ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব

উম্মাহর শান্তি ও ঐক্য কামনা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭

উম্মাহর শান্তি ও ঐক্য কামনা

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু ও নূরুল ইসলাম, টঙ্গীর বিশ^ এজতেমা ময়দান থেকে ॥ তুরাগ নদের তীরে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কণ্ঠে আমিন আল্লাহুমা আমিন ধ্বনিতে মুখরিত আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রবিবার শেষ হলো এবারের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব। মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মুক্তি এবং দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার তৌফিক কামনা করা হয়। জীবনের সব পাপ-তাপ থেকে মুক্তির জন্য, পরম দয়াময় আল্লাহর দরবারে অনুনয়-বিনয় করে পানাহ্ ভিক্ষা করছিলেন মুসল্লিরা। ক্ষমা লাভের আশায় লাখো মানুষের সঙ্গে একত্রে হাত তুলতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন তাঁরা ভোর থেকেই। বহু মানুষের অংশগ্রহণে ইহলোকের মঙ্গল, পরলোকের ক্ষমা, দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও বিশ্বশান্তি কামনা করা হয় তবলীগ জামাতের ৫২তম বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে। এর আগে হেদায়েতী বয়ান করা হয়। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় পর্বের এজতেমা শুরু হবে আগামী ২০ জানুয়ারি। চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিশ্ব তবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি ভারতের মাওলানা সা’দ আহমেদ ছোট ছোট বাক্যে আরবি ও উর্দু ভাষায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। তিনি বেলা ১১টা ১ মিনিটে মোনাজাত শুরু করেন এবং তা চলে ৩৫ মিনিট, অর্থাৎ বেলা ১১টা ৩৬ মিনিট পর্যন্ত। মোনাজাতের শুরু থেকেই পুরো এলাকায় নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। খানিক পর পর শুধু ভেসে আসে আমিন, ছুম্মা আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন। অনুতপ্ত মানুষের কান্নার আওয়াজে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। জীবনের সব পাপ-তাপ থেকে মুক্তির জন্য, পরম দয়াময় আল্লাহর দরবারে অনুনয়-বিনয় করে পানাহ ভিক্ষা করছিলেন তাঁরা। ক্ষমা লাভের আশায় লাখো মানুষের সঙ্গে একত্রে হাত তুলতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন তাঁরা ভোর থেকেই। বহু মানুষের অংশগ্রহণে ইহলোকের মঙ্গল, পরলোকের ক্ষমা, দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও বিশ্বশান্তি কামনার মধ্য দিয়ে তবলীগ জামাতের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে রবিবার। এবারের প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ অংশ নিয়েছেন বলে সংশিষ্ট সূত্রের ধারণা। অন্যদিকে, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রবিবার ভোর রাত থেকেই টঙ্গীর এজতেমা অভিমুখে শুরু হয় মানুষের ঢল। টঙ্গীর পথে শনিবার মধ্যরাত থেকেই এজতেমা ময়দানগামী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মোটর গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মোনাজাতে অংশ নিতে চার দিক থেকে লাখ লাখ মুসল্লি হেঁটেই এজতেমাস্থলে পৌঁছেন। মোনাজাতের আগেই এজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হলে মুসল্লিরা মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলি-গলিতে অবস্থান নেন। এজতেমাস্থলে পৌঁছতে না পেরে কয়েক লাখ মানুষ কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মোনাজাতের জন্য পুরনো খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন সিট বিছিয়ে বসে পড়েন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী বাসা-বাড়ি-কলকারখানা-অফিস-দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদে নৌকায় মুসল্লিরা অবস্থান নেন। যে দিকেই চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পরা মানুষ আর মানুষ। এজতেমাস্থলের চারপাশের ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। আখেরি মোনাজাতের জন্য রবিবার আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছিল ছুটি। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা না করলেও কর্মকর্তাদের মোনাজাতে অংশ নিতে বাধা ছিল না। নানা বয়সী ও পেশার মানুষ এমনকি মহিলারাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিতে রবিবার সকালেই টঙ্গী এলাকায় পৌঁছেন। শেষ দিনে বয়ানকারী ॥ রবিবার আখেরি মোনাজাতের দিন বাদ ফজর থেকে খাস বয়ান করেন বাংলাদেশ তবলীগের মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা ইউনুস সিকদার। এরপর থেকে মোনাজাতের আগ পর্যন্ত ভারতের মাওলানা সা’দ আহমেদ তবলীগের গুরুত্ব তুলে ধরে মুসল্লিদের উদ্দেশে হেদায়তী বয়ান করেন। এ সময় এজতেমাস্থলে আগতরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সেসব বয়ান শুনেন। হেদায়তী বয়ান ॥ হেদায়তী বয়ানে ভারতের মাওলানা সা’দ বলেন, ইসলামে নামাজের স্থান মানুষের দেহের মাথার মতো। নামাজ হলো আল্লাহর হুকুম। আল্লাহর হুকুম পুরা হলে তার ওয়াদা পূরণ হয়ে যায়। যার দ্বীলে আল্লাহর এক্কিন পয়দা হবে, সে আল্লাহর হুকুমকে অগ্রাধিকার দেবে। নামাজের ফজিলত বান্দা তখনই পাবে, যখন কেউ রাসুল (সা.) এর মতো করে নামাজ পড়ে। ভাল মউত তাদেরই হবে, যারা আল্লাহর হুকুম ও রাসুল (সা.)-এর হুকুম মতো চলে। দ্বীনের ঘরে বসে ইবাদতের চেয়ে বাইরে মেহনত করে ইবাদত বন্দিগী করা অনেক ফজিলত। আল্লাহ তার বান্দাদের দ্বীনের কাজে রাস্তায় বের হতে হুকুম দিয়েছেন। সকলকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার কথা বলেছেন। আর এ দাওয়াতের জন্য তালিম নিতে হবে। মহল্লায় মহল্লায় মসজিদে বসে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে পরামর্শ করতে হবে। এতে শত্রুও বন্ধু হয়ে যেতে পারে। যিনি এখলাছের সঙ্গে দ্বীনের কাজ করবেন তিনিই কামিয়াব হবেন। আল্লাহকে খুশি করার জন্য কাজ করলে জীবনে সফলতা আসে। আল্লাহর কাছে কান্না-কাটি করে নিজের কৃতকর্মের অনুশোচনার মাধ্যমে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। চোখের পানি ফেলে মোনাজাত করতে হবে। মোনাজাত কবুল হলেই আমরা পাপমুক্ত হব। দুনিয়া ও আখেরাতে ফিরে আসবে শান্তি। মোনাজাতে যা বলা হয় ॥ ৩৫ মিনিটব্যাপী মোনাজাতের শুরুতে প্রায় ১০ মিনিট আরবিতে দোয়া-দরুদ পাঠ করা হয়। এজতেমার আখেরি মোনাজাতে সেসব দোয়া উল্লেখ করে আল্লাহতায়ালার দরবারে মানুষের হেদায়েত কামনা করা হয়। দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি, উন্নতি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ প্রার্থনা করা হয়। এরপর বাকি সময় মোনাজাত করা হয় উর্দু ভাষায়। হে আল্লাহ! আমরা নিজেদের প্রতি অনেক অবিচার-অত্যাচার করেছি। হাজারো হুকুম অমান্য করেছি। তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও। তুমি মাফ না করলে আমাদের কোন উপায় নেই, আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। তুমি আমাদের ওপর রহমতের চাদর বিছিয়ে দাও। তুমি আমাদের প্রত্যেকের গোনাহ মাফ করো। ইমানকে মজবুত করে দাও। তোমার প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করে নাও। আমাদের হেদায়েত দাও। আমাদের পিতামাতাদের হেদায়েত করো। সমস্ত বিশ্ববাসীকে হেদায়েত করো। যারা জীবিত আছে তাদের ক্ষমা করো। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরও ক্ষমা করো। ইসলামের জন্য আমাদের কবুল করে নাও। ইসলামের ওপর আমাদের অবস্থানকে দৃঢ় করো, আমাদের ইমান মজবুত করে দাও। সব ধরনের আজাব-গজব ও শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা করো। আমাদের সকল গোনাহ মাফ করে দাও। ভিআইপিদের মোনাজাতে অংশগ্রহণ ॥ বিশ্ব এজতেমার মূল আকর্ষণ হচ্ছে আখেরি মোনাজাত। প্রতিবারের মতো এবারের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের বিভিন্ন সদস্যবর্গ, সাংসদসহ বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ বঙ্গভবনের দরবার হলে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারী বাসভবন গণভবনে পরিবারের সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে টেলিভিশনের সামনে বসে সরাসরি সম্প্রচার দেখে মোনাজাতে অংশ নেন। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় বসে একইভাবে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। এদিকে বিশ্ব এজতেমায় আগত লাখো লাখো মুসল্লির সঙ্গে এজতেমা ময়দানের শহীদ আহসান উল্লাহ স্টেডিয়ামে জেলা পুলিশ প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ। এছাড়াও আখেরি মোনাজাতে বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবর্গ শরিক হন। এছাড়া পদস্থ সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তাসহ দল-মত, শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। গাজীপুর ও টঙ্গীর সকল কারখানায় ছুটি ॥ বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে গাজীপুর ও টঙ্গীর সকল কারখানায় ছুটি ছিল। ফলে এবার এসব কারখানার শ্রমিকদের এজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সমস্যা হয়নি। টেলিভিশন-মুঠোফোন ও ওয়্যারলেস সেটে মোনাজাত ॥ এজতেমা মাঠে না এসেও মোনাজাতের সময় হাত তুলেছেন অসংখ্য মানুষ। টঙ্গীর এজতেমাস্থল থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে কনফারেন্সের মাধ্যমে গত কয়েকবারের মতো এবারও গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদের মাইকে আখেরি মোনাজাত সম্প্রচার করা হয়। এখানে অর্ধ লক্ষাধিক নারী-পুরুষ ঈদগাহ মাঠে এবং পার্শ্ববর্তী সড়কে ও ভবনগুলোতে জড়ো হয়ে মোনাজাতে অংশ নেন। এছাড়াও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় টেলিভিশন, ওয়্যারলেস সেট ও মুঠোফোনের মাধ্যমে মোনাজাত প্রচার করা হয়। এসব স্থানেও পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। আবার টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করার কারণে অনেকে বাসায় বসে মোনাজাতে অংশ নিয়েছে। আবার দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে এজতেমাস্থলে অবস্থানকারীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেও মোনাজাতে শরিক হয়েছেন। এজতেমায় আরও এক মুসল্লির মৃত্যু ॥ বিশ^ এজতেমায় আগত আরও এক মুসল্লি রবিবার ভোরে ইন্তেকাল করেছেন। তার নাম বেদন মিয়া (৬০)। তিনি ঢাকার সবুজবাগ কদমতলী এলাকার মৃত গফুর মিয়ার ছেলে। এ নিয়ে এজতেমার এ পর্বে অংশ নিতে এসে এ পর্যন্ত ৮ মুসল্লি মারা গেছেন। এদের অধিকাংশই বার্ধক্য ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মোনাজাত শেষে যানজট ॥ মোনাজাত শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়া মানুষ একযোগে নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরার চেষ্টা করেন। এতে টঙ্গীর আশপাশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় জনজট ও যানজট। ফলে যানজটের বিড়ম্বনা এড়াতে অনেক মুসল্লি হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। আর হাঁটা মুসল্লিদের চাপে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লিদের যানবাহন রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থাকে এজতেমা মাঠের আশপাশের এলাকায়। মুসল্লিদের জন্য শাট্ল বাস ॥ আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এজতেমা ময়দানে যেতে ও মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য গাজীপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন বুধবার মধ্যরাত হতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং কালীগঞ্জ সড়কের মীরের বাজার হতে কামারপাড়া সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। তবে ওই এলাকায় মুসল্লিদের সুবিধার্থে ময়দানমুখী শাটল বাস চলাচল করেছে। আখেরি মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা এ শাটল বাসে যাতায়াত করে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাহেনুল ইসলাম জানান, গত তিন দিনে জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এজতেমাস্থলের আশপাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, বিশুদ্ধ খাদ্যদ্রব্য আইন, সিটি কর্পোরেশন আইন ও দ-বিধিতে কারণে ৩৬টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় এবং ৩৬টি মামলা করেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন দোকান মালিককে সতর্ক ও অর্ধশতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ করেছেন। প্রথম পর্বে প্রায় তিন হাজার জামাত তৈরি ॥ বিশ্ব এজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, বিভিন্ন দেশে তবলীগের কাজে বের হতে এবার এজতেমা স্থলে প্রথম পর্বে প্রায় ৩ হাজার জামাত তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয় জামাত হয়েছে প্রায় দু’হাজার এবং প্রায় ৮শ’ বিদেশী জামাত হয়েছে। এসব জামাতে কেউ কেউ এক চিল্লা, দু’চিল্লা, তিন চিল্লা, ছয় চিল্লা ও এক বছরের চিল্লা এমনকি আজীবন চিল্লার জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। আগামী ১৫-২০ দিনে মধ্যে এসব জামাত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মোনাজাতে মহিলাদের অংশগ্রহণ ॥ আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার মহিলা মুসল্লিও আগের দিন রাত থেকে এজতেমা ময়দানের আশপাশে, বিভিন্ন মিলকারখানা, বাসাবাড়িতে ও বিভিন্ন দালানের ছাদে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ॥ টঙ্গী হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে হাসপাতাল ও ৪টি ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে গত তিন দিনে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রায় ৮ হাজার জন মুসল্লি চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ জনিত রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে আরও কয়েক হাজার মুসল্লিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে যেসব খিত্তায় জেলার মুসল্লিরা অংশ নিবেন ॥ এবারের দুই পর্বের এজতেমায় অংশ নেয়ার জন্য পুরো এজতেমা ময়দানকে জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বের পর আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বে ১৫ জেলার সঙ্গে ঢাকা জেলার বাকি অংশের মুসল্লিগণ ময়দানের বিশাল চটের প্যান্ডেলের অভ্যন্তরে তৈরি খিত্তায় অংশ নেবেন। এসব জেলার মুসল্লিগণ যেসব খিত্তায় অংশ নেবেন, সেগুলো হলো- ঢাকা জেলা ১ থেকে ৫নং খিত্তায়, মেহেরপুর জেলা ৬নং খিত্তায়, ঢাকা জেলা ৭নং খিত্তায়, বাগেরহাট ৮নং খিত্তায়, রাজবাড়ি ৯নং খিত্তায়, দিনাজপুর ১০নং খিত্তায়, হবিগঞ্জ ১১নং খিত্তায়, মুন্সীগঞ্জ ১২ ও ১৩ নং খিত্তায়, কিশোরগঞ্জ ১৪ ও ১৫ নং খিত্তায়, কক্সবাজার ১৬নং খিত্তায়, নোয়াখালী ১৭ ও ১৮নং খিত্তায়, বাগেরহাট ১৯নং খিত্তায়, চাঁদপুর ২০ নং খিত্তায়, পাবনা ২১ ও ২২ নং খিত্তায়, নওগা ২৩ নং খিত্তায়, কুষ্টিয়া ২৪ নং খিত্তায়, বরগুনা জেলা ২৫নং খিত্তায় এবং বরিশাল জেলা ২৬ নং খিত্তায়।
×