ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভণ্ড ফকিরের কাণ্ড ॥ ঘর ভাঙ্গল নববধূর

প্রকাশিত: ০৪:০১, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

ভণ্ড ফকিরের কাণ্ড ॥ ঘর ভাঙ্গল নববধূর

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১২ জানুয়ারি ॥ চিকিৎসার নামে ৯ম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ঘর ভাঙ্গে নববধূ ঐ মেয়েটির। এ ঘটনায় মেয়েটি থানায় মামলা করলে ঐ ভ- ফকিরের চিকিৎসার নামে লম্পটের ভয়াবহ সব কাহিনী বের হয়ে আসে। বুধবার পুলিশ লম্পট তাজেল মুন্সীকে গ্রেফতার করায় এলাকাবাসী তার ফাঁসি দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি মামলা হয়েছে। জানা গেছে, ওই ছাত্রী অনেক দিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিল। এ অবস্থায় তার মা লোকমুখে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের তাজেল মুন্সী (৫৫) নামের এক ফকিরের কথা জানতে পারে। ৫ মাস আগে মেয়েকে নিয়ে তার মা দত্তপাড়া ইউনিয়নের মগরা পুকুরপাড় গ্রামের কথিত ফকির তাজেল মুন্সীর কাছে যায়। তাজেল মুন্সী প্রথম দিন মেয়েটিকে চিকিৎসা হিসেবে পানি পড়া দেয়। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য সপ্তাহখানেক পরে তাদের বাড়িতে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের বিদায় করে। এর কয়েকদিন পরে তাজেল মেয়েটির বাড়ি যায়। সেখানে গিয়ে পেটে মালিশ করার জন্য তেল পড়া দেয়। ঐ বাড়িতে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে মেয়েটির মা থাকায় সুযোগ না পেয়ে তাজেল ফিরে যায়। এর কয়েকদিন পর আবারও তাজেল চিকিৎসার নামে ঐ বাড়িতে যায়। মেয়েটির ভাই বিদেশ থেকে মোবাইলে ফোন করায় তার মা মোবাইল নিয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। এই সুযোগে ফকির তাজেল মেয়েটির গায়ে নিজ হাতে তেল মালিশ করার কথা বলে। মেয়েটি অনিচ্ছা প্রকাশ করলে কথিত ফকির তাজেল তাকে ভয় দেখায় যে এটা না করলে তার অনেক বড় ক্ষতি হবে। বাধ্য হয়ে মেয়েটি তাকে নিজের শরীরে তেল মালিশ করতে দেয়। মালিশের এক পর্যায়ে তাজেল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাধা দিলে সে বলে এটাই তোর চিকিৎসা। এ কথা কাউকে বললে তোর ও তোর পারিবারের অনেক বড় ক্ষতি হবে। আর আমি নিজে ইচ্ছা করলে যে কোন সময় যে কাউকে ধ্বংস করে দিতে পারি। তাই এ কথা কাউকে বলা যাবে না বলে সে ঐ বাড়ি থেকে চলে যায়। লজ্জা ও ভয়ে মেয়েটি এ ঘটনা তার পারিবারের কাউকে বলেনি। ৩ মাস পর দত্তপাড়া এলাকার এক মুদি দোকানির সাথে মেয়েটির বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় ২ মাস পর শারীরিকভাবে মেয়েটি অসুস্থ হয়। ২৬ ডিসেম্বর সকালে তার স্বামী তাকে নিয়ে রয়েল হাসপাতালে আসে। ডাক্তারের পরামর্শে তার আলট্রাসোনোগ্রাম করানো হয়। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানায়, সে অন্তঃসত্ত¦া। এ কথা শুনে প্রথমে তার স্বামী খুশি হয়। কিন্তু ডাক্তার যখন জানায় সে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত¦া তখন তার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর কাছে কারণ জানতে চায়। তখন মেয়েটি তাকে ঐ লম্পট ভ- ফকিরের অনৈতিক কার্যকলাপের ঘটনা খুলে বলে। এ ঘটনা শোনার পর একই দিন বিকেলে পারিবারিকভাকে মেয়েটিকে তার স্বামী তালাক দেয়।
×