ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গণিত

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

মোঃ আবু সিদ্দিক শেখ সিনিয়র শিক্ষক (গণিত) হলি ফ্লাওয়ার মডেল কলেজ মোবাইল : ০১৭৬৫৯৩১৪৪৯ প্রিয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল। আশা করি, তোমরা সবাই নতুন বই হাতে পেয়েছ এবং পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছ। আজ প্রথম অধ্যায়- প্যাটার্ন থেকে আলোচনা করা হলো : প্যাটার্ন : বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি নানা রকম প্যাটার্নে ভরপুর। প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য আমরা গণনা ও সংখ্যার সাহায্যে উপলব্ধি করি। প্যাটার্ন আমাদের জীবনের সঙ্গে জুড়ে আছে নানাভাবে। শিশুর লাল-নীল ব্লক আলাদা করা একটি প্যাটার্ন- লালগুলো এদিকে যাবে, নীলগুলো ঐ দিকে যাবে। সে গণনা করতে শেখে সংখ্যা একটি প্যাটার্ন। আবার ৫ এর গুণিতকগুলোর শেষে ০ বা ৫ থাকে, এটিও একটি প্যাটার্ন। অর্থাৎ কোন সুনির্দিষ্ট কাঠামোকেই প্যাটার্ন বলে। গণনায় ব্যবহৃত সংখ্যা একটি প্যাটার্ন এবং এটি গাণিতিক সমস্যা সমাধানে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাভাবিক সংখ্যা: সকল ধনাত্বক পূর্ণ সংখ্যাই স্বাভাবিক সংখ্যা। স্বাভাবিক সংখ্যা গুলোকে গননা কারী সংখ্যাও বলা হয়। অথবা,১,২,৩,৪... ইত্যাদি সংখ্যা গুলোকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। মৌলিক সংখ্যা : ১-এর চেয়ে বড় যেসব সংখ্যার ১ ও সংখ্যাটি ছাড়া অন্য কোন গুণনীয়ক নেই, সেগুলোকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমনÑ ২, ৩, ৫, ৭,... ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যা। ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনি পদ্ধতি : স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোকে বর্গাকার ঘরে (তালিকায়) সাজিয়ে মৌলিক সংখ্যার গুণিতকগুলো কেটে দিলে যে সংখ্যাগুলো অবশিষ্ট থাকে তা মৌলিক সংখ্যা এবং এই পদ্ধতিটি ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনি পদ্ধতি নামে পরিচিত। ম্যাজিক বর্গ : একটি বর্গক্ষেত্রকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর সমানভাগে ভাগ করে স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো এমন একটি কৌশলে বসানো হয় যাতে সংখ্যাগুলোর পাশাপাশি, উপর-নিচ কোনাকুনি যোগফল সমান হয়। এরূপ উপস্থাপিত কৌশলই হলো ম্যাজিক বর্গ। ইরাটোস্থিনিস ছাঁকনির সাহায্যে মৌলিক সংখ্যা নির্ণয় : ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো একটি চার্টে লিখি। এবার সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা ২ চিহ্নিত করি এবং এর গুণিতকগুলো কেটে দেই। এরপর ক্রমান্বয়ে ৩, ৫, এবং ৭ মৌলিক সংখ্যার গুণিতকগুলো কেটে দেই। তালিকায় যে সংখ্যাগুলো টিকে রইল সেগুলো মৌলিক সংখ্যা। মৌলিক সংখ্যাগুলো হলো : ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ২৯, ৩১, ৩৭, ৪১, ৪৩, ৪৭, ৫৯, ৫৯, ৬১, ৬৭, ৭১, ৭৩, ৭৯, ৮৩, ৮৯, ৯৭। স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল নির্ণয় : মনে করি, ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল ক। অর্থাৎ ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৯+ ১০ লক্ষ্য করি, প্রথম ও শেষ পদের যোগফল ১+১০= ১১, দ্বিতীয় ও শেষ পদের আগের পদের যোগফল ও ২+৯= ১১ ইত্যাদি। একই যোগফলের প্যাটার্ন অনুসরণ করে ৫ জোড়া সংখ্যা পাওয়া গেল। সুতরাং যোগফল ১১৫= ৫৫। এ থেকে স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল বের করার একটি কৌশল পাওয়া গেল। কৌশলটি হলো : প্রদত্ত যোগফলের সঙ্গে সংখ্যাগুলো বিপরীত ক্রমে লিখে যোগ করে পাই, ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৯+১০ ক= ১০+ ৯+ ৮+ ৭+ ৬+ ৫+ ৪+ ৩+ ২+১ ২ক= (১+১০)+ (২+৯)+ ............................+ (৯+২)+ (১০+১) বা, ২ক = (১+১০) ১০= ১১১০ বা, ক = ()= = ৫৫ যোগফল = ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করে সূত্র প্রতিষ্ঠা করা হলো : মনে করি, ১ থেকে ১৫ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল, ক= ১+ ২+ ৩+ ৪+ ৫+ ৬+ ৭+ ৮+ ৮+ ১০+ ১১+ ১২+ ১৩+ ১৪+ ১৫ ক= ১৫+ ১৪+ ১৩+ ১২+ ১১+ ১০+ ৯+ ৮+ ৭+ ৬+ ৫+ ৪+ ৩+ ২+ ১ (যোগ করে) ২ক= (১+১৫)+ (২+১৪)+ ................... (১৪+২)+ (১৫+১) বা, ২ক = (১+১৫)১৫= ১৬১৫ ক= = = ১২০ যোগফল = সংখ্যাকে দুটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ : কিছু সংখ্যা রয়েছে যেগুলোকে দুটি বর্গের সমষ্টিরূপে প্রকাশ করা যায়। যেমন, ২ = ২+১ = ১২+১২ ৫ = ১+৪ = ১২+২২ ৮ = ৪+৪ = ২২+ ২২ ১০ = ৪+৯ = ২২ + ৩২ ১৩ = ৪+৯ = ২২+৩২ এভাবে ১ থেকে ১০০ এর মধ্যে ৩৪টি সংখ্যাকে দুটি বর্গের যোগফল হিসাবে প্রকাশ করা যায়। আবার, কিছু স্বাভাবিক সংখ্যাকে দুই বা ততোধিক উপায়ে দুটি বর্গের সমষ্টি রূপে প্রকাশ করা যায়। যেমন, ৫০ = ১+৪৯ = ১২+৭২ ৫০ = ২৫+২৫ = ৫২+৫২ ৬৫ = ১+৬৪ = ১২+৮২ ৬৫ = ১৬+৪৯ = ৪২+৭২ ১৩০ = ৯+১২১ = ৩২+১১২ ১৩০ = ৪৯+৮১ = ৭২+৯২ ১৭০ = ১+১৬৯ = ১২+১৩২ ১৭০ = ৪৯+১২১ = ৭২+১১২ ১৮৫ = ১৬+১৬৯ = ৪২+১৩২ ১৮৫ = ৬৪+১২১ = ৮২+১১২ ৩২৫ = ১+ ৩২৪ = ১২+১৮২ ৩২৫ = ৩৬+২৮৯ = ৬২+১৭২ ৩২৫ = ১০০+২২৫ = ১০২+১৫২
×