ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পায়ুপথে ঢুকিয়ে তিনি দেড় কেজি সোনা এনে ধরা পড়লেন শাহজালালে

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭

পায়ুপথে ঢুকিয়ে তিনি দেড় কেজি সোনা এনে ধরা পড়লেন শাহজালালে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জীবনের ঝুঁকি জেনেও পায়ুপথেই ঢুকিয়েছিলেন দেড় কেজি সোনা। প্রচ- ব্যথা আর অস্বস্তির মাঝেই তিনি বহন করেছেন এত সোনার বার। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। গতিবিধিই তার কাল হয়ে দাঁড়ায়। কাস্টমস কর্তাদের সুতীক্ষèè নজরদারিতে তিনি ধরা পড়ে যান। তারপর ডাক্তার, এক্সরে ও সোনা খালাসের এক শ্বাসরুদ্বকর কাহিনী । ৬৫ লাখ টাকার ১৩ সোনার বার বের করে আনা হয় জাহাঙ্গীর আলমের পেট থেকে। শনিবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটেছে এই সত্যি ঘটনা। ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) এইচ এস আহসানুল কবির জানান, যে কায়দায় পায়ুপথে এত বার তার পেটে ঢোকানো হলো সেটা না দেখলে বিশ্বাস করার কথা নয়। ডাক্তার নিজেও ঘাবড়ে গেছেন এ কীর্তি দেখে। উদ্ধার করা সোনার ওজন ১ কেজি ৩শ’ গ্রাম । মালয়েশিয়া থেকে তিনি এ সোনা পায়ুপথেই বহন করে এসেছেন ঢাকায়। এইচ এস আহসানুল কবির জানান, মালয়েশিয়া থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ০৮৭ ফ্লাইটটি সকাল আটটা ৫৫ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টম হাউসের প্রিভেন্টিভ টিম এই ফ্লাইটের যাত্রীদের ওপর নজর রাখে। যাত্রী জাহাঙ্গীর আলমের হাঁটাচলায় অস্বাভাবিকতা থাকায় তাদের সন্দেহ বাড়লে গ্রীন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাকে চ্যালেঞ্জ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু জাহাঙ্গীর কোনভাবেই সোনা থাকার কথা স্বীকার করছিলেন না। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও সোনার বার থাকার কথা অস্বীকার করতে থাকেন জাহাঙ্গীর। এরপর আর্চওয়েতে তাকে পরীক্ষা করা হলে দেহে ধাতব বস্তুর সন্ধান মেলে। তারপরও অস্বীকার করায় ওই যাত্রীকে উত্তরার একটি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে এক্স-রে করা হয়। যাত্রীর পেটে এক্স-রে করে তার রেক্টামে তিনটি অস্বাভাবিক পোঁটলার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তখন বাধ্য হয়ে সোনা বহনের কথা স্বীকার করেন জাহাঙ্গীর। এ সম্পর্কে আহসানুল কবির বলেন, ওই যাত্রীকে শাহজালালের কাস্টমস হলে নিয়ে এসে পানি পান করিয়ে পেটে চাপ তৈরি করা হয়। এরপর কাস্টম ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে টয়লেটে বিশেষ কায়দায় পায়ুপথ দিয়ে একে একে তিনটি কনডম বের করে আনেন ৩৬ বছরের যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম। বের করা তিনটি কনডমের ভেতর থেকে মোট তেরোটি সোনার বার পাওয়া যায়। জাহাঙ্গীর অবশ্য স্বীকার করেছেন, ফ্লাইট অবতরণ করার ৩০ মিনিট আগে আকাশপথে বাথরুমে গিয়ে কনডমগুলো নিজের পায়ুপথে প্রবেশ করান। এজন্য মালয়েশিয়াতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন তিনি। সোনার বারগুলোর ওজন ১ কেজি ৩শ’ গ্রাম। প্রতিটির ওজন ১০০ গ্রাম। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও টাকার জন্য এই পন্থা অবলম্বন করেন যাত্রী জাহাঙ্গীর। আটক করা সোনার মূল্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকা। অবৈধভাবে সোনা বহনের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার এবং অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং এলাকার কাবিলা বাজারে (পাসপোর্ট নম্বর এফ ৫৬৯০৪৯৮)। তিনি সোনা পাচারের নিয়মিত বাহক বলে কাস্টমস বিভাগের ধারণা।
×