ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধিকাংশ গ্রামে বিদ্যুত পৌঁছে গেছে ;###;আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুনাম কুড়িয়েছে সরকার

বদলে গেছে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

বদলে গেছে দেশ

উত্তম চক্রবর্তী ॥ এক দশক আগেও বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলগুলোতে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটাত বড় একটি গোষ্ঠী। অধিকাংশ ঘরবাড়ি ছিল মাটির দেয়াল অথবা পাটকাঠি বা বাঁশের বেড়া আর খড়ের ছাউনির। অধিকাংশ অঞ্চল ছিল বিদ্যুতহীন-অন্ধকারাচ্ছন্ন। বর্তমানে গ্রামের সেই চিত্র আর নেই। মাত্র সাত বছরেই পাল্টে গেছে দেশের সার্বিক দৃশ্যপট। অধিকাংশ বাড়িঘর দাঁড়িয়ে আছে ইট-সিমেন্ট অথবা টিনের ওপর। অধিকাংশ বাড়িতে জ্বলছে বিজলি বাতি। ক্ষুধা, দারিদ্র্য গ্রামাঞ্চল থেকে প্রায় বিতাড়িত হয়েছে বললেও ভুল হবে না। মঙ্গা নামক শব্দটি এখন শুধুই ইতিহাস। বদলে গেছে তলাহীন ঝুড়ির কথিত ভাবমূর্তিও। জঙ্গী-সন্ত্রাসীরাও পড়েছে অস্তিত্বের সঙ্কটে। নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। বর্তমান সরকারের তিন বছর পূর্তি দিবসকে সামনে রেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে অতি সাধারণ মানুষ দেশের সার্বিক চিত্র পাল্টে যাওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন ঠিক এভাবেই। বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে সব সূচকে অগ্রগতি, সাফল্য আর উন্নয়নের ফানুস উড়িয়েই আজ বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতার তিন বছর পূর্ণ করল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের তৃতীয় বর্ষের সরকার পরিচালনার সফলতা-ব্যর্থতার খেরোখাতায় যে লাইনটি সর্বাগ্রে উঠে এসেছে তা হচ্ছে- পর পর দুই বছরের ন্যায় তৃতীয় বছরেও দেশের রাজনীতিসহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই। নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনার সরকার। ভয়াল জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসে সৃষ্ট শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি শক্তহাতে মোকাবেলা করেই দেশকে অগ্রগতির মিছিলে শামিল করার পাশাপাশি সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই ক্ষমতার চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় সরকার। টানা দ্বিতীয় মেয়াদের এই তিনটি বছর বেশি সময় না হলেও পার্থক্য সাফল্য-ব্যর্থতার পরিমাপে সরকারের ঝুলিতে সাফল্যের পরিমাণ যে কয়েকগুণ বেশি, তা চরম সমালোচকও মানতে বাধ্য হচ্ছেন। মাত্র তিন বছরেই বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে স্থাপিত করেছেন শেখ হাসিনার সরকার। আগের যে কোন সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন বছর পূর্তিতে আওয়ামী লীগ সরকারও রয়েছে অনেকটা সুবিধানজনক অবস্থানে। ঠিক তিন বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, বরং ছিল অত্যন্ত ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ সরকারকে বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াত সৃষ্ট দুর্যোগের ঝড়ের মুখেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সেই দুর্যোগ মোকাবেলা করার পর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে আবারও ভয়াল সহিংসতা মোকাবেলা করতে হয়েছে বর্তমান সরকারকে। বিএনপি-জামায়াতের টানা ৯২ দিনব্যাপী ভয়াবহ দানবীয় সন্ত্রাস-সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাসে পুড়েছে গোটা দেশ। দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে ওই রাজনৈতিক সন্ত্রাসে। তিনটি মাস ধরে দেশের মানুষ ছিল অগ্নিসন্ত্রাসের কাছে কার্যত অবরুদ্ধ। জোট সন্ত্রাসীদের পেট্রোলবোমায় পুড়ে জীবন গেছে ৩১৩ নিরীহ মানুষের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ়, সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব দিয়ে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অগ্নিপরীক্ষায় শুধু উত্তীর্ণই হননি, দেশের মানুষকে শান্তি-স্বস্তি প্রদানের পাশাপাশি গত তিন বছরে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে টেনে তুলে প্রগতি ও অগ্রগতির মিছিলে শামিল করতে সক্ষম হয়েছে। গণতন্ত্র ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র-বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ রেখেই বর্তমান সরকার মেয়াদের চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল। অতীত সরকারগুলোর বছর পূর্তিতে ব্যর্থতা ও অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বিরোধী পক্ষ দেশব্যাপী ঝড় তুললেও এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। দ্বিতীয় মেয়াদের বর্তমান সরকারের প্রথম তিন বছরের হিসাব মেলাতে গিয়ে চরম বৈরী বিরোধী পক্ষও বড় ধরনের ব্যর্থতার দালিলিক প্রমাণ হাজির করতে পারেনি দেশবাসীর সামনে। বরং অধিকাংশ মানুষের মূল্যায়নে বেরিয়ে এসেছে, বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই সঠিক পথেই এগুচ্ছে। তিন বছরে ব্যর্থতার চেয়ে সরকারের সাফল্যের পাল্লা অনেকগুণ ভারি। জনগণের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যবধানও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ দেশে সাধ ও সাধ্যে, চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা খুব সহজ নয়। তবে দেশবাসী খোলা মনে প্রথম তিন বছরের ভাল কাজের প্রশংসা এবং মন্দ কাজের সমালোচনা করলেও সরকারের ওপর তাদের আস্থা এতটুকুও কমেনি, বরং বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসম সাহস, দক্ষতা, দূরদৃষ্টি ও অসীম ধৈর্যের সঙ্গে দেশ পরিচালনার প্রতিটি পদক্ষেপকে যেমন দেশের মানুষ এখনও অধিকমাত্রায় সমর্থন করছেন, ঠিক তেমনি তিন বছরে দেশী-বিদেশী সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার সম্পন্ন হওয়া, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীসহ সকল রাজনৈতিক হত্যাকা-ের বিচার ও রায় কার্যকরের দৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপকেও নিরঙ্কুশভাবেই অনুমোদন দিয়েছেন। প্রথম থেকেই সঠিক পথে চলায় বর্তমান সরকারের কাছ থেকে মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে কয়েকগুণ। বাকি তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে দেয়া সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেশকে বিশ্বসভায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ-শান্তিময় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন- এমন আশায় বুক বেধেছেন দেশের মানুষ। সম্প্রতি বিশ্বের কয়েকটি জরিপ রিপোর্টেও বতমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা যে অতীতের চেয়েও বৃদ্ধি পেয়েছে তা উঠে এসেছে। যার বাস্তব প্রমাণ মেলে বছরের শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলেও। দেশের ইতিহাসে প্রথম দলীয় এই নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষকে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে ভরাডুবি ঘটিয়ে বিজয় আনতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। সরকারের তৃতীয় বছরটিও ছিল বেশ ঘটনাবহুল। বছরটিতে অনেক ভাল খবর যেমন ছিল তেমনি মন খারাপ করে দেয়ার মতো খবরও কম ছিল না। নানা কারণেই তাই সরকারের তৃতীয় বর্ষটি দেশের মানুষের কাছে আলোচিত, কিছু সমালোচিতও ছিল। তবে তৃতীয় বছরের মাঝামাঝিতে ভয়াল জঙ্গী হামলায় বিদেশী নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যার পর সারাবিশ্বে তোলপাড়ের সৃষ্টি করলেও সরকারকে খুব একটা বেকায়দায় ফেলতে পারেনি ষড়যন্ত্রকারীরা। জঙ্গী হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার যে অশুভ ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। ওই হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিশ্বের তাবত বড় দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এরপর শক্তহাতে হামলাকারী জঙ্গীসহ তাদের মাস্টারমাইন্ডদের নিধন করে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেও সক্ষম হয় ক্ষমতাসীন সরকার। এর পর বাকি সময়ে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ আর সব সূচকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার মিছিল আর থামেনি, বরং আরও এগিয়ে যাচ্ছে। কেমন গেল এই তিন বছর? অনেক বিচক্ষণ ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী বলেছিল, ২০১৪ সালের নির্বাচন হলে কী হবে, শেখ হাসিনার সরকার এই দফায় এক বছরও টিকবে না। সৌভাগ্য শেখ হাসিনার, সৌভাগ্য দেশের মানুষের। শত বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার সরকার শুধু টিকেই যায়নি, এই তিন বছরে দেশকে অগ্রগতির পথে অনেকদূর নিয়ে গেছেন। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনার বৃহস্পতি গত বছরও ছিল তুঙ্গে। শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, শেখ হাসিনাকে অনেকেই উন্নয়নশীল দেশের ‘উন্নয়নের রোল মডেল নেতা’ হিসেবেও মনে করেন। তার সরকারের অর্জনের কথা এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ শক্তিশালী দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের বক্তৃতাতেও নিয়মিত উঠে আসছে। উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ ॥ বর্তমান সরকারের তৃতীয় বছর পূর্তির সাফল্যে-ব্যর্থতার খেরোখাতায় এসেছে, বছরটি ছিল বাংলাদেশের সাফল্যের বছর। সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে গত মেয়াদের পাঁচ বছর এবং এই মেয়াদের তিন বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশের গড় প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের ওপর, মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৬৬ ডলারে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্য আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। ছয়গুণ রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৫৪ কোটি মার্কিন ডলার। সর্বশেষ জাতিসংঘও বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে ১৯৭৪ সালের ৩০ অক্টোবর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বা তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অভিহিত করেছিলেন। যার মানে হচ্ছে, এখানে যত অর্থই ঢালা হবে, তলা না থাকায় কোন কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে না। সেই দেশের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছরের আগস্টে ঢাকা সফরে এসে বলে গেছেন, বাঙালী জাতির মেধা, পরিশ্রম আর একাগ্রতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে একসঙ্গে কাজ করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তার আগে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে কৌশিক বসু গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বলেন, বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। বর্তমান সরকার তৃতীয় বছরেও দেশের জন্য অনেক অর্জন আনতে সক্ষম হয়। তৃতীয় বর্ষেও প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য এনেছেন অনেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বছরের মতো তৃতীয় বছরেও অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাজা কার্যকরের ঘটনা। এ বছরেই সকল আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ও ধনকুবের বলে পরিচিত মীর কাসেম আলীকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করলেও গত তিন বছরে অনেক বন্ধুর পথও পাড়ি দিতে হয়েছে বর্তমান সরকারকে। ষড়যন্ত্র-চ্যালেঞ্জ পিছু ছাড়েনি এই তিন বছর। সামনে এসেছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ। বিএনপি-জামায়াতের চরম রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবেলা করে দেশ যখন স্থিতিশীল পরিবেশে অর্থনৈতিকসহ নানা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ধারায়, ঠিক তখনই আবার নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে এসেছে জঙ্গীবাদ। তবে এসব চ্যালেঞ্জের বেশিরভাগই স্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট নয়; বরং ষড়যন্ত্রমূলক। সরকারকে বিপাকে ফেলে চলমান বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকা- ও দেশের অগ্রযাত্রা স্তিমিত করে দেয়াই ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য। সর্বশেষ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গী হামলা, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদের জামাতে জঙ্গী হামলা, মসজিদ-মন্দিরে হামলা, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং সবশেষ এক নারী জঙ্গীর আত্মঘাতীর ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে। তবে সব ষড়যন্ত্র আর চ্যালেঞ্জ প্রজ্ঞার সঙ্গে মোকাবেলা করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এত সাফল্যে আর প্রায় তিন বছরই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াত মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারলেও নিজ দলের মধ্যে সৃষ্ট কোন্দল-দ্বন্দ্ব আর সিনিয়র নেতাদের লাগামহীন মন্তব্যে শুধু অস্বস্তিই নয়, প্রায়শই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বিএনপি-জামায়াত জোটের নাশকতা-সহিংসতা ছাড়া গত তিন বছরে সরকারবিরোধী জোরালো কোন আন্দোলন ছিল না, ছিল না রাজপথে রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ। তা সত্ত্বেও সরকার ও তাদের সহযোগী সংগঠনের কিছু মন্ত্রী-নেতার কর্মকা-ে সরকারকে বেকায়দায় পড়তে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে খোদ নিজ দলের ভেতর থেকেই। তাই চতুর্থ বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান চ্যালেঞ্জই হচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিজ দলের চেন অব কমান্ড গড়ে তোলা। অতীতের মতো শক্তহাতেই সকল জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র দমন করে সুখী-সমৃদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
×