ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুষের অভিযোগ তদন্তে এসে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লাঞ্ছিত

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

ঘুষের অভিযোগ তদন্তে এসে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লাঞ্ছিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা) ১২ জানুয়ারি ॥ ঘুষের অভিযোগ তদন্ত করতে এসে আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মজিবুর রহমানের হাতে বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহীদুল ইসলাম লাঞ্ছিত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। জানা গেছে, এ বছর আমন চাল সংগ্রহ অভিযানে আমতলীর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪৪ টন। এ চাল সংগ্রহে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস উপজেলার গাজী রাইস মিল ও রুমানা রাইস মিলের সাথে চুক্তি করেছে। সরকারী নিয়ম অনুসারে ৩৩ টাকা কেজি দরে গাজী রাইস মিল ৩০০ টন ও রুমানা রাইস মিল ২৫৪ টন চাল আমতলী খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে সরবরাহ করবে। ইতোমধ্যে গাজী রাইস মিল ৯০ টন ও রুমানা রাইস মিল ১২০ টন চাল সরবরাহ করেছে। এ চাল সংগ্রহ অভিযান দেখাশোনা করছে আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মজিবুর রহমান। গাজী রাইস মিলের মালিক আনোয়ার গাজী অভিযোগ করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মজিবুর রহমান তার কাছে আমন সংগ্রহ অভিযানে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেছেন। তার দাবি অনুয়াযী ঘুষের টাকা পরিশোধ করার পরেও তিনি আরও ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ বিষয়ে তিনি (আনোয়ার গাজী) বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার শহীদুল ইসলাম তদন্ত করতে আমতলীতে আসেন। দুপুর তিনটার দিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার শহীদুল ইসলাম উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মজিবুর রহমানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার ক্ষিপ্ত হয়ে সে ও তার ভাড়াটে লোকজন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসারকে লাঞ্ছিত করেছে এবং খাদ্য গুদাম অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা শহীদ উল্লাহ ঘটনাস্থলে যান এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসারকে উদ্ধার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও তার ভাড়াটে লোকজন পালিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা খাদ্য অফিসার ও তার লোকজন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসারকে লাঞ্ছিত করে এবং খাদ্য গুদামে আটকে রাখে। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেছে। আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মজিবুর রহমান ঘুষ দাবির অভিযোগ ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসারকে লাঞ্ছিত করার কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আনোয়ার গাজী ৩৫ টন চালের টাকা বুধবার পরিশোধ করেছে। আট টন চালের টাকা পরিশোধ করেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা খাদ্য অফিসার আমাকে গালাগাল করেছে। কেন টাকা পরিশোধ করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- রবিবার পরিশোধের কথা বলেছি। বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহীদুল ইসলাম জানান, গাজী রাইস মিলের মালিক আনোয়ার গাজীর কাছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মজিবুর রহমান ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ করেন। এ অভিযোগ তদন্ত করতে এসে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় মজিবুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে সে ও তার ভাড়াটে লোকজন আমাকে লাঞ্ছিত করেছে এবং কক্ষে আটকে রেখেছে।
×