ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পৌষের বিদায়ে হাড় কাঁপানো শীত

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

পৌষের বিদায়ে হাড় কাঁপানো শীত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পৌষের বিদায় আর মাঘের শুরুতে জেঁকে বসছে শীত। কথায় বলে মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। এবারের শীতে সে কথার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। পৌষ মাসজুড়ে শীতের দেখা না মিললেও তার বিদায়ে শুরু হয়েছে হাড় কাঁপানো শীত। এবারের শীত মৌসুমে শুক্রবার প্রথমবারের মতো দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গেছে ৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়ানে। আবহাওয়া অফিসের ভাষ্যমতে, দেশজুড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহেই কেবল তাপমাত্রা এত নিচে নেমে যায়। এর আগে এই শীতে তাপমাত্র ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামতে দেখা যায়নি। শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগ এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন। আজ দেশের ওপর দিয়ে তীব্র ও কোন কোন অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার রাজধানী ঢাকাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে আসে। সকাল থেকে শীতল হাওয়া সন্ধ্যায় তীব্র আকার ধারণ করে। রাজধানীবাসী প্রথমবারের মতো বুঝতে পারে শীত এসেছে। সকাল থেকে গরম কাপড় জড়িয়ে সবাইকে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর থেকেই শীতের কারণে দ্রুত ঘরে ফিরতে দেখা যায়। আবহাওয়া অফিসের হিসাব মতে, শুক্রবার সারাদেশে সর্বোচ্চ মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে। এতদিন টেকনাফের তাপমাত্র ছিল ২৫.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এছাড়া দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর বিভাগের রাজারহাট এলাকায়। এছাড়া দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ সারাদেশের ওপর তীব্র থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে শীত তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। এবার মৌসুমের শুরু থেকে শীতের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মূলত সাগরে নিম্নচাপ ও লঘুচাপের কারণে ভরা মৌসুমে শীতের দেখা পাওয়া যায়নি। শুক্রবার ছিল এবারের পৌষ মাসের শেষ দিন। আজ থেকে শীত ঋতুর দ্বিতীয় মাস মাঘ শুরু হচ্ছে। ঋতু বৈচিত্র্যের ধরন অনুযায়ী পৌষ মাঘ দু’মাসই শীতকাল। তবে পৌষে শীতের মাত্রা মাঘ মাসের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। কিন্তু এবারে পুরো পৌষ জুড়ে শীতের কোন দেখা পাওয়া যায়নি। লঘুচাপ সরে যাওয়ার কারণে মাঘের শুরুতে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। এছাড়া পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে দেশে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেখানে শীত পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে বলে আমাদের সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার জানিয়েছেন। আবহাওয়া অফিসের হিসাব মতে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে এবং জানুয়ারির ৭-৮ তারিখে দেশের উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও সাগরে নিম্নচাপ এবং লঘুচাপের কারণে শীত অনুভূত হয়নি। দেশে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাধারণত শীত মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। আবহাওয়া অধিদফতর জানুয়ারি পর্যন্ত যে গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবারে শীতের শুরুতে শীত কম অনুভূত হচ্ছে। তারা জানিয়েছে সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার ডিসেম্বরের শুরু থেকেই আবহাওয়ায় উষ্ণতা ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। এ কারণে পৌষে শীত নামেনি। তবে মাঘ মাসে স্বাভাবিক শীত পড়বে বলে তারা উল্লেখ করেছেন।
×