ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যেসব কারণে 'ক্যাপ্টেন কুল' উপাধি পেয়েছেন ধোনি

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

যেসব কারণে 'ক্যাপ্টেন কুল' উপাধি পেয়েছেন ধোনি

অনলাইন ডেস্ক ॥ এক সপ্তাহ আগে ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়ে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ভারতের 'ক্যাপ্টেন কুল' খ্যাত মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। যেন পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য নতুন দল তৈরি করতে নতুন অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে একটু সময় দিলেন। অধিনায়কত্ব ছাড়ার এই সিদ্ধান্তে অবাক করলেও মাঠে কিন্তু বারবার তার সিদ্ধান্ত প্রতিপক্ষকে অবাক করেছে বারবার। আর সেই সব ম্যাচ উইনিং সিদ্ধান্তের কারণেই তিনি আজ 'ক্যাপ্টেন কুল'। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ধোনির এমন কিছু সিদ্ধান্ত যা হয়ত তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেওয়ার কথা ভাবতেনও না। ** টি-টোয়েন্টি তে যে কোনো দলের যখন প্রধান লক্ষ্য থাকে প্রথম বল থেকে আক্রমণে যাওয়ার, ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলকে ঠিক উল্টোটা করতে বলেছিলেন ধোনি। ওপেনারদের বলেছিলেন, প্রথম ৬ ওভারে কোনোভাবেই উইকেট না হারাতে। তাতে প্রথম দিকে রান কম উঠলেও শেষ দিকে উইকেট থাকায় প্রতি ম্যাচেই ভাল স্কোর করতে পেরেছিল ভারত। ** ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিগ ম্যাচে পাকিস্তান যেখানে দলের প্রধান তিন পেসারকে উইকেটে হিট করার দায়িত্ব দিয়েছিল, ধোনি সেখানে বেছে নিয়েছিলেন শেবাগ, হরভজন এবং রবিন উথাপ্পাকে। যে উথাপ্পাকে বল হাতে ক্যারিয়ারে প্রায় দেখাই যায়নি। সবাইকে চমকে দিয়ে ভারতের এই তিন বোলারই উইকেটে বল লাগায়। সেখানে ব্যর্থ হন ইয়াসির আরাফাত, উমর গুলরা। ** বিশ্বকাপ ফাইনালে জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রানের। ফর্মে থাকা হরভজন সিংহের হাতে বল না দিয়ে শেষ ওভারে বোলিংয়ে পাঠান যোগিন্দর শর্মাকে। আর তাতেই বাজিমাত। ** ইয়র্কারেও যে ছক্কা মারা যায় ধোনির হেলিকপ্টার শটের আগে তা অজানা ছিল ক্রিকেটবিশ্বের কাছে। প্রথম দিকে এই শট নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নাক সিঁটকালেও পরে এটাই ধোনির ট্রেডমার্ক শট হয়ে যায়। বোলারদের সেরা অস্ত্রকে ভোঁতা করার এই নতুন অস্ত্রকে কুর্নিশ জানায় ক্রিকেটবিশ্ব। ** ২০০৮ সালের নাগপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতের ৪৪১ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া তখন ১৮৯/২। ধোনি তার বোলারদের নির্দেশ দেন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে বল করতে। এই নেগেটিভ স্ট্র্যাটেজিতে তখন প্রচুর সমালোচনা হলো। কিন্তু পরে এই স্ট্র্যাটেজিই কার্যকর হয়। ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। ** ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার ২৭৪ তাড়া করতে নেমে ভারত তখন ১১৪/৩। ফর্মে থাকা যুবরাজকে না নামিয়ে ৫ নম্বরে নামেন ধোনি নিজেই। যথারীতি তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু ধোনির সেই ইনিংসে ভর করেই বিশ্বকাপ জেতে ভারত। ** ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের ১২৯ রানের সামনে ইংল্যান্ডের তখন প্রয়োজন ১৮ বলে ২৮ রানের। হাতে আছে ৬ উইকেট। এই অবস্থায় ধোনি বল করতে পাঠান ইশান্ত শর্মাকে। যে ইশান্ত আগের ৩ ওভারে ২৮ রান দিয়েছেন। চতুর্থ ওভারে ইশান্ত ২ উইকেট নিয়ে ভারতকে ম্যাচ জেতান। ** ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নামা রোহিত শর্মার ব্যাটিং গড় ছিল ৩০.৪, স্ট্রাইক রেট ৭৮। ধোনিই তাকে ওপেনার হিসাবে নামান। পরের ৬২ ম্যাচে ওপেনার রোহিতের গড় ৫৬, স্ট্রাইক রেট প্রায় ৯০। ওয়ানডেতে দুটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তার। ** ২০১৪ সালে লর্ডস টেস্টে ৩১৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড তখন ১৫৬/৪। নতুন বল নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাউন্টার অ্যাটাক শুরু করে ইংলিশরা। প্রথম ৪ বলে ৩ বাউন্ডারির খাওয়ার পর ধোনি ইশান্তকে বাউন্সার দিতে বলেন। সেই বাউন্সার অস্ত্রেই লর্ডসে ৯৫ রানে টেস্ট জেতে ভারত। ** ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই নাটকীয় ম্যাচের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। শেষ বলে টাইগারদের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ২ রানের। বোলারকে শর্ট বল করতে বলে উইকেটের পিছনে এক হাতের গ্লাভস খুলে ফেলেন ধোনি। যেন তিনি জানতেন শর্ট বলে খেই হারিয়ে ফেলবেন ব্যাটসম্যান; আর তিনি রান আউট করবেন। বাস্তবেও হল তাই। হারা ম্যাচ জিতে নিল ভারত। আনন্দবাজার
×