ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে রেল যোগাযোগ বেহাল ॥ লক্কড়ঝক্কড় ট্রেনে চলছেন যাত্রী

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

কুড়িগ্রামে রেল যোগাযোগ বেহাল ॥ লক্কড়ঝক্কড় ট্রেনে চলছেন যাত্রী

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ প্রায় ২ যুগ ধরে লক্কড়ঝক্কড় ট্রেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের যাত্রীরা। জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের জন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি মাত্র লোকাল ট্রেন বরাদ্দ থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইনে ধীরগতিতে আসা-যাওয়া করছে সে ট্রেনটি। তিস্তা-কুড়িগ্রাম রেলপথের টগরাইহাট রেল স্টেশনের কাছে জোতগোবরধন এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার রেল সেতুর ওপর রেললাইন ঠিক রাখার জন্য কাঠের স্লিপারে বাঁশের ফালি লাগানো হয়েছে। বাঁশের ফালি লাগানো হয়েছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুত সংলগ্ন মুক্তারাম ত্রিমোহনী এলাকায় একটি বক্সকালভার্টের ওপর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের চালকরা বরাবরই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ লাইনে ট্রেন নিয়ে আসতে চায় না। এদিকে ট্রেন যোগাযোগ সচল রাখতে তিস্তা-কুড়িগ্রাম রেলপথের বিভিন্ন স্থানে রেল সেতুর ওপর কাঠের স্লিপার বাঁশ দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। রেললাইনের উভয়দিকে গাছের সরু ডাল দিয়ে ঠেঁস দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এই উপায়ে রেললাইন সচল রাখা হয়েছে বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ। তবে তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার কাজ চলছে বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে কুড়িগ্রামের রমনা থেকে ঢাকা ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস নামে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন রেল- নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি নামে একটি সংগঠন। তাদের দাবির মুখে একটি ট্রেন ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিতে তিস্তা থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা স্টেশন পর্যন্ত আসা-যাওয়া করছে। এমন ট্রেনে ওঠেন না বেশিরভাগ যাত্রী। এ ট্রেনে শুধু দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ টাকা ছাড়াই যাতায়াতের জন্য উঠে থাকেন। গণকমিটির দাবি তিস্তা থেকে রমনা পর্যন্ত রেলপথ সংস্কার করার। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম জেলার অভ্যন্তরে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার রেললাইনে ৭ টি স্টেশনের অবস্থা একেবারেই নাজুক। এ স্টেশনগুলো কোন রকমে সংস্কার করা হলেও অনেক স্টেশনে নেই টিকেট কাউন্টার। পাশাপাশি ট্রেনে চেকার না থাকায় টিকেট কেটে ট্রেনে ওঠেন না বেশিরভাগ যাত্রী। কুড়িগ্রাম রেল- নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ নলেজ জানান, আমাদের এ গণকমিটির দীর্ঘদিন ধরে রমনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস নামে আন্তঃনগর ট্রেন চালু, চিলমারী-সুন্দরগঞ্জ প্রস্তাবিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে রেললাইন সংযোগোরের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের দাবির মুখে রেলের মহাপরিদর্শক আকতারুজ্জামান গত ৫ ডিসেম্বর রেলপথ পরিদর্শনে আসেন। তিনি রেলপথ সংস্কারসহ আন্তঃনগর ট্রেন চালুর বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
×