ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শীতজনিত রোগে চুয়াডাঙ্গায় ২ জনের মৃত্যু

তীব্র থেকে মাঝারিতে রূপ নিয়েছে শৈত্যপ্রবাহ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭

তীব্র থেকে মাঝারিতে রূপ নিয়েছে শৈত্যপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় রবিবার তীব্র থেকে মাঝারিতে রূপ নিয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। শনিবারের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু বয়ে যায় ঠা-া বাতাস। ঢাকার তাপমাত্রা তেমন বাড়েনি। গ্রামাঞ্চলে বিরাজ করে ঘন কুয়াশা। আর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাস অব্যাহত থাকে। এসব কারণেই কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। রবিবার শীতজনিত রোগে চুয়াডাঙ্গায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসে শীতের তীব্রতা খুব বেশি হ্রাস পাওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঘ মাসে শীত অনুভূত হওয়াটাই স্বাভাবিক। এটি শীতের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট। তাপমাত্রা বাড়লেও এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা দরকার যে, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্য কমছে। আর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য যতই কমবে, শীতের মাত্রাও ততই বাড়বে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশা এখনও রয়ে গেছে। কুয়াশার কারণে জলীয়বাষ্প উপরে উঠতে পারছে না। ভূপৃষ্ঠের উপরে ভাগ শুকানোর সুযোগ পাচ্ছে না। এসব কারণে শীত অনুভূত হবেই। রবিবার রাজধানীসহ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার বেশ উন্নতি হয়েছে। এ দিন রাজধানীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩.৪ ডিগ্রী সে. ও ১২ ডিগ্রী সে.। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ২৬.৩ ডিগ্রী সে. ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ৬.৫ ডিগ্রী সে. রেকর্ড হয়। রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা টাঙ্গাইলে ৯ ডিগ্রী সে., মাদারীপুরে ৮.৬ ডিগ্রী সে., গোপালগঞ্জে ৭.৫ ডিগ্রী সে., রাজশাহীতে ৭.৪ ডিগ্রী সে., ঈশ্বরদীতে ৮ ডিগ্রী সে., রংপুরে ৮.৫ ডিগ্রী সে., দিনাজপুরে ৭.৭ ডিগ্রী সে., সৈয়দপুরে ৭.৯ ডিগ্রী সে., দিমলায় ৭.২ ডিগ্রী সে., রাজারহাটে ৬.৬ ডিগ্রী সে., তেঁতুলিয়ায় ৬.৭ ডিগ্রী সে., সাতক্ষীরায় ৭.৬ ডিগ্রী সে., যশোরে ৭.৪ ডিগ্রী সে., চুয়াডাঙ্গায় ৬.৬ ডিগ্রী সে., বরিশালে ৮.৫ ডিগ্রী সে. ও ভোলায় ৮.৫ ডিগ্রী সে. রেকর্ড হয়। এছাড়া আরও দশটি সেন্টারের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়। নিজস্ব সংবাদদাদা, চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, কনকনে শীতে এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শীতজনিত রোগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একদিকে ঠা-া বাতাস, অন্যদিকে কুয়াশার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না লোকজন। বেড়ে গেছে শীতবস্ত্রের দাম। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসনালীর প্রদাহ ও সর্দি-জ্বরসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। শিশু ওয়ার্ডে ১৫টি শয্যার বিপরীতে প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। শনিবার জীবননগরের গঙ্গাদাসপুর গ্রামের ইসলামউদ্দিন কবিরাজ (৬৫) ও উথলীর নজরুল ইসলাম (৬৪) শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা থেকে জানান, শৈত্যপ্রবাহে জেলাবাসীর জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হচ্ছে ব্যাহত। শ্রমিকরা কাজে নামতে পারছে না। শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, তীব্র শীতের কারছে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। দিনের মেলায় সূর্যের মুখ দেখা গেলেও শীতের তীব্রতা কমেনি। বইছে ঠা-া বাতাস। শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর থেকে জানান, কনকনে শীতে মানুষের কষ্টের সীমা নাই। বিশেষ করে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। শীতবস্ত্র বিতরণে রয়েছে অপ্রতুলতা। প্রতিদিন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শতাধিক মানুষ। রবিবার সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।
×