ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হলোকস্টে স্মৃতি সংরক্ষণে পোল্যান্ডে বিশাল প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

হলোকস্টে স্মৃতি সংরক্ষণে পোল্যান্ডে বিশাল প্রকল্প

হলোকস্টে স্মৃতি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পোল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় অসিসিম শহরে সাবেক নাৎসি জার্মানির ডেথ ক্যাম্প অসিউইজ বিরকেনাউ তিলে তিলে গড়ে তোলা হচ্ছে। হলোকস্ট মিউজিয়াম তৈরির জন্য নির্মাণ শ্রমিকরা সেখানে রাতদিন কাজ করে চলেছে। ‘এটি স্মৃতি সংরক্ষণাগারের সর্ববৃহৎ নজিরবিহীন এক প্রকল্প’ অসিউইজ বিরকেনাউ মিউজিয়ামের মুখপাত্র পাওয়েল সাউইকি একথা বলেছেন। ডেথ ক্যাম্পটির যেখানে অবস্থান তার আশপাশে গ্যাস চেম্বার, শ্মশান ও ব্যারাকের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পোল্যান্ড দখলের পর ১৯৪০ সালে নাৎসিরা ওই ডেথ ক্যাম্প তৈরি করে। সেখানে প্রায় ১১ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয় যাদের বেশিরভাগই ছিল ইহুদী। প্রকল্পের সাইট ব্যবস্থাপক এওয়া সিরুলিক বলেন, ‘একটি পুরনো ব্যারাককে সংরক্ষণ করা ও একটি গির্জাকে সংক্ষণ করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যেমন আমরা এখানে একে আদি অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ, দর্শনার্থীরা এখানে কোন পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে না।’ কাজটি কঠিন। কারণ দুর্বলভাবে তৈরি ব্যারাকগুলো আগে কখনই সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রকল্প এলাকায় কর্মরত নির্মাণ বিশেষজ্ঞ জাইমন জানিকা বলছিলেন, ‘আমরা যে কাজে হাত দিয়েছি সেটি যখন নির্মাণ শিল্পে নিয়োজিত আমার সহকর্মীদের বলেছিলাম, তারা হেসেছিল। আগের কাঠামোটি পুরোপুরি ভেঙ্গে তারা নতুন করে পুরনো আদলে সেগুলো তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের বিবেচনায় ছিল মানুষ পুরনো আদি কাঠামো দেখার জন্যই এখানে আসবে। তাই আমরা না ভেঙ্গে কাঠামোকে অবিকৃত রেখে সেটি পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই।’ ২০১৫ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। বৈরী আবহাওয়ার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ইতোমধ্যে ১২ মিটার উঁচু দুটি দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে এক দশক লেগে যেতে পারে। এই কাজে খরচ হবে আনুমানিক ২৭ লাখ ইউরো (২৯ লাখ ডলার)। এখানে দুটি ক্যাম্প রয়েছে, একটির থেকে আরেকটির দূরত্ব তিন কিলোমিটার। ইতোপূর্বে অসিউইজ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হলেও ব্যারাক সংরক্ষণের বিষয়টি তাতে ছিল না। বিরকেনাউর ভবনগুলো অসিউইজের চেয়ে দুর্বল। কারণ অসিউইজের সেগুলো নাৎসি পূর্ববর্তী যুগে তৈরি। ভবনগুলো সামরিক ব্যারাক হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। অন্যদিকে বিরকেনাউর ভবনগুলো ক্যাম্প হিসেবেই তৈরি করা হয়। তাই ওগুলো খুব মজবুত নয়। মোট ৪৫টি ভবন সংরক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে। সিরুলিক জানিয়েছেন, যেসব ভবন তুলনামূলক ভাল অবস্থায় আছে সেগুলো ওগুলোই সংরক্ষণ করা হবে। যে ভবনগুলোর অবস্থা একেবারেই ভগ্নদশা সেগুলো প্রতিস্থাপন করা হবে। -এএফপি
×