ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাটপণ্যের কেন্দ্রীয় প্রদর্শনী কেন্দ্রের উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

পাটপণ্যের কেন্দ্রীয় প্রদর্শনী কেন্দ্রের উদ্বোধন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে একটি বহুমুখী পাটপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের অভাব অনেক আগে থেকেই অনুভূত হয়ে আসছে। এ ধরনের কেন্দ্রের অভাবে বহুমুখী পাটপণ্য উদ্যোক্তাগণ তাদের পাটপণ্য পরিচিতি ও বিপণনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ডিজাইনের বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ঢাকাস্থ জেডিপিসি ভবনের ২য় তলায় বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশী/বিদেশী ক্রেতাদের একই জায়গা থেকে পছন্দমতো বহুমুখী পাটপণ্য পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পাটের হারানো গৌরব ফিরে পেতে এই বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পাট শিল্পের রক্ষাকল্পে অতি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর জেডিপিসি সম্মেলন কক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়াধীন সংস্থাটির বহুমুখী পাটপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, অতিরিক্ত সচিব গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য,পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মোছলেহ উদ্দিন, বস্ত্র পরিদফতরের পরিচালক ইসমাইল হোসেন, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক নাসিমা বেগম (যুগ্ম সচিব), বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিডিজেএমইএ) আহ্বায়ক রাশেদুল করিম মুন্নাসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ও জেডিপিসির কর্মকর্তাবৃন্দ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাটপণ্যের নানামুখী উৎপাদন ও বিপণন হলেও নির্দিষ্ট কোন বিক্রয় কেন্দ্র না থাকায় দেশী-বিদেশী বড় ক্রেতারা এসব পণ্য সম্পর্কে জানতে পারত না। ফলে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ কারণে এসব পণ্যের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বিপণনের ব্যবস্থা করেছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে স্থায়ীভাবে এ বিক্রয় কেন্দ্র হতে দেশে উৎপাদিত ১৩৫টি পাটপণ্যের প্রদর্শনী শুরু হলো। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেছেন, বাংলাদেশকে আবারও সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে রূপান্তর করে পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে বহুমুখী পাটপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করার মাধ্যমে এটা আবারও প্রমাণিত হলো। ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ সুষ্ঠুভাবে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অতিদ্রুত আরও ১১টি পণ্য মোড়কীকরণের ক্ষেত্রে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট সোনালি আঁশ নামে খ্যাত বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। দেশের চার কোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধি, দেশের অভ্যন্তরের পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি, পাটের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে বর্তমান সরকার। দেশী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত বহুমুখী পাটপণ্য এক জায়গা থেকে প্রদর্শন ও বিক্রির উদ্দেশে এ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ক্রেতারা একই জায়গা থেকে পছন্দমতো বহুমুখী পাটপণ্য সম্পর্কে ধারণা নিতে এবং তা ক্রয় করতে পারবেন। পাটের হারানো গৌরব ফিরে পেতে এ বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। সভায় জানানো হয়, পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যবহার বহুমুখীকরণ ও উচ্চমূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া শুধু সনাতনী পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে পাটকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এ উপলব্ধি থেকে বহুমুখী পাট শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে ২০০২ সালে জেডিপিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
×