ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও মুমিনুলের ব্যাটিং ঝলক

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

আবারও মুমিনুলের ব্যাটিং ঝলক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বছরে ঠিকমত জাতীয় দলের হয়ে খেলারই সুযোগ পান না মুমিনুল হক। যখন টেস্ট ক্রিকেট হয়, তখনই শুধু তার ডাক পড়ে। আর যখন ডাক পড়ে, তখনই ব্যাট হাতে নেমে দেখান ঝলক। এবারও যেমন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসের প্রথমদিনই দেখিয়ে দিয়েছেন ব্যাটিং ঝলক। ১১০ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রান করে আছেন অপরাজিত। মুমিনুলকে টেস্ট স্প্যাশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবেই এখন ধরা হয়। আর তাই যখন টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ, তখন মুমিনুল হয়ে পড়েন অবধারিত ব্যাটসম্যান। সেই সুযোগটি যথাযথ কাজেও লাগান তিনি। বছরের প্রথম টেস্ট ম্যাচেও তাই উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। মুমিনুল যখন ব্যাট হাতে নামেন এবং বড় ইনিংস খেলতে থাকেন; তখন রেকর্ডও তার সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে চলতে থাকে। বৃহস্পতিবার প্রথমদিনে যেমন ১১তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন। ২০ টেস্টের ১৬ ইনিংস খেলে (এখনও ২০তম ম্যাচের প্রথম ইনিংস চলছে) ৫৩.৮০ গড়ে ১৬১৪ রান করেছেন মুমিনুল। প্রথমদিন ইনিংসের ২৯তম ওভারে টিম সাউদিকে ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ছক্কা হাঁকান। ২০১৩ সালে অভিষেক হওয়ার পর ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাবর আজমের বলে প্রথম ছক্কা মেরেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মুমিনুল হকের ব্যাটিং গড় (২২০) চোখ ধাঁধানো। কমপক্ষে ৫ ইনিংস ব্যাটিং করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ গড় মুমিনুলের। আজ যদি কোন রান যোগ না করেও আউট হয়ে যান মমিনুল, তবুও সেরাতেই থাকবেন। দুইয়ে থাকা দিলীপ সারদেশাইয়ের (১২০) চেয়ে এগিয়ে থাকবেন বাংলাদেশের মুমিনুল (১৪৬.৬৭)। মুমিনুলের দুঃখ থাকতেই পারে। এত ভাল খেলেন। অথচ টেস্ট খেলারই সুযোগ পান না। কারণ বাংলাদেশ দলও যে টেস্ট নিয়মিত খেলে না। ২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেকের বছরে ৫টি, ২০১৪ সালে ৭টি, ২০১৫ সালে ৫টি, গত বছর ২টি ও এ বছর একটি টেস্ট খেলছেন। এরই মধ্যে চারটি শতকও আছে মুমিনুলের। আছে ১১টি অর্ধশতকও। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, মুমিনুল কতটা ভাল ব্যাটিং করেছেন। মুমিনুলকে নিয়ে তাই ওপেনার তামিম ইকবালের যেমন আছে আফসোস, তেমনি তার ব্যাটিংয়ের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন তামিম। বলেছেন, ‘মুমিনুল গত দুই-আড়াই বছর ধরেই খুব ভাল করছে। যদিও সে কেবল একটি সংস্করণেই (টেস্টে) খেলে। তাকে একটি টেস্ট খেলতে ছয়মাস অথবা একবছর বসে থাকতে হয়। এসব বিবেচনায় নিলে সে দুর্দান্ত।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমাদের দলের সঙ্গে প্রথম থেকেই সে আছে। এটি খুব কাজে এসেছে। অস্ট্রেলিয়াতেও সে ছিল। সেখানে সে অনুশীলন করেছে দলের সঙ্গে। যদিও আমরা ওয়ানডে ও টি২০ আগে খেলেছি। কিন্তু বিসিবি ওকে দলের সঙ্গে রেখে দিয়ে খুব ভাল করেছে। সে অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পেরেছে। এগুলো এই কন্ডিশনে ভাল খেলতে সহায়তা করেছে।’ পুরোদমে বাতাস বইছে। জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন কন্ডিশনেও মুমিনুল দেখিয়ে দিয়েছেন, চাইলে পারা যায়। আর তাই কন্ডিশন বিবেচনায় মুমিনুল অদ্ভুত খেলেছেন বলে মনে করেন তামিম, ‘অল্প টেস্ট ক্যারিয়ারে অদ্ভুত ভাল খেলে চলেছে। আমি নিশ্চিত, সে আগামীকালও (আজ) ভাল করবে। সে এমন একজন ব্যাটসম্যান, যে নিজের সীমাবদ্ধতা ও সামর্থ্যরে বাইরে খুব বেশি শট খেলে না। নিজের সামর্থ্য ভাল করে বোঝে। খেলেও সে অনুযায়ী। যা ওকে খুব ভাল ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে।’ আজও দ্বিতীয়দিন মুমিনুল ব্যাট হাতে নামবেন। তার কাছ থেকে এখন বড় একটি ইনিংসের প্রত্যাশাই করা হচ্ছে। সেটি শতক হয়ে যাক, তা সবারই চাওয়া। তামিম মনে করেন, মুমিনুলের ভাল খেলার ওপরই বাংলাদেশের ভাল অবস্থান তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা জোরাল, ‘কাল (আজ) সকালে প্রথম ঘণ্টাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনুল যদি নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারে, তাহলে আমরা অবশ্যই একটা সুবিধাজনক জায়গায় চলে যেতে পারব।’ এখন দেখা যাক, মুমিনুল আজ কি করতে পারেন।
×