ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের বললেন আরাস্তু খান

রাজনীতি করলে ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাফ নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

রাজনীতি করলে ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাফ নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা রাজনীতিক কর্মকান্ডে জড়ালে মাফ করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংকটির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। কোন কর্মকর্তা সম্পর্কে এ সংক্রান্ত প্রমাণ পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক থেকে কারও চাকরি খাওয়ার ইচ্ছে নেই। সবাইকেই এ কথা বলেছি। তবে যদি কারও সরাসরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকে, সেটা মেনে নেয়া হবে না। কারণ, আমরা চাই প্রফেশনালদের ব্যাংক। বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল হামিদ মিঞার নেতৃত্বাধীন একটি দল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আরাস্তু খান। তিনি বলেন, অতীত ইতিহাস ঘেঁটে আমরা কাউকে চাকরি থেকে সরাব না। তবে রাজনীতিতে বর্তমানে কারও ইনক্লাইনেশন (অনুরাগ) থাকলে সেটা আমরা এ্যালাও (গ্রাহ্য) করব না। গত সপ্তাহে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় বিরাট পরিবর্তন আসে। প্রতিষ্ঠানটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন আরাস্তু খান। দায়িত্ব নেয়ার পর বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। ব্যাংকের রদবদলকে স্বাভাবিক উল্লেখ করে আরাস্তু খান বলেন, ভেরি ভেরি নরমাল রদবদল। জানুয়ারি মাসে যে কোন রদবদল হয়। দে আর অল হ্যাপি এ্যাবাউট ইট। আপনিও (সাংবাদিকদের উদ্দেশে) চেক করে দেখতে পারেন। জামায়াতে ইসলামীর ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ব্যাংকটিতে পরিবর্তন আসায় চাকরি হারানোর আশঙ্কা করছে অনেকেই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরাস্তু খান বলেন, উইচ হান্টিং করে কারো চাকরি খাওয়ার ইচ্ছা আমাদের নেই। কিন্তু তাদের চাকরি থেকে সরাব, যদি পলিটিক্যাল কোন ইনক্লাইনেশন দেখা যায়। আরাস্তু খান আরও বলেন, যদি দেখা যায়, পলিটিক্যাল এ্যাসপাইরেশন আছে, আমরা এটা চাই না। আমি তো বলছি না ইভেন বিএনপিও হতে পারবে না। উই হ্যাভ টু বি প্রফেশনাল, প্রফেশনালি কাজ করবে। একটা মানুষ ভোট দেয়, আপনি বিএনপিকে ভোট দিতে পারেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে পারেন, ইউ ক্যান ডু দ্যাট। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে এটা প্রতিফলিত হওয়া ঠিক নয়। পলিটিক্যাল লোকদের চিহ্নিত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, না না, নো নো, আমি উইচ হান্টিং পছন্দ করি না। ব্যাংক কী রকম করছে-অর্থমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে ইসলামী ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা সবাই জানেন ব্যাংক খুবই ভাল করছে। পারফরম্যান্স এক্সিলেন্ট। ২ হাজার তিন কোটি টাকা গত বছরের প্রোফিট, ইনকামস অব রেমিটেন্স ২৭ শতাংশ। নন-পারফরম্যান্স লোন মাত্র সাড়ে তিন শতাংশের মতো। এটা বড় সংখ্যা। ডিপোজিট টু ইনভেস্টমেন্ট রেশিও ৮৮ শতাংশ। হি (অর্থমন্ত্রী) ওয়াজ ভেরি হ্যাপি টু লার্ন, ইসলামী ব্যাংক ডুয়িং। সরকারী বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ সম্পর্কে আরাস্তু খান বলেন, আমাদের যে সারপ্লাস টাকা থাকে, শুধু ইসলামী ব্যাংক না অন্য ব্যাংকেও যদি টাকা থাকে তাহলে ইনফ্রাস্ট্রাকচারে বিনিয়োগ করতে পারে। ডেফিসিট সিকিউর করতে হলে ২৮-৩৪ শতাংশ বিনিয়োগ করতে হবে। ৪ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, যে টাকা আমরা চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নেই। আমরা যদি নিজেদের রিসোর্স মেকআপ করে যে কোন বড় প্রোজেক্টে ফাইন্যান্স করি, সেটা দেশের জন্য ভাল। পিপিপির কোন প্রজেক্টে আমরা বিনিয়োগ করতে পারি, যেটা সরকার গ্যারান্টি দেবে। ব্যাংকের বোর্ড পরিবর্তন কোন রাজনৈতিক কিছু না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব ধরনের লোক নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিবর্তনে ব্যাংকের অগ্রগতিতে কোন প্রভাব পড়বে না। গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ব্যাংকটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। পরিবর্তন আনা হয় ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান পদেও। সাবেক সচিব আরাস্তু খানকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
×