ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

পঞ্চদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

পঞ্চদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘পঞ্চদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।’ রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত এবারের উৎসবের সেøাগান ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ।’ জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে ৩টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। ঢাকা ক্লাবে বুধবার দুপুরে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন উৎসব পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা কবি রবিউল হুসাইন, নাট্যজন ম হামিদ, চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ হায়দার রিজভী, সাংবাদিক সামিয়া জামান প্রমুখ। আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশনের (ফিপ্রেসি) সভাপতি আঁলিন তাসকীয়ান। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির ২৫ বছর পূর্তির এবারের উৎসবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৭ দেশের ১৮৮টি চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ পাবে সিনেমাপ্রেমীরা। জাতীয় জাদুঘর, সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেস, আমেরিকান সেন্টার মিলনায়তন ও স্টার সিনেপ্লেক্সের পাঁচটি ভেন্যুতে চলবে এ উৎসব। স্টার সিনেপ্লেক্স ছাড়া অন্যান্য ভেন্যুতে ৩০ টাকা দর্শনীর বিনিময়ে দেশ-বিদেশের বৈচিত্র্যময় বিষয়ের ওপর নির্মিত এসব সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন দর্শক। তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুদান সহায়তায় উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে আইএফআইসি ব্যাংক। সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, উৎসবের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রদর্শিত হবে লেবাননের নির্মাতা মাই মাসরি নির্মিত চলচ্চিত্র ‘থ্রি হানড্রেড নাইটস’। ছবি দেখার এ বিশাল আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ রেট্র্রোস্পেক্টিভ বিভাগে প্রদর্শিত হবে ইরানী নির্মাতা আব্বাস কিওরোস্তামি এবং তুরস্কের নারী নির্মাতা ইয়াসিম ইয়াস্তাওগলু নির্মিত পাঁচটি করে ছবি। উৎসবে বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, আফগানিস্তান, ইরান, জার্মানি, শ্রীলঙ্কা, কাতার, ফ্রান্স, মঙ্গোলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, গ্রীস, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চীন, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, কিউবা, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ইরাক, আফগানিস্তান, নরওয়ে, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিসর, থাইল্যান্ড, পোল্যান্ডসহ ৬৭ দেশের ১৮৮টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এছাড়া সাত বিভাগে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। বিভাগগুলো হলো- এশিয়ান কমপিটিশন, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশন, চিলড্রেনস ফিল্ম সেকশন, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, উইমেন ফিল্ম মেকার সেকশন, শর্ট এ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম সেকশন ও নরডিক ফিল্ম সেকশন। উৎসবের অংশ হিসেবে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ ও জাতীয় জাদুঘর যৌথভাবে সপ্তম ঢাকা সিনেমা ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে। ৫ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলমান কর্মশালাটি পরিচালনা করবেন ইরানের নির্মাতা অধ্যাপক মজিদ মোভাগাস্কি। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগিতায় চলচ্চিত্রে নারী বিষয়ক তৃতীয় ঢাকা আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে। আগামীকাল শুক্রবার জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী আলিয়ঁস ফ্রঁসেসে এই সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। একই স্থানে ১৫ জানুয়ারি মোনাকোভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল এমারজিং ট্যালেন্ট ফিল্ম এ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের উন্মুক্ত সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এটি পরিচালনা করবেন চলচ্চিত্রকার ও সাংবাদিক সামিয়া জামান। আহমেদ মুজতাবা জামাল বলেন, এ উৎসব বাংলাদেশের মর্যাদাসম্পন্ন ও উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র উৎসব, যা দেশে রুচিসম্পন্ন ও ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ব্যাপক অবদান রাখছে। রেইনবোর এই উৎসব প্রতিশ্রুতিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ধারার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে কাজ করছে। গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত ॥ বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনায় কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ড. বিয়র্ণ লোমবোর্গ রচিত গবেষণা গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ প্রায়োরিটিজ : ব্যয় এবং সুবিধার মাধ্যমে সেরা সমাধানের শ্রেণীবিন্যাস’। লেখক নিজেই বইটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদান করেন গত বছরের ২১ ডিসেম্বর। এ্যাডর্ণ পাবলিকেশন প্রকাশিত ইংরেজী ও বাংলা এ বইটির মোড়ক উন্মোচন হয় জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে আয়োজিত বই উৎসবে বুধবার বিকেলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড. মোস্তাক শরীফ ও প্রফেসর ড. আহসান সাইয়েদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, কথাশিল্পী আতা সরকার, কোপেনহেগের কনসেনসাস সেন্টারের আউটরিচ ম্যানেজার হাসানুজ্জামান ও বইটির বাংলা অনুবাদক তাসনুভা বাশার তন্বী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক জামাল উদ্দিন। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। দারিদ্র্য অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে এবং বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। কিন্তু অনেক চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। এই বইটি সেই নীতিগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করে এবং পর্যায়ক্রমিক বিন্যাস করে, যেগুলো আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যত অর্জনে সবচেয়ে বেশি সহায়ক হতে পারে। এটি এক হাজার এক শ’ পৃষ্ঠার একাডেমিক প্রক্রিয়ার রিভিউকৃত, সতীর্থ কর্তৃক পর্যালোচনাকৃত গবেষণার একটি অনন্য সারসংক্ষেপ। এতে সবচেয়ে কার্যকরী নীতিগুলোর বর্ণনা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছাতে এবং ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করতেই শুধু সাহায্য করবে না, বরং উন্নত জীবনধারণ ও একটি স্বাস্থসম্মত পরিবেশও নিশ্চিত করবে। ‘দর্শক শ্রোতা বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ ॥ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন দর্শক এবং বেতার শ্রোতাদের সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে ‘দর্শক-শ্রোতা বাংলাদেশ’ (এ্যাসোসিয়েশন অব ফিল্ম-টেলিভিশন ভিউয়ার্স এ্যান্ড রেডিও লিসেনার্স অব বাংলাদেশ)’। সেগুন বাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া বুধবার সকালে। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক জিয়াউল হাসান কিসলু। সংগঠনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক শহিদুল আলম সাচ্চু। বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার সাইফুল ইসলাম, সেলিম আহমেদ, রুবেল শংকর, শারমিন মিশু, রাফি হোসেন ও সায়মা সিমি। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আয়োজকরা জানান, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের দর্শক ও বেতার শ্রোতাদের প্রত্যাশা, মতামত ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে সংগঠনটি নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সারাদেশের দর্শক-শ্রোতাদের স্বার্থ সংক্রান্ত একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক তৈরি করবে। এছাড়াও চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও বেতার অনুষ্ঠানের সার্বিক অবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে এই ফোরাম প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং নানাবিধ কর্মসূচী ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। দেশের সব জেলায় দর্শক শ্রোতাদের একটি কার্যকর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য বিগত কয়েক মাস ধরে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে বলে জানান সংগঠনের আহ্বায়ক শহিদুল আলম সাচ্চু। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে দেশের বেশকিছু অঞ্চলে সংগঠনের শাখা কমিটি গঠনের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রতিটি জেলায় শাখা গঠনের কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ও দর্শক-শ্রোতাদের সমন্বয়ে গঠিত ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ ‘দর্শক-শ্রোতা বাংলাদেশ’র যাবতীয় কর্মকা- পরিচালনা করবে। ক্রমান্বয়ে দেশের সব জেলা, উপজেলা, প্রতিষ্ঠানে সংগঠনের শাখা কমিটি গঠন করা হবে। অধ্যাপক জিয়াউল হাসান কিসলু তার বক্তব্যে বলেন, চলচ্চিত্র টেলিভিশন দর্শক এবং বেতার শ্রোতাদের চাহিদা ও মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ধারার প্রতিফলন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আদর্শ ও চেতনা, সামাজিক মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও বেতার অনুষ্ঠান নির্মাণ এবং সম্প্রচারে সহায়ক ভূমিকা পালনই ‘দর্শক-শ্রোতা বাংলাদেশ’র মূল উদ্দেশ্য।
×