ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চার কারাগারে হত্যা মামলার অভিযোগে ১০ থেকে ১১ বছর ধরে বিনা বিচারে আটক রয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির ৮ সদস্য

জঙ্গী বিচারে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭

জঙ্গী বিচারে ধীরগতি

শংকর কুমার দে ॥ জঙ্গী বিচারেও ধীরগতি। প্রায় এক যুগ ধরে বিচার হচ্ছে না কারাগারে আটক জেএমবির আট জঙ্গীর। জঙ্গীদের বিচারে কালক্ষেপণের নানা কৌশল নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ ও দায়ী করার মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর ধরে জঙ্গীদের বিচারের পথ রুদ্ধ হয়ে আছে। আদালতে শুধু বার বার তারিখ নির্ধারণ করার আইনগত ফাঁক-ফোকরের পথ দিয়ে জঙ্গীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কারাগারে বসেই তারা জঙ্গী তৎপরতা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে বলে তথ্য রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। তদন্তের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের ৪টি কারাগারে হত্যা মামলার অভিযোগে ১০ থেকে ১১ বছর ধরে বিনা বিচারে আটক রয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির ৮ সদস্য। নিষিদ্ধ ঘোষিত ৮ জেএমবি সদস্যের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে মোঃ মাইনুল ইসলাম ওরফে রাঙ্গা (৩৮), শফিকুল্লাহ ওরফে সাদ ওরফে শফিক ওরফে শফিকুল ইসলাম (৩৯), ফরিদপুরের জেলা কারাগারে আমীর হোসেন, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে শহীদুল ইসলাম (৪৬), ইয়াসিন মিয়া (৩২), খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে মোঃ মঞ্জু মিয়া ওরফে মঞ্জু (২৫), মোঃ রুহুল আমিন (৩৫) ও মোঃ রুহুল আমিন ওরফে সুফি (৪৩)। একই সঙ্গে মিয়ানমারের নাগরিক সুলতান আহাম্মদ (৩৬) হত্যা মামলায় ১০ বছর ধরে কক্সবাজার কারাগারে আটক রয়েছে। তিনি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৫৮ বার হাজিরা দিয়েছেন। কিন্তু মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সময়মতো সাক্ষী না আসা, নিরাপত্তার অভাব, সমন জারি না হওয়া, পুলিশের উদাসীনতাই জঙ্গীদের বিচারে ধীরগতির কারণ। এ বিষয়ে একে অপরকে দোষারোপ ও দায়ী করার প্রবণতা বন্ধ করে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে হবে। আদালত থেকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হলে যারা একে অপরকে দায়ী ও দোষারোপ করে চলেছে তার অবসান হতে পারে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জঙ্গীরা বছরের পর বছর ধরে কারাবন্দী থাকার সুবাদে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে জঙ্গী তৎপরতা, ষড়যন্ত্রসহ নানা ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক ও নাশকতা তৎপরতা চালাচ্ছে অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোন বিচার শুরু করা যাচ্ছে না নানা অজুহাতে। এই সমস্ত কারাবন্দীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ গঠন না করার অর্থই হলো, এদের ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থার শামিল। অন্যদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সদস্যরা কোন আইনজীবী নিয়োগ করে না। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কর্তৃক আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। রাষ্ট্রকর্তৃক আইনজীবী নিয়োগ করার পর ঐ মামলার কোন সাক্ষী নিরাপত্তার অভাবে আর আসে না। ফলে বছরের পর বছর বিনা বিচারে এরা কারাগারে বন্দী রয়েছে।
×