ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজীবপুর ডিগ্রী কলেজ

ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি ॥ প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি ॥ প্রতিবাদে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ রাজীবপুর ডিগ্রী কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী (বিএ, বিএসএস, বিএসসি ও বিকম) ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিগ্রী পর্যায়ে ফরম পূরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফি সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতি ৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এই অতিরিক্ত ফি’র প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বেরিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা শহর প্রদিক্ষণ করে। পরে কলেজের গবর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগে জানা গেছে, বিএ, বিএসএস, বিএসসি ও বি কম কোর্সে ফরম পূরণে আড়াই গুণ বেশি হারে টাকা আদায় করা হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা আছে, ডিগ্রী ফরম পূরণে দুই হাজার টাকার বেশি কোন প্রতিষ্ঠানই নিতে পারবে না। সেখানে ওই কলেজে জনপ্রতি ৫ হাজার করে আদায় করা হচ্ছে। এর এক টাকাও কম নিচ্ছে না। মাসুদ রানা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা যারা শিক্ষার্থী রয়েছি তাদের মধ্যে বেশির ভাগই দরিদ্র ঘরের সন্তান। এক সঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে ফরম পূরণে কঠিন হয়ে পড়েছে। অধ্যক্ষ স্যারকে অনেক অনুরোধ করলাম যে কিছু টাকা কমানোর জন্য কিন্তু তিনি এক টাকাও কম নেবেন না। এ অবস্থায় আমরা ফরম পূরণ নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছি।’ একই অভিযোগ করেন বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরা। আশরাফুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ফরম পূরণে তো টাকা বেশি নেয়ই, তার ওপর স্যারদের কাছে প্রাইভেট পড়া লাগে। প্রাইভেট না পড়লে ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয় স্যাররা।’ অধ্যক্ষ ইউনুস আলী জানান ‘ফরম পূরণের ফি’র সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মাসিক বকেয়া বেতন রয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারও কারও সাড়ে ৫ হাজার টাকা দাঁড়িয়েছে। আমরা গবর্নিং বডির সদস্যরা বসে ফরম পূরণে নির্দিষ্ট একটা ফি নির্ধারণ করেছি সেটা হলো জনপ্রতি সাড়ে ৩ হাজার টাকা। কিছু সুবিধাবাদী ছাত্র নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে ওই বিক্ষোভ মিছিল করিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন অভিযোগ নেই।’ কলেজের গবর্নিং বডির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন বলেন, ‘ফরম পূরণে ফি নির্ধারণের জন্য কোন সভা হয়নি। অধ্যক্ষ এককভাবে ওই ফি নির্ধারণ করেছেন। তা পরিশোধ করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে কঠিন। আমি অধ্যক্ষকে বলেছি ফি কমানোর জন্য।’ চট্টগ্রামে অতিরিক্ত ফি আদায় স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, চট্টগ্রামে সরকারের ভর্তি নীতিমালা না মেনে অতিরিক্ত ফি আদায় করলেও কোন পদক্ষেপ নেই শিক্ষার নামে ব্যবসা কেন্দ্র খুলে বসাদের বিরুদ্ধে। নামকাওয়াস্তে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে মঙ্গলবার স্কুল প্রধানদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বৈঠকে অতিরিক্ত ফি আদায় না করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এমনকি যারা ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ফি আদায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের অবৈধ আয়ের উৎস বন্ধে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা। অভিযোগ রয়েছে, গত বছরও এমন আয়োজন হয়েছিল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ওই বৈঠকে অসাধুদের বিরুদ্ধে এমপিও বাতিলের ঘোষণাও দেয়া হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে জেলা প্রশাসনের ঘোষণা ভেস্তে গেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান আবারও ভর্তির নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এমন বৈঠককে আইওয়াশ বলে মন্তব্য করেছেন অভিভাবকরা।
×