ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসি পরীক্ষা-২০১৭

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

এসএসসি পরীক্ষা-২০১৭

প্রভাষক হিসাব বিজ্ঞান হলিফ্লাওয়ার মডেল কলেজ ঝিগাতলা, ঢাকা। B‡gBj- [email protected] পর্ব -১ প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা রইল। এসএসসি পরীক্ষা ২০১৭ সালের রুটিন অনুসারে ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা। ইতোমধ্যে তোমরা নিশ্চয়ই পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ। শেষ দিকের প্রস্তুতিতে আরেকটু মাত্রা যোগ করার জন্য আমার এই প্রচেষ্টা। ধারাবাহিকভাবে তিনটি পর্বে সংক্ষিপ্তাকারে পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো আলোচনা করা হবে। শুরুতে তোমাদের জন্য মান বণ্টন প্রদান করা হলো- সৃজনশীল প্রশ্ন : -১১টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে, ৭টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। (১০দ্ধ৭ = ৭০) বহুনির্বাচনী প্রশ্ন : - ৩০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে। (৩০দ্ধ১ = ৩০) সব কয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। পরীক্ষায় মোট তিন ঘণ্টা সময় বরাদ্দ থাকবে। এই তিন ঘণ্টা সময় কিভাবে ব্যবহার করবে তা পূর্ব থেকেই ঠিক করে রাখবে। তোমরা নিম্নোক্তভাবে তিন ঘণ্টা ভাগ করে নিতে পার : ৩ ঘণ্টা বা ১৮০ মিনিট। প্রথম ৩০ মিনিট সময় পাবে গ.ঈ.ছ অংশের জন্য। বাকি থাকবে ১৫০ মিনিট। ৭টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরের জন্য সময় বরাদ্দ করবে (৭দ্ধ১৯) বা ১৩৩ মিনিট। আর বাকি যে ১৭ মিনিট থাকবে তার মধ্যে ১০ মিনিট রাখবে জরারংরড়হ করার জন্য। ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লাগবে অতিরিক্ত উত্তরপত্র নেয়া, হলে দায়িত্বরত শিক্ষক কর্তৃক উত্তরপত্র স্বাক্ষর করানো, উপস্থিতি শিটে তোমার স্বাক্ষর করা, উত্তরপত্র সেলাই করা ইত্যাদি কাজ করার জন্য। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যেহেতু ১১টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে, তাই ধরে নেয়া যায় প্রতি অধ্যায় হতে প্রশ্ন থাকবে। এই ক্ষেত্রে তোমরা আর্থিক বিবরণীসহ মোট ৮টি অধ্যায়ের উপর ভাল করে চর্চা করবে। তবে ‘নগদান বই’ অধ্যায় বাদ দিতে পার। কারণ এই অধ্যায়ের অঙ্ক উত্তর করতে সময় বেশি লাগবে। সৃজনশীল অংশ উত্তর করার পূর্বে ভাল করে প্রশ্নপত্র পড়ে কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দেবে তা ঠিক করে নেবে। তারপর যে অঙ্কটি তোমার কাছে সবচেয়ে সহজ মনে হবে সেটি সর্বপ্রথম উত্তর করবে। শতভাগ আত্মবিশ্বাস না থাকলে শুরুতে ১ ও ২নং প্রশ্নের উত্তর করার দরকার নেই। যখন যে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়া শুরু করবে সেই প্রশ্নের উত্তর পুরোপুরি শেষ না করে অন্য প্রশ্নে যাবে না। অর্থাৎ যে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়া শুরু“করবে, সেই সৃজনশীল প্রশ্নের (ক,খ,গ) পুরোপুরি শেষ করে অন্য সৃজনশীলে যাবে। গ.ঈ.ছ অংশের জন্য সম্পূর্ণ বইয়ের উপর দক্ষতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে মূল বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো মনযোগ দিয়ে পড়বে। অঙ্ক ভিত্তিক গ.ঈ.ছ প্রশ্নের উত্তর করার সময় সতর্ক থাকবে যেন সূত্র বা ফর্মুলা প্রয়োগে ভুল না হয়। পরীক্ষায় অবশ্যই প্রত্যেকটি গ.ঈ.ছ প্রশ্নের উত্তর ভরাট করে আসবে। সৃজনশীল অংশের জন্য তোমরা নিম্নের অধ্যায়গুলো চর্চা করতে পার- ১.আর্থিক বিবরণী (বাধ্যতামুলক অংশ। ২টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে, দুইটির-ই উত্তর দিতে হবে)। ২. লেনদেন (একটি বা দুইটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে ) ৩. দু-তরফা দাখিলা পদ্ধতি (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে) ৪. উৎপাদন ব্যয় বিবরণী (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে) ৫. জাবেদা (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে) ৬. খতিয়ান (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে, তবে জাবেদা ও খতিয়ান মিলিয়েও একটি প্রশ্ন হতে পারে) ৭. রেওয়ামিল (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে) ৮. পারিবারিক ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক হিসাব (একটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে) শিক্ষার্থী বন্ধুরা এখন তোমাদের জন্য অধ্যায়গুলোর মূল বিষয়বস্তু সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো- আর্থিক বিবরণী এই অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য তোমাকে অবশ্যই প্রত্যক্ষ আয় ও ব্যয়, পরিচালন আয়, পরিচালন ব্যয়, অপরিচালন আয়, অপরিচালন ব্যয়, স্থায়ী সম্পদ, চলতি সম্পদ, দীর্ঘমেয়াদী দায়, চলতি দায়, মালিকানাস্বত্ব নির্ণয় ইত্যাদি বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। তোমাদের বইতে প্রদত্ত ফর্মুলাটি ভাল করে জানা থাকতে হবে। তোমাদের সুবিধার্থে কিছু বিষয় নিচে দেয়া হলো- প্রত্যক্ষ আয় : যে আয় সরাসরি পণ্য বিক্রয় বা সেবা প্রদানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেমন বিক্রয়, সেবা আয়। প্রত্যক্ষ ব্যয় : বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোন পণ্য বা সেবা উৎপাদন করতে বা ক্রয় করতে যে ব্যয় হয়। যেমন-ক্রয়, বহন খরচ, কুলি খরচ ইত্যাদি। পরিচালন আয় : ব্যবসায়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালন করতে গিয়ে যে সকল আয় সংগঠিত হয় । যেমন- বাটাপ্রাপ্তি, কমিশন প্রাপ্তি। পরিচালন ব্যয় : ব্যবসায়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত যে সকল ব্যয় সংগঠিত হয় । যেমন- বেতন প্রদান, ভাড়া প্রদান, বিজ্ঞাপন হিসাব। অপরিচালন আয় : ব্যবসায়র দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালন থেকে নয় বরং অন্য কোন বৈধ উৎস হতে যে সকল আয় সংগঠিত হয়। যেমন- বিনিয়োগের সুদ, শিক্ষানবিশ সেলামি। অপরিচালন ব্যয় : ব্যবসায়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালন হতে যে সকল ব্যয় সংগঠিত হয় না। যেমন- ঋণের সুদ, শিক্ষানবিশ ভাতা। এই অধ্যায় হতে ‘ক’ এর জন্য নীট ক্রয়, নীট বিক্রয়, নীট দেনাদার, নীট পাওনাদার, চলতি সম্পদ, চলতি দায় , বকেয়া বেতন, অগ্রিম মজুরি ইত্যাদি নির্ণয় করতে বলা থাকতে পারে। ‘খ’ এর জন্য বিক্রিত পণ্যের ব্যয় নির্ণয়, মোট মুনাফা বা ক্ষতি নির্ণয় , মোট লাভ *** টাকা ধরে নীট মুনাফা বা ক্ষতি নির্ণয় করতে বলা থাকতে পারে। ‘গ’ এর জন্য নীট মুনাফা বা ক্ষতি নির্ণয়, মালিকানাস্বত্ব বিবরণী, আর্থিক অবস্থার বিবরণী প্রস্তুত, মোট দায় বা মোট সম্পদ নির্ণয়, মোট লাভ অনুপাত, নীট লাভ অনুপাত, চলতি অনুপাত, তারল্য অনুপাত ইত্যাদি নির্ণয় করতে বলা থাকতে পারে। লেনদেন লেনদেন হতে চালান, ক্যাশমেমো, ভাউচার, ডেবিট নোট, ক্রেডিট নোট ইত্যাদি বিষয়গুলোর শিখে রাখবে। পরীক্ষায় একটি বা দুইটি আসতে পারে। হিসাব সমীকরণ (অ=খ+ঙঊ) এর উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। প্রতিটি ঘটনা হতে ২টি পক্ষ চিহ্নিত করে পক্ষগুলো সম্পদ না দায়, আয় না ব্যয় তা ঠিক করে নেবে। তাহলে সহজেই হিসাব সমীকরণ মিলাতে পারবে। এই অধ্যায় হতে ‘ক’ এর জন্য ‘কোন ঘটনাগুলো লেনদেন নয়’ তার পরিমাণ নির্ণয়,‘মোট বিক্রয়ের পরিমাণ’ নির্ণয়, ‘সেবা খাতে আয়ের পরিমাণ’ নির্ণয়, ‘কোন লেনদেন কাঠামোগত পরিবর্তন এনেছে’ তার পরিমাণ নির্ণয়, ইত্যাদি বিষয়গুলো থাকতে পারে। ‘খ’ ও ‘গ’ এর জন্য চালান, ক্যাশমেমো তৈরি, লেনদেন চিহ্নিত করে কারন ব্যাখ্যা/সমীকরণ পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা, লেনদেনসমূহের উপর হিসাব সমীকরণের প্রভাব, লেনদেনসমূহের উপর হিসাব সমীকরণের উপাদানের প্রভাব, প্রমাণ কর যে অ=খ+ঙঊ ইত্যাদি বিষয়গুলো থাকতে পারে। চলবে...
×