ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কার্বন নিঃসরণ কেলেঙ্কারি

ফক্সওয়াগনের কর্পোরেট নির্বাহী যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

ফক্সওয়াগনের কর্পোরেট নির্বাহী যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার

ফক্সওয়াগন কার্বন নিঃসরণ কেলেঙ্কারির প্রধান আসামি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করছেন বলে জানতে পারেন এফবিআই এজেন্টরা। তখনই তারা বুঝলেন যে, জালিয়াতির অভিযোগে একজন বিদেশী কর্পোরেট নির্বাহীকে গ্রেফতারের বিরল সুযোগ এসেছে তাদের সামনে। কার্বন নিঃসরণ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে ফক্সওয়াগনের নির্বাহী অলিভার স্মিটকে শনিবার রাতে মায়ামি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করেছে এফবিআই। তিনি সেখান থেকে জার্মানি ফিরে যাচ্ছিলেন। স্মিটের বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে প্রতারণা ও ‘ক্লিন এয়ার এ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে সোমবার মায়ামির ফেডারেল কোর্টে তোলা হয়। তাকে ডেট্রয়েটে হস্তান্তর করা হবে। সেখানেই তার বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযোগ আনা হয়। ডেট্রয়েট আদালতের নথিতে সুপারিশ করা হয়েছে যে, প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরকারী তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারেন। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত জার্মান গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি ফক্সওয়াগনের মার্কিন রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স অফিসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৪৮ বছর বয়সী স্মিট। ফক্সয়াগনের কার্বন নিঃসরণ কেলেঙ্কারির বিষয়ে অবগত থাকার পরও মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের কাছে মিথ্যাচার করায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে মিশিগান ও নিউইয়র্কে ফৌজদারি অভিযোগ ও মামলা দায়ের করা হয়। তিনি এই জালিয়াতিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। হলফনামায় এফবিআই জানায়, ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ক্লিন ট্রান্সপোর্টের গবেষণায় কার্বন নিঃসরণ কেলেঙ্কারিতে স্মিটের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ গাড়িতে ত্রুটিপূর্ণ সফটওয়্যার প্রতিস্থাপনের বিষয়টি গোপন রাখার ব্যাপারে একজন সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করেন স্মিট। বিশ্বব্যাপী তাদের বিক্রি করা ডিজেলচালিত ওই মোটরযানে এমন যন্ত্রাংশ যুক্ত করা হয়েছে, যা দূষণসংক্রান্ত পরীক্ষাকে ফাঁকি দিতে পারে। এ যন্ত্রাংশের ফলে গাড়ি চালানোর সময় নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি নাইট্রোজেন অক্সাইড নিঃসৃত হতো। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে এ অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছে। তবে ২০১৫ সালের আগস্টে ক্যালিফোর্নিয়ার মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিষয়টি চেপে যান স্মিট। ফক্সওয়াগনের ব্যবস্থাপনা নির্বাহীরা প্রতারণা প্রকাশের বদলে বিষয়টি লাগাতার মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের কাছে গোপন রাখেন। ফৌজদারি অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এই প্রতারণার সঙ্গে আরও কর্মী জড়িত ছিলেন এবং আরও মামলা দায়ের হতে পারে। যে কর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত তারা স্মিটের উর্ধতন নাকি অধস্তন, তা স্পষ্ট নয়। নিঃসরণ প্রতারণার ফৌজদারি তদন্তের জন্য ২০০ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে মার্কিন বিচার দফতরের সঙ্গে একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে ফক্সওয়াগন। কোম্পানিটির এই কেলেঙ্কারির দেওয়ানি নিষ্পত্তি করতে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ১৬০ কোটি ডলার। -নিউইয়র্ক টাইমস
×