মোঃ আবু সিদ্দিক শেখ
সিনিয়র শিক্ষক (গণিত)
হলি ফ্লাওয়ার মডেল কলেজ
মোবাইল : ০১৭৬৫৯৩১৪৪৯
প্রিয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল। আশা করি, তোমরা সবাই নতুন বই হাতে পেয়েছ এবং পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছ। আজ প্রথম অধ্যায়- প্যাটার্ন থেকে আলোচনা করা হলো :
প্যাটার্ন : বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি নানা রকম প্যাটার্নে ভরপুর। প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য আমরা গণনা ও সংখ্যার সাহায্যে উপলব্ধি করি। প্যাটার্ন আমাদের জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে নানাভাবে। শিশুর লাল-নীল ব্লক আলাদা করা একটি প্যাটার্ন- লালগুলো এদিকে যাবে, নীলগুলো ঐ দিকে যাবে। সে গণনা করতে শেখে সংখ্যা একটি প্যাটার্ন। আবার ৫ এর গুণিতকগুলোর শেষে ০ বা ৫ থাকে, এটিও একটি প্যাটার্ন। অর্থাৎ কোন সুনির্দিষ্ট কাঠামোকেই প্যাটার্ন বলে। গণনায় ব্যবহৃত সংখ্যা একটি প্যাটার্ন এবং এটি গাণিতিক সমস্যা সমাধানে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
স্বাভাবিক সংখ্যা: সকল ধনাত্বক পূর্ণ সংখ্যাই স্বাভাবিক সংখ্যা। স্বাভাবিক সংখ্যা গুলোকে গননা কারী সংখ্যাও বলা হয়। অথবা,১,২,৩,৪... ইত্যাদি সংখ্যা গুলোকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে।
মৌলিক সংখ্যা : ১-এর চেয়ে বড় যেসব সংখ্যার ১ ও সংখ্যাটি ছাড়া অন্য কোন গুণনীয়ক নেই, সেগুলোকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমনÑ ২, ৩, ৫, ৭,... ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যা।
ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনি পদ্ধতি : স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোকে বর্গাকার ঘরে (তালিকায়) সাজিয়ে মৌলিক সংখ্যার গুণিতকগুলো কেটে দিলে যে সংখ্যাগুলো অবশিষ্ট থাকে তা মৌলিক সংখ্যা এবং এই পদ্ধতিটি ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনি পদ্ধতি নামে পরিচিত।
ম্যাজিক বর্গ : একটি বর্গক্ষেত্রকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমানভাগে ভাগ করে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো এমন একটি কৌশলে বসানো হয় যাতে সংখ্যাগুলোর পাশাপাশি, উপর-নিচ কোনাকুনি যোগফল সমান হয়। এরূপ উপস্থাপিত কৌশলই হলো ম্যাজিক বর্গ।
ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনির সাহায্যে মৌলিক সংখ্যা নির্ণয় :
১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো একটি চার্টে লিখি। এবার সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা ২ চিহ্নিত করি এবং এর গুণিতকগুলো কেটে দেই। এরপর ক্রমান্বয়ে ৩, ৫, এবং ৭ মৌলিক সংখ্যার গুণিতকগুলো কেটে দেই। তালিকায় যে সংখ্যাগুলো টিকে রইল সেগুলো মৌলিক সংখ্যা।
মৌলিক সংখ্যাগুলো হলো : ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ২৯, ৩১, ৩৭, ৪১, ৪৩, ৪৭, ৫৯, ৫৯, ৬১, ৬৭, ৭১, ৭৩, ৭৯, ৮৩, ৮৯, ৯৭।
স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল নির্ণয় :
মনে করি, ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল ক।
অর্থাৎ ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৯+ ১০
লক্ষ্য করি, প্রথম ও শেষ পদের যোগফল ১+১০= ১১, দ্বিতীয় ও শেষ পদের আগের পদের যোগফল ও ২+৯= ১১ ইত্যাদি। একই যোগফলের প্যাটার্ন অনুসরণ করে ৫ জোড়া সংখ্যা পাওয়া গেল। সুতরাং যোগফল ১১৫= ৫৫। এ থেকে স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল বের করার একটি কৌশল পাওয়া গেল। কৌশলটি হলো :
প্রদত্ত যোগফলের সঙ্গে সংখ্যাগুলো বিপরীত ক্রমে লিখে যোগ করে পাই,
ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৯+১০
ক= ১০+ ৯+ ৮+ ৭+ ৬+ ৫+ ৪+ ৩+ ২+১
২ক= (১+১০)+ (২+৯)+ ............................+ (৯+২)+ (১০+১)
বা, ২ক = (১+১০) ১০= ১১১০
বা, ক = ()= = ৫৫
যোগফল =
১ থেকে ১৫ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করে সূত্র প্রতিষ্ঠা করা হলো :
মনে করি, ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল,
ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৮+ ১০+ ১১+ ১২+ ১৩+ ১৪+ ১৫
ক= ১৫+ ১৪+ ১৩+ ১২+ ১১+ ১০+ ৯+ ৮+ ৭+ ৬+ ৫+ ৪+ ৩+ ২+ ১
(যোগ করে) ২ক= (১+১৫)+ (২+১৪)+ ................... (১৪+২)+ (১৫+১)
বা, ২ক = (১+১৫)১৫= ১৬১৫
ক= = = ১২০
যোগফল =
সংখ্যাকে দুটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ :
কিছু সংখ্যা রয়েছে যেগুলোকে দুটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ করা যায়। যেমন,
২ = ২+১ = ১২+১২
৫ = ১+৪ = ১২+২২
৮ = ৪+৪ = ২২+ ২২
১০ = ৪+৯ = ২২ + ৩২
১৩ = ৪+৯ = ২২+৩২
এভাবে ১ থেকে ১০০ এর মধ্যে ৩৪টি সংখ্যাকে দুটি বর্গের যোগফল হিসাবে প্রকাশ করা যায়। আবার, কিছু স্বাভাবিক সংখ্যাকে দুই বা ততোধিক উপায়ে দুটি বর্গের সমষ্টি রূপে প্রকাশ করা যায়।
যেমন,
৫০ = ১+৪৯ = ১২+৭২
৫০ = ২৫+২৫ = ৫২+৫২
৬৫ = ১+৬৪ = ১২+৮২
৬৫ = ১৬+৪৯ = ৪২+৭২
১৩০ = ৯+১২১ = ৩২+১১২
১৩০ = ৪৯+৮১ = ৭২+৯২
১৭০ = ১+১৬৯ = ১২+১৩২
১৭০ = ৪৯+১২১ = ৭২+১১২
১৮৫ = ১৬+১৬৯ = ৪২+১৩২
১৮৫ = ৬৪+১২১ = ৮২+১১২
৩২৫ = ১+ ৩২৪ = ১২+১৮২
৩২৫ = ৩৬+২৮৯ = ৬২+১৭২
৩২৫ = ১০০+২২৫ = ১০২+১৫২