ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রুপের নামে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে উত্তরার কিশোররা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

গ্রুপের নামে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে উত্তরার কিশোররা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রুপের নামে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে রাজধানীর উত্তরা এলাকার কিশোররা। প্রথমে সাধারণ পার্টি করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা পরিণত হয়েছে আধিপত্য বিস্তারে। যার সবশেষ শিকার উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আদনান কবির। আদনান কবির। উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। গেল শুক্রবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে তাকে। এরপর উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে। সকালে ঘটনাস্থল উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডে গিয়ে দেখা যায়, আদনানকে যে বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে এখনও লেগে আছে রক্তের দাগ। এই নৃশংস ঘটনার পর থেকে ছেলের কবরের পাশে রাত দিন বসে থাকতে দেখা যায় আদনানের বাবাকে। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আশপাশের এত মানুষ ঘটনাটি দেখলেও এগিয়ে আসেননি কেউ। তিনি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। আদনানের বাবা আরও বলেন, ‘একটা কুকুরকেও মানুষ এভাবে কোপায় না। তের বছরের একটা বাচ্চা ছেলে কি অপরাধ করতে পারে যে তাকে পঞ্চাশটা কোপ দিতে হবে।’ আর মা কাওসারা বেগমের কণ্ঠেও প্রকাশ পেল সন্তান হারানোর তীব্র যন্ত্রণা। এদিকে আদনান নিহত হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার রাতেই বাবা কবির হোসেন বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ১২ জন কিশোরকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা পলাতক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে কিশোরদের পাঁচটি গ্রুপ। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারই এসব গ্রুপের প্রধান উদ্দেশ্য। এছাড়াও মূলত হর্ন বাজিয়ে প্রচ- গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাও এদের কাজ। এই গ্রুপগুলোর সদস্যদের বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। এদের বেশিরভাগ উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। গ্রুপের বেশিরভাগ সদস্যই উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ, ক্যামব্রিয়ান কলেজ, উত্তরা হাইস্কুল, রাজউক, ট্রাস্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের অষ্টম, নবম, দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এটি সামাজিক অবক্ষয়। এ সব ঘটনা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
×