ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গাংচিল বাহিনী প্রধান দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আনার বন্দুকযুদ্ধে নিহত

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

গাংচিল বাহিনী প্রধান দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আনার বন্দুকযুদ্ধে নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মিরপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, সাভার ও আশুলিয়া এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন (৪৫) র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। সে পুলিশ ও র‌্যাব হত্যার পলাতক আসামি। আনোয়ার হোসেন আনার (৪৫) গাংচিল বাহিনী নামে পরিচিত এক সন্ত্রাসী দলের প্রধান। মিরপুর, আশুলিয়া, গাবতলী, আমিনবাজার ও সাভার এলাকায় গাংচিল বাহিনীর ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকত এখানকার মানুষ। তার বাড়ি আমিনবাজার এলাকায়। র‌্যাব জানিয়েছে, আনোয়ার দীর্ঘদিন পলাতক থাকলেও সম্প্রতি র‌্যাব জানতে পারে সে এলাকায় ফের সক্রিয় হবার চেষ্টা করছে। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার গভীর রাতে কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মেলারটেক এলাকার স্থানীয় লিয়াকত আলীর বাড়িতে হানা দেয় র‌্যাব। এখানেই পরে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন নিহত হয়। এ বিষয়ে র‌্যাব-৩ এর মেজর মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের জানান, ওই বাড়ির মালিক লিয়াকত আলীর ছেলে টুটুলকেও (২৮) আটক করেছে র‌্যাব। টুটুল ছিল আনোয়ারের সহকারী। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। র‌্যাব আরও জানিয়েছে, ২০০২ সালের ১২ জুলাই সাভার থানার এসআই মতিউর রহমান এবং ২০০৭ সালের ৩ মার্চ র‌্যাব-১১ এর ডিএডি হুমায়ুন কবীর ও সদস্য ফুল মিয়াকে হত্যা করে গাংচিল বাহিনী। এ সব হত্যার ঘটনায় আনোয়ারকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়। ওই সময় এ দুটো হত্যাকা-ের পর আনোয়ারের অতীত অপরাধ জগত সম্পর্কে অনেক তথ্য ফাঁস হয়। ২০০২ সালে বুড়গঙ্গা, তুরাগ ও আমিনবাজারের নদীপথে বালু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। সালাম, মামুন ও সুমন নামে তার তিন সহযোগী নিয়ে ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তার বিরুদ্ধে সাভার থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় একডজন মামলা রয়েছে। কয়েকটি মামলায় সে জামিনও নিয়েছে। দুই র‌্যাব সদস্য খুন হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে গাংচিল বাহিনীর কয়েক সদস্য ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। কিন্তু এ বাহিনীর প্রধান আনোয়ার আত্মগোপনে ছিল। র‌্যাব তাকে ধরার জন্য তৎপর ছিল বরাবরই। এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে লিয়াকত আলীর বাড়িতে তার অবস্থানের খবর পেয়ে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযানে যায়। এ সময় বাড়ি থেকে গুলি ছোড়া হলে আত্মরক্ষার জন্য র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এতে আনোয়ার গুলিবিদ্ধ হয়। আনোয়ারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি পিস্তল ও ১৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ সম্পর্কে বুধবার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান খান শান্ত সাংবাদিকদের জানান, লিয়াকত আলীর তিন তলা বাড়িতে র‌্যাবের অভিযানের সময় পুলিশও উপস্থিত ছিল। প্রয়াত লিয়াকত আলীর স্ত্রী মিনু বেগম জানান, গোলাগুলির সময় তাকে এবং তার ছেলে টুটুল, ছেলের বউ রেহানা ও মেয়ে রুনাকে একটি ঘরে আটকে রাখে র‌্যাব। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা তাদের মারধর করে তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করে এবং টুটুলকে আটক করে নিয়ে যায় । তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেজর মেহেদী জানান, তারা কাউকে মারধর করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। তবে শুনেছেন এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। থানায় মামলা হবার পর হয়ত বিস্তারিত জানা যাবে।
×