী রাষ্ট্রগুলোর শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে। তা না হলে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিতই থেকে যাবে। বিশ্বব্যাপী অর্থ প্রেরণ এবং ব্যবসায়ী লেনদেন কম্পিউটারের মাউসে চাপের ব্যাপার মাত্র। প্রতি ছয় ডলারের পাঁচ ডলারই যা বিশ্ব অর্থনীতিতে সঞ্চায়ন করে বা বৈদ্যুতিক মাধ্যমে ভ্রমণ করে থাকে। সফটওয়্যার ও টিভি প্রোগ্রামের মতো কতকগুলো পণ্য সহজেই প্রেরিত হয় ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমেই। ইলেকট্রনিক পর্দার মাধ্যমে আমরা এখন পণ্যের বেচাকেনা করতে পারি। আর এভাবেই কম্পিউটার আজকের বিশ্বে পরিবর্তন এনেছে। তাই বলা যায় বিশ্বায়ন আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ওপর পুরোপুরি নির্ভর। উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির কারণে বিশ্বায়নের দ্রুত প্রকাশ ঘটছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির কারণেই বিশ্বের যে কোন স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে আমরা অবগত হতে পারি। বিশ্বায়নের অন্যতম মূল শক্তি তথ্যপ্রযুক্তির কারণেই আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও চিত্তবিনোদনের সুবিধাও ভোগ করতে পারি। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খেলাধুলাসহ সকল বিনোদনের সুবিধা পেয়ে থাকি। তাছাড়া সরাসরি বিশ্বের প্রতিটি দেশের মধ্যে পরিচিত এবং ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়। আর এভাবেই বিশ্বায়ন পারস্পরিক সহযোগিতার চেতনা সৃষ্টি করে। সরাসরি অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিতির প্রসার ঘটে। আর এভাবে মানুষের পূর্ব সংস্কার পরিবর্তন করে এবং দৃষ্টি প্রসারিত করে। বিশ্বায়ন বলতে আজকে মূলত তাই বুঝায় যা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সম্ভব করে তুলেছে। বিশ্বায়নের সুফল পেতে এবং এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য স্পষ্টতই দরকার হয় একটি কমন ভাষা। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে যে ভাষা সম্মান এবং ঐতিহ্য অর্জন করেছে তাহল ইংরেজি ভাষা। বিশ্ব যোগাযোগ তথা বিশ্বায়নের প্রয়োজনে ইংরেজি ভাষা জাতীয় সীমানা অতিক্রম করেছে। বিশ্বের যে সব লোক অন্য ভাষায় কথা বলে তাদের কাছে পৌঁছেছে। ইংরেজি শুধু ব্রিটিশ বা আমেরিকান লোকদের ভাষা নয় বরং এটি সমস্ত পৃথিবীর মানুষের ভাষা। বস্তুত ইংরেজি দ্বিভাষিক ও বহু জাতিক ব্যবহারকারীরা সংখ্যায় এক ভাষিক ইংরেজদের অনেক দূর ছাড়িয়ে গেছে। এ দিকটা ইংরেজি ভাষাকে পৃথিবীব্যাপী এক বিস্ময়কর বৈচিত্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মোট কথা বিশ্ব ইংরেজি এখন সম্পূর্ণভাবে মূল ইংরেজি ভাষা-ভাষীদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আর এটা হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে বিশ্বায়নের ফলে। আধুনিক প্রযুক্তির সুবাধে বলতে পারি বিশ্বায়ন বিশ্বের মানুষকে সমানভাবে সুবিধা দিয়ে কাছের মানুষ করতে পারেনি। অর্থাৎ রেললাইন সমান্তরালভাবে বয়ে চলছে। আর রেল গাড়িতে রয়েছে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রী। অর্থাৎ ধনী দরিদ্র্যের বৈষম্য। বিশ্বায়নের প্রকৃত সুফল পেতে হলে ধনী রাষ্ট্রগুলোকে পুঁজিবাদের নেশা কমিয়ে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর দিকে পেশাগত নজরদারি নয়- মানব সেবার দু’হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। একা শ্রেষ্ঠতম হবার মানসিকতা পরিহার করে সবাইকে নিয়ে শ্রেষ্ঠ হতে হবে। এজন্য ধনী রাষ্ট্রগুলোকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। বিশ্বায়নের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা পেতে ধনী রাষ্ট্রকে দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সঙ্গে নিঃস্বার্থে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। বিশ্বায়নের সুফল যাতে সবাই সমানভাবে ভোগ করতে পারে সে দিকে সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। তবেই বিশ্বের সকল মানুষ বিশ্বায়নের মাধ্যমে সুখ ও সমৃদ্ধির সুফল পাবে।
×