ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু শরণার্থীকে লাথি, বৃদ্ধাকে ল্যাং

তিন বছর সাজা হাঙ্গেরির ক্যামেরাপার্সনের

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

তিন বছর সাজা হাঙ্গেরির ক্যামেরাপার্সনের

বছর দেড়েক আগে খবর সংগ্রহের সময় এক শিশু শরণার্থীকে লাথি এবং এক বৃদ্ধকে ল্যাং মেরে সমালোচিত হওয়া হাঙ্গেরির এক নারী সংবাদকর্মীকে তিন বছরের সাজা দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট শুক্রবার পেত্রা লাসলোর বিরুদ্ধে এ রায় দেয় বলে এক প্রতিবেদনে জানান হয়েছে। খবর বিবিসির। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাঙ্গেরি-সার্বিয়ার রোসকি সীমান্তে এক শিশুকে পেত্রার লাথি ও এক বৃদ্ধকে ল্যাং মারার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে পুলিশী তৎপরতার মধ্যে আরও অনেকের সঙ্গে খবর ও ছবি সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন এ ক্যামেরাপারসন। আশ্রয়প্রার্থীরা এক পর্যায়ে পুলিশের বেষ্টনি ভেঙ্গে বুদাপেস্টের দিকে যেতে লাগলে শিশু কোলে ছুটতে থাকা এক বৃদ্ধ হুড়োহুড়ির মধ্যে পেত্রা পাসলোর সামনে পড়ে যান। ভিডিওতে দেখা যায়, ছুটতে থাকা শরণার্থীদের ছবি ধারণ করতে করতেই হঠাৎ শিশুটিকে লাথি মারেন পেত্রা। পরে পা বাড়িয়ে ছুটন্ত ওই বৃদ্ধকে তিনি ফেলে দেন। পরে আবার সেই দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করেন। এ সময় পড়ে যাওয়া বৃদ্ধকে পেত্রার সঙ্গে তর্ক করতে এবং শিশুকে কাঁদতে দেখা যায় বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানান হয়। শরণার্থীদের প্রতি এ অমানবিক আচরণের জন্য নিজের দেশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন পেত্রা। ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যে ডানপন্থী টেলিভিশন চ্যানেল এনওয়ানটিভি থেকে চাকরিও হারান তিনি। পেত্রার দাবি, নিজেকে বাঁচাতেই সীমান্তে শরণার্থীদের সঙ্গে ওই আচরণ করেছিলেন তিনি। আমি ঘুরে দাঁড়াতেই দেখি কয়েক শ’ মানুষ আমার দিকে তেড়ে আসছে যা ছিল অবিশ্বাস্য ও ভয়ানক, আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেন এ সংবাদকর্মী। ওই ঘটনার পর নানা সময় মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন বলে দাবি করেন পেত্রা। তার এসব দাবি নাকচ করে দিয়ে বিচারক ইলেস নানাসি বলেন, পেত্রার ব্যবহার ছিল ‘সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী’। তিন বছরের সাজার সময় পেত্রাকে জেলে কাটাতে হবে না। তবে তাকে কিছু শর্ত মেনে নজরদারির মধ্যে থাকতে হবে। যদিও এর বিরুদ্ধে আপীলের ঘোষণা দিয়েছেন পেত্রা। রায় ঘোষণার সময় এ সংবাদকর্মী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি চলাকালে প্রায়ই তাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
×