ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ের দুস্থ নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ের দুস্থ নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১১ জানুয়ারি ॥ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের অভাবগ্রস্ত গ্রাম ভালুকাই। এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বাস করতেন। পুরুষরা অন্যের জমিতে কাজ করলেও নারীরা সারাবছর বাড়িতে বসে সময় কাটাতেন। অভাবী পরিবারের এসব মহিলা পরচুলা তৈরির কারখানায় কাজ পেয়ে বদলে গেছে জীবনচিত্র। স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা ও অসহায় দরিদ্র নারীরা নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বদলে দিয়েছেন ভালুকাই গ্রামের অর্থনীতির চাকা। আর এই পরিবর্তনের মূল উদ্যোক্তা হলেনÑ কনিকা বেগম নামে এক নারী। বিয়ে হওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে ঢাকার টঙ্গী এলাকার একটি হেয়ার ফ্যাশন কারখানায় কাজ নেন। সেখানে কাজ করতে করতে সবকিছু আয়ত্তে নিয়ে আসেন কনিকা। বিয়ের পর স্বামীও সঙ্গে ওই কাজ করতে থাকেন। তিনি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে সদর উপজেলা জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ভালুকাই গ্রামে ফিরে আসেন এবং স্বামীর বাড়ির ওঠানে স্থাপন করেন টাক মাথাওয়ালাদের মাথা ঢাকার বিকল্প চুলের ক্যাপ পরচুলা তৈরির কারখানা। বিভিন্ন বিউটি পার্লার থেকে সংগ্রহ করেন নারীদের মাথার চুল। ওই চুল দিয়ে তৈরি করছেন টুপি বা ক্যাপ। সাড়ে তিন বছর আগে শুরু করা হয় ক্ষুদ্র এই শিল্পটি। তার উৎপাদিত চুলের টুপি রাজধানী ঢাকা ঘুরে ভারতসহ চলে যাচ্ছে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কঠোর পরিশ্রমী ও আত্মপ্রত্যয়ী এই নারী চুলের টুপি তৈরি করে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সেই সঙ্গে ভালুকাই গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা, অসহায় নারীদের। ওই গ্রামের জনিফা বেগম, রোকসানা বেগম, রোমা ও সোহানা চকমিল দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি কনিকার পরচুলা কারখানায় কাজ করে মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় করছেন। তারা নিজেদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবা-মাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন। এ বিষয়ে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোর্শেদ আলী খান বলেন, সদর উপজেলার ভালুকাই গ্রামের কনিকা এখন সফল একজন নারী উদ্যোক্তা। তার মাধ্যমে আরও শতাধিক নারী চরম অভাবের অন্ধকারে বেঁচে থাকার প্রেরণা পেয়েছে।
×