ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা আর নয়

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭

নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা আর নয়

নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে উপভোগ করার এবং তাতে অংশগ্রহণের এক ধরনের অদম্য ইচ্ছা এদেশের ভোটারদের মধ্যে দেখা যায়। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনগুলোতেও দেখা যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রেও উৎসবের আমেজ। বেশ হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার। হারজিত যা-ই থাক, সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা আনন্দের আমেজও প্রবাহিত হয়। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে সেই আমেজ কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। নির্বাচন অনেক ক্ষেত্রেই উৎসব হিসেবে আসেনি এ দেশে। যে কারণে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটদানের সুযোগও মেলেনি। প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্র দখলকারীরা আগেই ভোটদান পর্ব সম্পন্ন করে রেখেছে। ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে যেতে হয় এই বাক্য শুনে যে, কষ্ট করে আর ভোট দিতে হবে না। ওটা দেয়া হয়ে গেছে। আবার ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটের আগেই হুমকি-ধমকির শিকার হতে হয়। চোখ রাঙানিতে আতঙ্ক আর শঙ্কা নিয়ে উৎকণ্ঠিত প্রহর কাটাতে হয়। ভোটে তখন জনমতের প্রতিফলন আর ঘটে না। জোর করে ভোটকেন্দ্র দখলের ঘটনা এদেশে বহুবার ঘটেছে। পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক জান্তা শাসক জিয়া-এরশাদ এবং নির্বাচিত বেগম খালেদার শাসনামালে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসপ্রায় করে তোলা হয়েছিল। ভোট নিয়ে যেসব ছিনিমিনি খেলা হয়েছে, নৃশংসতার আশ্রয় নেয়া হয়েছে তাতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ভোটের পূর্বাপর সময়ে ভোটারের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ঘরছাড়া শুধু নয়, দেশছাড়াও হতে হয়েছে। ভোট তখন জীবন বিপন্নকারী এক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছিল। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে বন্দুকের নলের মুখে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে ভোটারদের ভোটদানের প্রয়োজন পড়েনি। ‘মার্শাল ক্যু’ আর ‘মিডিয়া ক্যু’র আড়ালে চাপা পড়ে গেছে ভোটদানের অধিকার। জান্তা শাসকরা ভোটের তোয়াক্কা করেনি। ভোট নামক এক প্রহসনের খেলাই খেলত তারা। কিংবা এরশাদ আমলেও দেখা গেছে, বিজয়ী প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণার পর আবার তাকে পরাজিত ঘোষণার নোংরা খেলা। এই জান্তা শাসকরা নির্বাচন কমিশনকে তাদের পোষ্য হিসেবে ব্যবহার করেছে। যেহেতু তারা সংবিধানে বিশ্বাসী ছিল না এবং ক্ষমতা দখল করে প্রথমেই সংবিধান স্থগিত করেছিল। তারা নির্বাচন কমিশন নামক প্রতিষ্ঠানটিকে বশংবদ বানিয়ে তাকে ইচ্ছামাফিক ব্যবহার করার চর্চাই চালিয়েছে আর বেগম জিয়া ক্ষমতায় বসে নিজেদের অনুগতদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে, প্রতিষ্ঠানটির প্রতি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার ক্ষেত্রটি যেমন ধ্বংস করেছিলেন, তেমনি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু গণরোষের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বেগম জিয়া ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার সরকারের অধীনে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে নয়া সরকার গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীসহ দাগী আসামিদের সংসদ সদস্য বানিয়েছিলেন। সেদিন আওয়ামী লীগসহ প্রায় সব বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করেছিল। সেই নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করে বেগম জিয়া ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন আরও পাঁচ বছর। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। দেশবাসী সেসব ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির ধ্বংসাত্মক পথে ধাবিত হওয়ার ঘটনাসমূহ। সংবিধান ও গণতন্ত্রে যেহেতু বিশ্বাস নেই বিএনপির, থাকার কথাও নয়, সেই বিএনপি কখনই কোন গণতান্ত্রিক আচরণ করেছে, এমনটা তার মিত্ররাও বলে না। সেনাছাউনিতে সামরিক জান্তার ক্রোড়ে ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে রেখে গঠিত হয়েছিল বিএনপি নামক একটি জগাখিচুড়ির রাজনৈতিক দল। স্বাধীনতাবিরোধী, গলাকাটা, গণহত্যাকারীদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া অনুগতদের নিয়ে গঠিত দলটিতে গণতন্ত্রের চর্চার লেশমাত্র নেই আজও। দলপ্রধানের খেয়াল-খুশি আর স্বেচ্ছাচারিতায় ভর করে দলটি নব্বই-পরবর্তী দু’দফায় ক্ষমতায় এসে দেশজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম ও দুর্নীতির বিস্তার ঘটিয়েছিল। হিংসা ও হিংস্রতার নানা নিদর্শন রেখেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্য বানিয়ে, তাদের সরকারে ঠাঁই দিয়ে ও গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে দেশটাকে পাকিস্তান বানানোর মহাপরিকল্পনায় মত্ত হয়েছিল বিএনপি জোট। নির্যাতন ও নাগরিক অধিকার হরণ করে এবং অপারেশন ক্লিনহার্ট চালিয়ে ক্ষমতায় স্থায়ী হয়ে থাকতে চেয়েছিল। এমনকি ঘোষণাও করেছিল যে, ২০৪৫ সালের আগে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সেই ঘোষণা ব্যুমেরাং হয়ে এখন ধ্বনি তোলে যে, বিএনপিও একই সময়ের আগে ক্ষমতায় আসীন হতে পারবে না। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করে বিএনপি নানা আস্ফালন করেছিল সেই তারা এই পদ্ধতি মেনে নিতে বাধ্য হয়। আবার তাদের হাতেই সেই সরকার গঠন নিয়ে যেসব অপকা- ঘটেছে, তাতে ১/১১ সামনে এসে হাজির হয়। সেদিন রাষ্ট্রপতিকে তারা এমনভাবে অপব্যবহারে নেমেছিল যে, স্বয়ং রাষ্ট্রপতি দিকভ্রান্ত হয়ে নিজেই তত্ত্বাবধায়ক প্রধান পদে সমাসীন হয়েছিলেন। কিন্তু বিধি বাম! সেই আসনও গণরোষে টলটলায়মান হয়ে যায়। এরপর ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনরা ক্ষমতাসীন হতে পেরেছে বিএনপির অপকর্মের কারণে। সেদিন যদি সর্বসম্মত একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা হতো, তবে অনির্বাচিত সরকার দু’বছর ক্ষমতায় থাকতে যেমন পারত না, তেমনি ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলাও সামনে আসত না আর খালেদার পুত্রদ্বয়কে দুর্নীতির অভিযোগে জেলখাটা এবং মুচলেকা দিয়ে দেশান্তরী হতে হতো না। খালেদার ক্ষমতালিপ্সায় সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলেই জনগণ আর ওইপথে যেতে চায় না। কিন্তু অগণতান্ত্রিক ও সংবিধানবহির্ভূত এই ব্যবস্থাকে খালেদা আবারও ফিরিয়ে আনার জন্য অনড় থাকার পেছনে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।’ গণতন্ত্রের যাতে স্বাভাবিক বিকাশ হতে না পারে, উন্নয়নের মহাযাত্রায় দেশ আরও সমৃদ্ধ হতে না পারে এবং স্বাধীনসত্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে টিকে থাকতে না পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াত জোট হেন কাজ নেই যা করছে না। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতকে দিয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালানোর মতো বর্বর কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করেও বিএনপি ফায়দা তুলতে পারেনি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পূর্বাপর সময়ে এবং ২০১৫ সালে হরতাল, অবরোধের নামে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে নেমেছিল। পেট্রোলবোমা মেরে জীবন্ত বাসযাত্রী হত্যার মতো নারকীয় কাজে দল দু’টি এমনভাবে জড়িয়ে পড়ে যে, বেগম জিয়া টানা ৯২ দিন দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করে দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের কাজে নেমেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী নির্বাচিত সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা জঙ্গীবাদকেও মদদ দিয়ে আসছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে বিএনপির আপ্রাণ প্রচেষ্টা তাদের জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনেনি বরং দলটি জামায়াতের ক্রীড়নকে পরিণত হয়। এখন তাই বিএনপিকে নিজের রাজনীতি পরিত্যাগ করে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতে হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল না হওয়ায় বিএনপির উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। জামায়াতকে রাজনীতির মূলধারায় আবার নিয়ে আসার জন্য তাই রাষ্ট্রপতির কাছে যে ১৩ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে তাতে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় হতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার উল্লেখ করেছে। এতে বিএনপির হাতে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দল ফ্রিডম পার্টি, প্রগশ ইত্যাদিও যাতে অংশ নিতে পারে, সে জন্য এই চাল চেলেছে। নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের কথা তারা বলে না, সংবিধানে থাকার পরও। এমনকি নিজেরা ক্ষমতায় থাকার সময়ও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ইসি গঠনের আইন প্রণীত হলে বিএনপির জন্য ক্ষমতায় আসার আর কোন পথ খোলা থাকে না। এটা বাস্তবিক যে, গণতন্ত্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর নির্বাচন। তবে গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশের জন্য শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠানই যথেষ্ট নয়। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে হলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনেরও প্রয়োজন রয়েছে। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদও তাই মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমে শৃঙ্খলাবিধান দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতির এই বিশ্বাসকে রাজনৈতিক দল যদি ধারণ করতে না পারে, তবে গণতন্ত্রের জন্য তা বিপজ্জনক বৈকি। বিএনপি নামক দলটির বর্তমান অবস্থানের বিপরীতে যথার্থই গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থার প্রতি তাদের আগ্রহ খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং হিংসার রাজনীতির বিকাশে দলটি আগাগোড়াই দেশের স্বাধীনতা, সংবিধান, সংসদ এবং জনগণের বিপরীতেই অবস্থান নিয়ে আছে। আর বিএনপি নেত্রী পুরনো ধারার রাজনীতিকে ধারণ করে এখনও দেশবিক্রির গল্প ফেঁদে যাচ্ছেন। ধর্মের জিকিরও তোলেন মাঝে মধ্যেই জামায়াতীদের প্রেরণায়। জনকল্যাণমুখী রাজনীতির তিনি ধারও ধারেন না বলে তার দু’দফা শাসনামলে দেশে ‘খাম্বা’র উন্নয়ন ছাড়া আর। কিছুই হয়নি। সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার আর স্বাধীনতার ইতিহাসকে ভূলুণ্ঠিত করা ছাড়া তেমন কোন কাজে পারদর্শিতার পরিচয় দিতে পারেননি। নির্বাচনকে নির্বাসন দিয়ে তিনি যে অরাজকতা ও নাশকতাকে ব্রত হিসেবে পালন করেছেন, তাতে জনগণের ঘৃণার পাত্রেই পরিণত হয়েছেন। সব সময় ভিন্নপথে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেন তাই দেখা যায়, ২০০৭ সালে তিনি ভোটার হতে চাননি। কারণ দল ও জোটের যে নড়বড়ে অবস্থা, তাতে ক্ষমতায় যাবার পথ সঙ্কীর্ণ দেখে, তিনি ভোটার হবার জন্য টালবাহানা শুরু করেন। শুধু তাই নয়, যে এককেটি ভুয়া ভোটার বানিয়েছিলেন, তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন। সেই ক্ষোভে ভোটার তালিকায় নিজের নাম ওঠাননি। পরে বাধ্য হয়েছিলেন। বিএনপির প্রধান সমস্যা যে, চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারপারসন, তা দু’দিন আগে আবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন বিএনপি সমর্থক ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী। বিএনপির নেতাদের উপস্থিতিতে সভায় তিনি বলেছেনও, বিএনপি খালেদা জিয়ার ওপর সব দায়-দায়িত্ব দিয়ে ভুল করেছে। দলের সব সিদ্ধান্ত বেগম জিয়ার ওপর ছাড়লে ঠিক হবে না। খালেদা জিয়া থাকলে বিএনপি চলবে, এটা যেমন সত্য। তেমনি উনি রাস্তায় না নামলে বিএনপি ক্ষমতায় কখনই যাবে না। এমন সত্যকথন ইতোপূর্বে শোনা যায়নি। কর্মসূচী দিয়েও রাজপথে না থাকার ট্র্যাডিশন বিএনপির পুরনো। তাদের কর্মসূচী পালন করে থাকে জামায়াত-শিবির। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। জামায়াতের কাঁধে ভর করে দলটি আবার দাঁড়াতে চায়। কিন্তু জামায়াত গণতান্ত্রিক বিধিবিধান মানে না। তাই নিবন্ধন পায় না। সেই জামায়াতের অর্থ ও লোকবল হচ্ছে বিএনপির শক্তি। কিন্তু সেই শক্তি আজ ম্রিয়মাণ। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি সন্তুষ্টির ভান দেখালেও বাস্তব অবস্থান ভিন্ন। আর তা দলের মহাসচিবের বক্তব্যেই স্পষ্ট। যে জন্য তিনি বলতে পারেন, বিএনপির পক্ষ থেকে রাজপথে যুদ্ধ করছি। ওই যুদ্ধে আমরা সফল হব। প্রয়োজনে শেষ রক্তবিন্দু দেব। সরকার পতনের আন্দোলন আবার গড়ে তুলতে চায় বিএনপি। কিন্তু সেই চাওয়া আর পূরণ হবার নয়। রাষ্ট্রপতি সকল দলের মতামত নিয়ে অচিরেই যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে যাচ্ছেন, বিএনপি তার বিরোধিতা করবেই। তারা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার দাবি আবারও তুলতে শুরু করেছে। তাদের দাবির সপক্ষে তারা কাউকে পাবে না জেনেও সহিংসতার পথে আবারও ধাবিত হবার চেষ্টা চালাবে। আওয়ামী লীগ নেতারা জামায়াত নামক ক্যান্সার আক্রান্ত বিএনপিকে সারিয়ে তুলে নির্বাচনে নিয়ে আসতে চায়। কিন্তু বিএনপি সে পথ মাড়াবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ জাগে তাদের নেতাদের কথায়। আর ২৩ মাস পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। কিন্তু বিএনপি সেপথে এখনও যায়নি। তাদের উচিত নির্বাচন নিয়ে আর টালবাহানা না করে সাংবিধানিক বিধি বিধান মেনে নির্বাচনে প্রস্তুতি গ্রহণ।
×