ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘এজন্য প্রয়োজন সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়’

’২৪ সালের আগেই দেশ এসডিজিতে পৌঁছে যাবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭

’২৪ সালের আগেই দেশ এসডিজিতে পৌঁছে যাবে ॥ অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টর ॥ আগামী ২০২৪ সালের আগেই দেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) পৌঁছে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার অনেক কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, দেশ এখন আর পিছিয়ে নেই। দেশের আর্থসামাজিক চিত্র, যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান জরিপ করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে তা সময়ের আগেই বাংলাদেশ অর্জন করতে সক্ষম হবে। শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও পরিবেশ’ (এসডিজিই) বিষয়ক’ দু’দিনের বিশেষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) সম্মেলনের আয়োজন করে। এছাড়া সরকারী-বেসরকারী ১১ বিশ্ববিদ্যালয় ও ৯ গবেষণা পেশাজীবী, পরিবেশ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এবং ২৫টি বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন এ সম্মেলনে আয়োজনে সহায়তা দিয়েছে। সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এমডিজিতে বাংলাদেশের সাফল্য ছিল। এসডিজি প্রণয়নের সূচনাপর্বে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এসডিজির বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন একজন বেসরকারী ও সামাজিক আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। তিনি সরকার ও নাগরিক সমাজ উভয়েরই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাই এতে বাংলাদেশের অবস্থান ও আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে। এমডিজির মতো এসডিজিতেও আমরা সফল হব। জাতিসংঘের নির্ধারিত সময়ের (২০৩০) পূর্বেই ২০২৪ সালের মধ্যেই অর্জন করতে সক্ষম হব। অনুষ্ঠানে ড. নজরুল ইসলাম বলেন, সহস্র্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনেক বেশি ব্যাপক ও গভীর। এসডিজিতে অসমতা হ্রাস ও পরিবেশ রক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অথচ বিগত সময়কালে বাংলাদেশে অসমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিবেশের অবক্ষয় সাধিত হয়েছে। সে কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে হবে। যাতে আয় বৈষম্য কমে এবং পরিবেশ সুরক্ষিত হয়। তিনি বলেন, উন্নয়ন ধারার এই পরিবর্তনের পাশাপাশি কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে নীতি কৌশলেও পরিবর্তন আনতে হবে। নদ-নদীর ক্ষেত্রে বর্তমান অবরোধ পন্থার পরিবর্তে উন্মুক্ত পন্থা গ্রহণ করতে হবে। জ¦ালানির ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি এবং কয়লার পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। গ্রামের স্বস্থানভিত্তিক নগরায়ন, গণ-পরিবহনের ওপর গুরুত্বারোপ এবং বিদেশী ভোগধারার অন্ধ অনুকরণের পরিবর্তে দেশীয় পরিস্থিতি ও পরিবেশ রক্ষাকারী ভোগ ধারা উৎসাহিত করতে হবে। বাপা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং পরিবেশ বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে। প্রশংসা ও পুরস্কারও লাভ করেছে। কিন্তু এই সাফল্যসমূহকে টেকসই রূপ দিতে হলে সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে আনার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষার দিকটিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য আমরা ব্যাপক প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়াও প্রথম দিনের সম্মেলনের ১৫ সমান্তরাল অধিবেশনে ষাটটির বেশি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশের এবং প্রবাসী বাংলাদেশী বিজ্ঞানী গবেষক, পেশাজীবী, শিক্ষক, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, পরিবেশবিদ ও সামাজিক আন্দোলনের প্রতিনিধি, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিসহ সমাজের সকলস্তরের চার শতাধিক ব্যক্তি অংশ গ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক ও সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের সদস্য সচিব ডাঃ মোঃ আব্দুল মতিন।
×